আসামের চা শিল্প পাবে সুবিধা, তাই ৩০ নভেম্বর থেকে চা বাগান বন্ধের নির্দেশ টি বোর্ড অব ইন্ডিয়ার? উঠল অভিযোগ
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: উত্তরবঙ্গে, দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি এবং আলিপুরদুয়ারে বর্তমানে বিজেপির তিন সাংসদ। তারপরেও অভিযোগ উঠছে, চা বাগানের বঞ্চনার। অভিযোগের আঙ্গুল মোদী সরকারের দিকেই। অভিযোগ উঠলো, বিজেপি শাসিত রাজ্যকে পুষ্ট করতে তৃণমূল শাসিত বাংলাকে বঞ্চনার।
সম্প্রতি কেন্দ্র নিয়ন্ত্রিত টি বোর্ড অব ইন্ডিয়া নির্দেশ দিয়েছে অসম ও পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে আবহাওয়াগত বেশ কিছু পার্থক্য থাকলেও , ৩০ নভেম্বর থেকে উত্তর ভারতের সমস্ত চা বাগানেই কাজ বন্ধ করতে হবে। শীতের মরশুমে দেশের সর্বত্র চা বাগানে কাজ বন্ধ থাকে। কিন্তু বিভিন্ন এলাকায় আবহাওয়ার তারতম্যের কথা মাথায় রেখে সেই মতো দিন স্থির হয়। এবার সর্বত্রই একটি দিন নির্দিষ্ট করে দেওয়ায় শুরু হয়েছে বিতর্ক।
পশ্চিমবঙ্গ সরকার মনে করছে, ৩০ নভেম্বর থেকে উত্তর ভারতের সমস্ত চা বাগানেই কাজ বন্ধ হলে অসমের চা বাগান ও ব্যবসায়ীদের বাড়তি সুবিধা পাবে, তাই এই ফরমান। আসলে, ৩০ নভেম্বরের মধ্যে অসমের চা বাগানগুলিতে পাতা তোলা সহ উৎপাদনের কাজ প্রায় শেষ হয়ে এলেও দার্জিলিং সহ উত্তরবঙ্গের চা বাগানগুলিতে আরও কিছুদিন কাজ চলে। ফলে টি বোর্ডের নির্দেশ মেনে ৩০ নভেম্বর থেকে কাজ বন্ধ করে দিলে মালিকপক্ষ, ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি সমস্যায় পড়বেন চা বাগানের হাজার হাজার শ্রমিক। তাই দিন পরিবর্তনের দাবিতে টি বোর্ডকে চিঠি দিয়েছে রাজ্যের শ্রমদপ্তর। শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক বলেছেন, ‘অসমের বাগানগুলির বাড়তি মুনাফার জন্যই বোর্ড এমন অবিবেচকের মতো সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমরা দিন বদল চেয়ে টি বোর্ডকে চিঠি দিয়েছি।’
সূত্রের খবর, টি বোর্ডের চেয়ারম্যানকে পাঠানো ওই চিঠিতে রাজ্য জানিয়েছে, কাজ বন্ধের দিন চূড়ান্ত করার ক্ষেত্রে এ রাজ্যের কোনও ‘স্টেক হোল্ডার’-এর সঙ্গে আলোচনা করা হয়নি। ২০১৮ থেকে পরবর্তী বছরগুলিতে দেখা গিয়েছে, অসমে যখন কাজ বন্ধ হচ্ছে, বাংলায় তা হচ্ছে আরও ৭-১০ দিন পর। যেমন, গত বছর অসমে কাজ বন্ধ হয়েছিল ১৬ ডিসেম্বর, আর পশ্চিমবঙ্গে ২৩ ডিসেম্বর। এবার বৃষ্টি সহ আরও কিছু কারণে আগস্ট পর্যন্ত উত্তরবঙ্গের চা উৎপাদন ভালোরকম ধাক্কা খেয়েছে। আইটিএর (ইন্ডিয়ান টি অ্যাসোসিয়েশন) হিসেব বলছে, বাংলার মোট চা উৎপাদনের ৭ শতাংশই উঠে আসে ডিসেম্বরে। ফলে টি বোর্ডের নির্দেশ মানতে গেল এই বিপুল উৎপাদন মার খাবে। তাই এবারও বাংলার চা বাগানে কাজ বন্ধের তারিখ ২৩ ডিসেম্বর করার দাবি জানানো হয়েছে চিঠিতে।