BJP-র ষড়যন্ত্র তত্ত্ব প্রতিষ্ঠা করতেই কি আরজি কর কাণ্ড ধামাচাপা দিচ্ছে CBI? প্রশ্ন সাকেতের
নিউজ ডেস্ক,দৃষ্টিভঙ্গি: কোন পথে তদন্ত? কোনও অগ্রগতির কথা জানায়নি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। তবে কি বিজেপির দাবি করা ষড়যন্ত্র তত্ত্ব প্রতিষ্ঠা করতেই কি আরজি কর কাণ্ড ধামাচাপা দিচ্ছে সিবিআই? প্রশ্ন তুললেন রাজ্যসভার সাংসদ সাকেত গোখলে।
ছ’দিন অতিক্রান্ত, এখনও কিছুই করতে উঠতে পারেনি সিবিআই। কিছুদিন আগেই গুজব ছড়ানো হয়েছিল, যে; কলকাতা পুলিশ নির্যাতিতা চিকিৎসকের দেহ সৎকার করেছে। নির্যাতিতার বাবা-মা স্পষ্ট জানায় তাঁরাই, তাঁদের মেয়ের দেহ সৎকার করেছেন। গতকাল থেকে ফের ছড়ানো হয়েছে, নির্যাতিতার দেহ দ্রুততার সঙ্গে সৎকার করা হয়েছে। এই খবর ছড়াচ্ছেন, সিপিএমের রাজ্যসভার সাংসদ তথা পরিষদীয় নেতা বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। এর আগেও এই ঘটনায় একাধিক ভুয়ো খবর ছড়িয়েছেন বিকাশরঞ্জন, তিনিই ১৫০ গ্রাম সিমেন তত্ত্বের হোতা। যার উপর ভিত্তি করে গণধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। ময়নাতদন্তে যা মিথ্যে বলে প্রমাণিত হয়েছে।
কয়েকটি সংবাদমাধ্যম, গতকাল বিকেল থেকে ফের বিকাশরঞ্জনের ইন্টারভিউ দেখা আরম্ভ করে দু-একটি মিডিয়া। তাঁরাই পৌঁছে যায় মেয়েটির সৎকারস্থলে, সেখানকার লোকেদের সঙ্গে কথা বলে। দাবি করা হয়, হাথরাসের মতো মৃতার দেহ দাহ করে দেওয়া হয়েছে। হাথরাসের ঘটনায় পরিবারকে না-জানিয়েই পুলিশ ধর্ষিতার দেহ সৎকার করেছিল। কিন্তু আরজি করের ঘটনায় পরিবার, মৃতা চিকিৎসকদের দেহ সৎকার করেছে।
কী হচ্ছে আদতে, দেখে নেওয়া যাক এক নজরে:
কলকাতা পুলিশ ঘটনায় বারো ঘন্টার মধ্যেই একজন অভিযুক্তকে আটক করেছে।
১৪ আগস্ট তদন্ত ভার নেয় সিবিআই। তারপর থেকেই তারা চুপ। ছ’দিন পেরোলেও, তদন্ত নিয়ে কিছুই জানায়নি তারা। কোনও সন্দেহভাজনকে প্রশ্ন করা হয়নি, গ্রেপ্তার করা হয়নি।
অভিযুক্তের ডিএনএ, মৃতার দেহে পাওয়া ডিএনএ-র সঙ্গে মিলে গিয়েছে।
দুটো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে, সিবিআই অন্য কোনও সন্দেহভাজন খুঁজে পায়নি। নতুবা প্রমাণ দেখে তারা সিদ্ধান্ত পৌঁছেছে যে অভিযুক্তই দোষী।
শেষ পাঁচদিনে অভিযুক্তের পলিগ্রাফের জন্য আবেদন করেনি সিবিআই। বুধবার অভিযুক্তের হেফাজতের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। কেন শেষ দিন অবধি অপেক্ষা করল সিবিআই?
আজ সুপ্রিম কোর্টে সিবিআই মামলা উঠবে। সিবিআই তদন্তে এগোতেই পারেনি। তবে কি আদালতে সিবিআই জানাবে, মৃতার দেহ দ্রুততার সঙ্গে দাহ করায়, দেহ পরীক্ষা করা যায়নি? এবং এই যুক্ততে তদন্তকে হিমঘরে পাঠাবে তারা?
ময়না তদন্ত এবং ফরেনসিক প্রমাণ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে দেওয়ার পরেই, মৃতা চিকিৎসকের বাবা-মা, মেয়ের দেহ দাহ করেন। সিবিআই, এমন বহু অভিযোগের ক্ষেত্রেই এই পথ অবলম্বন করে। সুশান্ত সিং রাজপুত মামলাতেও বহু তত্ত্ব ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছিল। আরজি কর কাণ্ডেও কাল থেকে তাই করা হচ্ছে। মানুষের বিচারের দাবির আন্দোলনের দখল নিয়েছে বিজেপি, বাংলায় নৈরাজ্য সৃষ্টি করা হচ্ছে। রাজ্যপাল দিল্লি গিয়েছেন, রাষ্ট্রপতি ও অমিত শাহের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে। রাজ্যপাল বোস, রওনা হতেই দ্রুত দেহ সৎকারের গল্প ভাসিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
সাকেতের অভিযোগ, সিবিআই এই তদন্ত ধামাচাপা দিতে চাইছে। বিজেপির রাজনৈতিক অভিসন্ধির পালে হাওয়া দিতেই মৃতা চিকিৎসকের সুবিচার মেলা, বিলম্বিত হচ্ছে। তাঁর দাবি, সত্য ও ন্যায় বিচারকে ধামাচাপা পড়তে দেবেন না তাঁরা।