সুইস ব্যাঙ্কে ভারতীয়দের ৩৪ লক্ষ অ্যাকাউন্টের তথ্য কেন্দ্রকে দিল সুইৎজারল্যান্ড
প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার পরই নরেন্দ্র মোদী দেশবাসীকে কথা দিয়েছিলেন কালো টাকা উদ্ধার করে দেশে ফেরাবেন। নোটবন্দির সময়ও তিনি জোর গলায় বলেছিলেন কালো টাকা উদ্ধার করবেন। অথচ সেরকম কোনও ঘটনা দেশবাসীর নজরে আসেনি। অথচ সুইস ব্যাঙ্কে বভারতীয় নাগরিক ও সংস্থার নামে অ্যাকাউন্টের সংখ্যা বেড়েই চলেছে!
এবার সুইস ব্যাঙ্কে অনাবাসী ভারতীয় ও দেশীয় সংস্থার প্রায় ৩৪ লক্ষ অ্যাকাউন্টের তথ্য সবিস্তারে ভারত সরকারের হাতে তুলে দিল সুইৎজারল্যান্ড। এই নিয়ে টানা চতুর্থ বছরে সুইস ব্যাঙ্কে ভারতীয়দের ‘কালো টাকার’ হদিস পেল ভারত।
সোমবার একটি বিবৃতিতে সুইৎজ়ারল্যান্ডের ফেডারাল ট্যাক্স অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফটিএ)-এর আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, ভারতের সঙ্গে সুইৎজ়ারল্যান্ডের স্বয়ংক্রিয় তথ্য বিনিময় চুক্তি (অটোমেটিক এক্সচেঞ্জ অব ইনফরমেশন বা এইওআই)-র অঙ্গ হিসাবে গত সেপ্টেম্বরের এই তথ্যাদি জানানো হয়েছে। আগামী বছরের সেপ্টেম্বরেও এ ধরনের তথ্য বিনিময় হবে। গত বছর ভারত-সহ ৮৬ দেশের সঙ্গে এমন তথ্য বিনিময় করেছে সুইৎজ়ারল্যান্ড।
সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, নাম গোপন রাখার শর্তে এক সুইস আধিকারিক জানিয়েছেন, ওই অ্যাকাউন্টগুলি বেশির ভাগই বহু ভারতীয় ব্যবসায়ী, অনাবাসীদের নামে রয়েছে। তাঁদের অনেকেই আমেরিকা, ব্রিটেন-সহ একাধিক দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশে ছড়িয়ে রয়েছেন। অনেকে আবার লাতিন আমেরিকা এবং আফ্রিকায় বসবাস করছেন।
ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টগুলি যে সমস্ত ব্যক্তি বা সংস্থার, তাঁদের নাম-ঠিকানা ছাড়াও ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন নাম্বার এবং মূলধনী আয়ের পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণও ভারতের হাতে তুলে দিয়েছেন সুইস কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া, ওই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টগুলির মালিক এই মুহূর্তে কোন দেশে বসবাস করছেন অথবা তাঁর সুইস অ্যাকাউন্টে কত অর্থ রয়েছে, তা-ও জানিয়েছে এফটিএ।
জানা গিয়েছে, গত ১৩ বছরের মধ্যে মধ্যে সুইস ব্যাঙ্কে ভারতীয়দের অর্থের পরিমাণ বেড়েছে রেকর্ড হারে। সুইস ব্যাঙ্কে ২০২০ সালে ভারতীয়দের নগদের পরিমাণ বেড়েছে ২০ হাজার ৭০০ টাকারও বেশি। তবে তা সুরক্ষা ও নির্দিষ্ট খাতে অর্থের শ্রীবৃদ্ধি ঘটেছে। ২০১৮ সালের শেষে সুইস ব্যাঙ্কে ভারতীয় ক্লায়েন্টদের মোট তহবিলের বৃদ্ধি হয়েছিল প্রায় ৬ হাজার ৬২৫ কোটি। পরের দু’বছর সেই বৃদ্ধি কমে বেশ কিছুটা। এরপর ২০২০ সালে রেকর্ড বৃদ্ধি।