কী করে পুলিশের জালে পড়ল বাগুইআটির জোড়া খুনের মূল চক্রী সত্যেন্দ্র?
বাগুইআটির জোড়া খুনের মূল চক্রী সত্যেন্দ্র চৌধুরী পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে এতদিন আত্মগোপন করেছিল। কী করে বিধাননগর পুলিশ ধরে ফেললো এই অভিযুক্তকে?
পুলিশ সূত্রের খবর, একটা ছোট্ট ভুলে পণ্ড হল সত্যেন্দ্রর পালানোর চেষ্টা৷ এই সাংঘাতিক নির্মম খুনের মূল অভিযুক্তকে খোঁজার সময়পুলিশ বুঝতে পারে সত্যেন্দ্র বার বার নিজের সিমকার্ড পাল্টানোয় তাঁর লোকেশন লোকানোর চেষ্টা করছিল। কিন্তু শুক্রবার কিছুটা ‘অসবাধান’ হয়ে পড়ে অতি সাবধানী এই অভিযুক্ত । হআর সেই ভুলই চোখে পরে যায় নিয়ে আসে বিধাননগর পুলিশের।
কী ভুল করেছিল সত্যেন্দ্র?
জানা গেছে, সত্যেন্দ্র শুক্রবার হাওড়া স্টেশন থেকে ট্রেনে চেপে পালানোর চেষ্টা করছিল। রাজ্যের বাইরে গা-ঢাকা দেওয়ার চেষ্টা ছিল তার। এদিন অনলাইনে একটি লেনদেনও করেন সত্যেন্দ্র। বিধাননগর পুলিশ সেই অনলাইন লেনদেনের সূত্র ধরেই সত্যেন্দ্রর খোঁজ পেয়ে যায় ৷
পুলিশ সূত্রে খবর, প্রথম থেকেই সত্যেন্দ্রর ফোন ‘ট্র্যাক’ করার চেষ্টা করছিল পুলিশ। এদিন সম্ভবত টিকিট কাটার তাড়াতেই অনলাইন লেনদেনের সময় সিম বদলাতে ভুলে গেছিলেন সত্যেন্দ্র। এটাই ছিল তার বড় ভুল৷ সত্যেন্দ্রর ফোনের টাওয়ার লোকেশন পেয়ে যায় পুলিশ। জানতে পেরে যায়, সে হাওড়া স্টেশনে রয়েছেন। সাদা পোশাকে স্টেশন চত্বরে পৌঁছে সত্যেন্দ্রকে তাঁরা গ্রেপ্তার করেন ৷
কী করেছিল সত্যেন্দ্র?
২২ অগাস্ট বাগুইআটির হিন্দু বিদ্যাপীঠের দশম শ্রেণির ছাত্র অতনু এবং অভিষেক হঠাৎই নিখোঁজ হয়ে যায় ৷ ২৪ অগাস্ট থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়৷ দুই কিশোরের খোঁজ শুরু করলে পুলিশের হাতে বেশ কিছু তথ্য উঠে আসে। তাঁরা জানতে পারে, দুই কিশোরকে ‘অপহরণ’ করেছে তাদেরই এক পরিচিত। পুলিশ জানতে পারে অপহরণকারী সম্ভবত অতনুদের পাশের বাড়ির ‘জামাই’ সত্যেন্দ্র চৌধুরি৷
এর পর থেকেই সত্যেন্দ্রকে খুঁজতে শুরু করে পুলিশ। তদন্তে জানা যায়, বাইক কেনার জন্য সত্যেন্দ্রকে ৫০ হাজার টাকা দিয়েছিল অতনু৷ বাইক দেখার জন্যই অতনুকে ২২ অগাস্ট ডেকে পাঠায় সত্যেন্দ্র । অতনু এবং অভিষেক বাইক দেখতে যায়। ওই দিন রাতেই খুন করা হয় দুই কিশোরকে। ২৩ অগাস্ট ন্যাজাট থানা এলাকা থেকে অতনু এবং ২৫ অগাস্ট হাড়োয়া থেকে উদ্ধার হয় অভিষেকের দেহ। অভিযুক্ত মূলচক্রী সত্যেন্দ্র চৌধুরী এই ঘটনার ১৮ দিনের মাথায় গ্রেপ্তার হলেন ।