দিনভর পূজা-অর্চনা, চণ্ডীপাঠে কল্পতরু উৎসব, কীভাবে শুরু হয়েছিল জানেন?
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: আজ কল্পতরু উৎসব, দিকে দিকে ঢল নেমেছেন ভক্তদের। ফি বছর ১ জানুয়ারির মতো এবারেও উৎসব উপলক্ষে ভোর থেকে দক্ষিণেশ্বর মন্দিরে দর্শনার্থীর ঢল। শ্রীরামকৃষ্ণের বিশেষ লীলামাহাত্ম্যের কারণে দিনটি ভক্তরা পালন করেন। কী করেছিলেন শ্রীরামকৃষ্ণ?
১৮৮৫ সালের প্রারম্ভে তিনি ক্লার্জিম্যান’স থ্রোট রোগে আক্রান্ত হন। ক্রমে এই রোগ গলার ক্যানসারের আকার ধারণ করে। কলকাতার শ্যামপুকুর অঞ্চলে তাঁকে নিয়ে আসা হয়। বিশিষ্ট চিকিৎসক মহেন্দ্রলাল সরকার তাঁর চিকিৎসায় নিযুক্ত হন। অবস্থা সংকটজনক হলে ১৮৮৫ সালের ১১ ডিসেম্বর তারিখে তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয় কাশীপুরের(Kashipur) এক বিরাট বাগানবাড়িতে।
এখানেই লোকশিক্ষক পরমপুরুষ শ্রীরামকৃষ্ণ নিজেকে কল্পতরু হিসেবে ঘোষণা করেন এই দিন। কাশীপুর বাগানবাড়িতে ঘুরতে ঘুরতে ১ জানুয়ারি সকালবেলা গিরিশচন্দ্র ঘোষকে নিজের অবতারত্ব জিজ্ঞেস করেন ঠাকুর।
গিরিশ ঘোষ(Girish Ghosh) প্রত্যুত্তরে বলেন, ‘‘ব্যাস-বাল্মিকী যাঁর ইয়ত্তা করতে পারেনি, এই অধম গিরিশ তাঁর কি বলবে।’’
ঠাকুর প্রায় সমাধিস্থ অবস্থায় বলেন— ‘‘তোমাদের কি আর বলবো, আশীর্বাদ করি তোমাদের চৈতন্য হউক।’’ এই সময়ে ঠাকুর উপস্থিত গৃহী ভক্তদের বুক পিঠে হাত বুলিয়ে দেন। সেই স্পর্শে অলৌকিকের ছোঁয়া অনুভব করেছিলেন উপস্থিত গৃহী ভক্ত ও অন্যান্য ঠাকুর-ঘনিষ্ঠরা।
ঠাকুরের এই উক্তিকে পরম মহিমা বলে মনে করেন ভক্তরা। স্বীয় হৃদয়ে মানুষের দুঃখ যন্ত্রণা অনুভব করেই যেন ঠাকুরের এই আশীর্বাদ— চিন্ময় চৈতন্য সত্তার জাগরণের আশিস।
এই দিনটি তাই চিহ্নিত হয়ে রয়েছে জাগতিক চাওয়া-পাওয়ার ঊর্ধ্বে। এই দিনটিকে ‘কল্পতরু দিবস’ হিসেবে সবাই জানেন। কিন্তু এই প্রাপ্তি কোনও জাগতিকতায় আবদ্ধ নয়। এই প্রাপ্তি পারমার্থিক।