দিল্লিতে নিজের বাংলো ধরে রাখতেই BJP-কে তোষামোদ প্রাক্তন দলবদলু রেলমন্ত্রীর?
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: শুক্রবার ওড়িশায় বালেশ্বরের ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় তিনশোর কাছাকাছি মৃত্যু, হাজারের অধিক যখম, নিখোঁজের তালিকাও হয়েছে দীর্ঘ। ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা চাপ চাপ রক্ত, মৃতদেহের পচা গন্ধে করমণ্ডল এক্সপ্রেস হয়ে উঠেছিল ভয়ঙ্কর অভিশাপ। যাত্রী নিরাপত্তার কঙ্কালসার চেহারা, অকেজো রেল পরিকাঠামোতে রীতিমতো ক্ষুব্ধ স্বজন হারানো পরিবারের সদস্য থেকে আমজনতা।
রেলমন্ত্রী এই দুর্ঘটনাকে ‘ম্যান মেড’ বিপর্যয় বলে দাবি করেছেন। রেলমন্ত্রীর দাবি এই দুর্ঘটনায় নাকি কোনও যান্ত্রিক ত্রুটি বা রেলের কোনও গাফিলতি ছিল না। এহেন পরিস্থিতিতে বিভিন্ন বিরোধী দল রেলমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি করে। কিন্তু রেলের সবরকম গাফিলতি ধামাচাপা দিতে বদ্ধ পরিকর কিছু গেরুয়াপন্থী নেতা। কোনও তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশের আগেই কেন্দ্রের সুরে সুর মিলিয়ে মন্তব্য করেন প্রাক্তন রেলমন্ত্রী দীনেশ ত্রিবেদীও। এক সর্বভারতীয় বেসরকারি সংবাদ মাধ্যমে তিনি বলেন, ‘করমণ্ডল বিভীষিকা ১০০% অন্তর্ঘাত’। তাঁর এই বিবেচনাহীন মন্তব্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সরব হন বিভিন্ন রাজনৈতিক মহল। তাদের দাবি দীনেশ ত্রিবেদী তোষামোদের রাজনীতি শুরু করেছেন। কিন্তু কেন?
এ ব্যাপারে জয়রাম রমেশ সরাসরি কিছু না বললেও পরোক্ষভাবে ডবল ইঞ্জিন সরকারকে তোষামোদ বলে আখ্যা দেন। নাম না করে দীনেশ ত্রিবেদীর মন্তব্যকে “মোরগ এবং ষাঁড় তত্ত্ব বলে কটাক্ষ করেন তিনি। জাতীয় কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদকের কথায় প্রাক্তন রেলমন্ত্রী দিল্লির বাংলোটি টিকিয়ে রাখতে দিল্লির বিজেপি নেতৃত্বকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছেন ।
জয়রাম রমেশ ট্যুইটে লেখেন, “প্রাক্তন রেলমন্ত্রী, যিনি ৭ মাস ধরে অফিসে ছিলেন এবং পরে বিজেপিতে চলে গিয়েছিলেন, তিনি ওড়িশার ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা সম্পর্কে cock-n-bull তত্ত্ব নিয়ে আসছেন। তিনি মরিয়া হয়ে বিজেপি নেতৃত্বকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছেন যাতে তিনি তাঁর লুটিয়েন্স দিল্লির বাংলো রাখতে পারেন, যা তিনি ১৮ মাস আগে সাংসদ হওয়ার পরেও খালি করেননি। দুঃখজনক!”
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে লোকসভা ভোটে ব্যারাকপুর কেন্দ্র থেকে লড়ে হেরে যান দীনেশ ত্রিবেদী। তারপরও তাঁকে রাজ্যসভার সাংসদ করে পাঠান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই রাজ্যসভাতে ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২০-তে ইস্তফা দিয়েছিলেন তিনি। ফলে প্রায় আড়াই বছর হতে চলল, দীনেশ ত্রিবেদীর সাংসদ পদ নেই, কিন্তু BJP-তে যোগ দেওয়ার পুরস্কার হিসেবে তাঁকে মোদী-শাহেরা একটি এক সদস্যের কমিটিতে চেয়ারম্যান করে রেখেছে ডিজিটালাইজেশন অফ পার্লামেন্টারি লাইব্রেরি কমিটির।