দেশ বিভাগে ফিরে যান

EVM-এর হিসেবে গরমিল, মোদীর কামব্যাক আদৌ জনাদেশের প্রতিফলন কি?

April 25, 2023 | 2 min read

ইভিএম বিতর্ক, ফাইল চিত্র

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: কোনও মতেই থামার নাম নিচ্ছে না ইভিএম বিতর্ক। কদিন আগেই জানা গিয়েছে, প্রায় সাড়ে ছ’লক্ষ খারাপ ভিভিপ্যাট মেশিনে ২০১৯ সালের লোকসভার ভোট হয়েছিল। সেই আবহেই আরটিআইয়ের জেরে প্রকাশ্যে এল আরও এক চাঞ্চল্যকর পরিসংখ্যান। ইভিএমের হিসেবে গরমিলের অভিযোগ উঠছে। বিগত লোকসভা নির্বাচনের জন্য ইভিএম প্রস্তুতকারক দুই রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ভারত ইলেকট্রনিক্স লিমিটেড ও ইলেকট্রনিক্স কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়া লিমিটেড যত সংখ্যক ইভিএম তৈরি করেছে, তার চেয়ে বেশি সংখ্যক ইভিএমে ভোট গ্রহণ হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী, নির্বাচন কমিশনের বরাত পেয়েই ইভিএম তৈরি করে প্রস্তুতকারক কোম্পানি। উল্লেখ্য, রাজ্যগুলিকে যত সংখ্যক ইভিএম পাঠানো হয়েছে, সে তথ্যেও গরমিল। বিরোধীরা প্রশ্ন তুলছেন, দ্বিতীয়বার মোদীর জয় আদৌ জনাদেশের ভিত্তিতে হয়েছিল তো?

গত চার বছর ধরে অজস্র আরটিআই করেছেন মুম্বইয়ের প্রবাসী বাঙালি মনোরঞ্জন রায়। প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে তদন্ত চেয়ে তিনি এবার দেশের শীর্ষ আদালতে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছেন। তাঁর অভিযোগ, ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে স্বচ্ছতার অভাব রয়েছে। মনোরঞ্জনবাবুর দাবি, দেশে এখন এম-থ্রি মডেলের ইভিএমে ভোট হয়। তিনি প্রশ্ন তুলছেন, আগে ব্যবহৃত এম-ওয়ান এবং এম -টু মেশিনগুলো কোথায়? উল্লেখ্য, নির্বাচন কমিশন কিছুই জানায়নি। পুরনো মেশিনেই কোনও কারচুপি করে নতুন বলে চালানো হয়েছে কি না, বলেও সংশয় প্রকাশ করছেন তিনি। তাই মনোরঞ্জনবাবুর আবেদন, দেশের সর্বোচ্চ আদালত এ বিষয়ে তদন্ত করুক।

প্রসঙ্গত, একটি ইভিএমের তিনটি অংশ। ব্যালট ইউনিটে বোতাম টিপে ভোটাররা ভোট দেন। ভিভিপ্যাট মেশিনে সাত সেকেন্ড দেখা যায় যাঁকে ভোট দেওয়া হল, সেই নাম এবং প্রতীকই দেখাচ্ছে কি না। কন্ট্রোল ইউনিটে ভোট সংরক্ষিত হয়। প্রশ্ন উঠছে, আরটিআই তথ্যে পাওয়া জবাবে নির্বাচন কমিশনের হয়ে ইভিএম ইস্যুতে কী বলছে কেন্দ্রের মুখপাত্র প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরো? বিইএল এবং ইসিআইএল কমিশনের কাছ থেকে কত ইভিএম তৈরির বরাত পেয়েছিল? পৃথকভাবে এক একটি রাজ্যের নির্বাচন কমিশন কী তথ্য দিয়েছে?

আরটিআইয়ের ভিত্তিতে শীর্ষ আদালতে যে পিটিশন জমা পড়েছে সেই অনুযায়ী, ২০১৯ সালের ১০ মার্চ কমিশনের তরফে বিবৃতিতে পিআইবি জানিয়েছিল, ২০১৯ সালের ভোটে মোট ২৩.৩ লক্ষ ব্যালট ইউনিট, ১৬.৩৫ লক্ষ কন্ট্রোল ইউনিট এবং ১৭.৪ লক্ষ ভিভিপ্যাট প্রয়োজন। যদিও আরটিআইয়ের জবাবে ইভিএম প্রস্তুতকারক সংস্থা জানিয়েছে, তারা ১৩ লক্ষ ৯৫ হাজার ৩০৬ বিইউ, ৯ লক্ষ ৩০ হাজার ৭১৬ সিইউ এবং ১৪ লক্ষ ৮৮ হাজার ৮৩০টি ভিভিপ্যাট মেশিন তৈরির বরাত পেয়েছিল। কোন রাজ্যে কত ইভিএম পাঠিয়েছিল নির্বাচন কমিশন, একেকটি রাজ্য নির্বাচন কমিশন থেকে পাওয়া তথ্য মেলালে ভিন্ন পরিসংখ্যান সামনে আসছে। তাতে পাওয়া যাচ্ছে, বিইউ ১৩ লক্ষ ১ হাজার ৩১০, সিইউ ৯ লক্ষ ১১ হাজার ৩০ এবং ভিভিপ্যাট মেশিন ১২ লক্ষ ২৯ হাজার ৪৫১টি। সব অঙ্ক একেবারে গোলমাল হয়ে যাচ্ছে, আর এতেই মোদীর ক্ষমতায় ফেরা নিয়ে সন্দেহের উদ্রেক হচ্ছে নানা মহলে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Modi Government, #EVM, #EVM tampering issue

আরো দেখুন