মনমোহন সিং নিয়ে নীরব ক্রীড়া ও চলচ্চিত্র জগতের খ্যাতনামারা! সরব অভিষেক
বৃহস্পতিবার রাতে দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। ভারতের অর্থনৈতিক সংস্কারে তাঁর অবদানের নানা দিক তুলে ধরেছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। শনিবার মনমোহনের শেষকৃত্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের উপস্থিত থাকতেও দেখা গিয়েছে। কিন্তু বৃহস্পতিবার রাত থেকে শনিবার পর্যন্ত আশ্চর্যজনকভাবে ‘নীরব’ থাকতে দেখা গিয়েছে ক্রীড়া ও চলচ্চিত্র জগতের খ্যাতনামাদের।
এই ‘নীরবতা’ নিয়ে রবিবার সামাজিক মাধ্যমে বক্তব্য রেখে ক্রীড়া ও চলচ্চিত্র জগতের খ্যাতনামাদের বিরুদ্ধে সরব হন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন, ভারত তার এমন একজন শ্রেষ্ঠ রাষ্ট্রনায়ককে হারিয়েছে, যাঁর অগাধ জ্ঞান এবং দুরদর্শী নেতৃত্ব দেশের অর্থনীতিকে নতুন আকার দিয়েছে। ১৯৯১ সালে অর্থনৈতিক সংস্কারের স্থপতি হিসেবে মনমোহনের অবদানগুলি ভারতকে বিশ্বব্যাপী স্বীকৃতির পথে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছে।
আর তাঁরই প্রতি ক্রীড়া ও ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সম্পূর্ণ নীরবতা অবলম্বন দেখে অভিষেক মর্মাহত ও হতাশ! তিনি লিখেছেন, যে-সমস্ত আইকন বা তারকাকে আমরা নিজেদের রোল মডেল বলে মনে করি, তাঁদের দায়িত্ববোধ এবং সততা সম্পর্কে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে এই বিস্ময়কর নীরবতা। মনে হচ্ছে, কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি ভয় থেকেই তাঁদের এই অদ্ভুত আচরণ। আর জাতীয় ক্ষেত্রের কোনও বিষয়ে আইনকনদের নীরব থাকাটা এখন রেওয়াজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সিএএ, এনআরসি ও কৃষি আইন ইস্যুতেও তাঁরা চুপ ছিলেন। মণিপুরের বিষয়েও মুখ খোলেননি তাঁরা।
ক্রীড়া কিংবা চলচ্চিত্র জগতের বিশিষ্টদের খ্যাতি-সুনাম সাধারণ মানুষের ভালোবাসার উপরেই নির্ভর করে। এই বাস্তব সত্যটি সামনে এনে অভিষেক বলেন, আইকনদের জনপ্রিয়তা, প্রশংসা, সুনাম, খ্যাতি, সম্পদ বৃদ্ধি, সবকিছুই মানুষের ভালোবাসার জন্য। কিন্তু জাতীয় স্তরের কোনও বিষয় এলেই তাঁরা বিস্ময়করভাবে চুপ থাকছেন। তাঁদের দায়িত্ববোধ থাকা উচিত।
ফলে ‘আইকন’ বা ‘রোল মডেল’ চিহ্নিত করার আগে সাধারণ মানুষের কাছে একটি মর্মস্পর্শী আবেদন রেখেছেন ডায়মন্ডহারবারের তৃণমূল সাংসদ। তিনি বলেছেন, আমরা একটি নতুন বছরে প্রবেশ করতে চলেছি। এই অবস্থায়
রোল মডেল হিসেবে কাকে রাখব, তা পুনর্বিবেচনা
করার সময় এসেছে। যাঁরা দেশ, জাতি ও সমাজের ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রেখেছেন এবং আত্মত্যাগ করেছেন, তাঁদের সম্মান জানাই। মুক্তিযোদ্ধা, সৈনিক যাঁরা বৃহত্তর অংশের ভালোর জন্য আত্মত্যাগ করেছেন, তাঁদের সম্মান প্রদর্শন করা আমাদের কর্তব্য।