বিবিধ বিভাগে ফিরে যান

জাহের থান কী? জেনে নিন রাঢ় বাংলার প্রতিটি প্রান্তে এই থানের মাহাত্ম্য

July 17, 2023 | 2 min read

সাঁওতাল জনজাতির পূজা-পার্বণ স্থল ‘জাহের থান’ নামে পরিচিত

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: আদিবাসী সাঁওতাল জনজাতির লৌকিক দেবতার মধ্যে অন্যতম জাহের বুড়ি, জাহের হাড়াম, মারাংবুরু, মড়েক, তুরুইক, সীমাসাড়ে প্রভৃতি। এই জনজাতির পূজা-পার্বণ স্থল ‘জাহের থান’ নামে পরিচিত। জাহের থান সাঁওতালদের সবচেয়ে পবিত্র ও গুরুত্বপূর্ণ স্থান। এটি গ্ৰামের এক প্রান্তে অবস্থিত হয়।

সাঁওতালদের গ্রাম নির্মাণের সাথে জাহের থানের নিবিড় সম্পর্ক আছে। সাঁওতালরা বরাবরই থুতি প্রিয়। তাইতো ‘পুঁথি খন থুতি গে সরসা’ অর্থাৎ পুঁথি বা বই এর ভাষা থেকে মুখের ভাষায় অধিক সুন্দর। এই জন্য সাঁওতাল সমাজের ইতিহাস, সংষ্কৃতির একটা বড় অংশ সাঁওতালরা গানে গানে চর্চা করে এসেছেন। এরকমই এক প্রাচীন সাঁওতালি বাহা গানে জাহের থানের উল্লেখ আছে —

অকয়মায় চিয়ৗলেত হো বীর দিশৗম দ
অকয়মায় দহলেত আতোরে পৗঁয়ড়ি
মারাঙবুরুয় চিয়ৗলেত হো বীর দিশৗম দ
জাহের এঁরায় দহলেত আতোরে পৗঁয়ড়ি।

প্রায় প্রতিটি সাঁওতাল পল্লী বা তার কাছাকাছি ফাঁকা মাঠ অথবা পুরোনো শাল-তেঁতুল-বট-পাকুড়-মহুয়া গাছের তলায় অবস্থিত এই “জাহের থান।” প্রকৃতিপূজারী সাঁওতালদের প্রধান উপাসনাস্থল জাহের থান। ঠিক মসজিদ, মন্দির, গীর্জা বা প্যাগোডা’র মতো। জাহের থানের প্রধান আরাধ্য হচ্ছেন জাহের। তবে তাঁর পাশাপাশি জাহের থানে দেখতে পাওয়া যায় মারাঙবুরু ও মড়েকুতুরুইকু। কথিত আছে, মারাঙবুরু হচ্ছেন ঠাকুর আর ঠাকরান (ঈশ্বরের পুং ও স্ত্রী রূপ) এর প্রেরিত দেবদূত। যিনি সাঁওতাল দেব-দেবীদের মধ্যে প্রধান। আর মড়েকুতুরুইকো হচ্ছেন সাঁওতালদের আদি পিতা-মাতা পিলচু হাড়াম-বুডহির পাঁচ ছেলে ও ছয় মেয়ে। যাঁদের মুত্যুর পরে তারাও বঙ্গা অর্থাৎ দেব-দেবী রুপে আবির্ভূত হয়েছিলেন।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#West Bengal, #Jaher Than, #santhal people

আরো দেখুন