খেলা বিভাগে ফিরে যান

আজ শীতের সন্ধ্যায় ব্রহ্মপুত্রের পাড়ে ডার্বির উত্তাপ, উত্তেজনার পারদ বাড়তে শুরু করেছে, বাড়িতে বসে কীভাবে দেখবেন ফুটবলের এই মহারণ?

January 11, 2025 | 2 min read

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: হাতে গোনা আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা। আজ শনিবার গুয়াহাটির ইন্দিরা গান্ধী অ্যাথলেটিক স্টেডিয়ামে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ফুটবলের মহারণ। মুখোমুখি মোহনবাগান এবং ইস্টবেঙ্গল। ইতিমধ্যেই ম্যাচ নিয়ে উত্তেজনার পারদ বাড়তে শুরু করেছে।

২০০৯- এর ৩১ ডিসেম্বর। এই গুয়াহাটিতে (ইন্দিরা গান্ধী অ্যাথলেটিক স্টেডিয়ামে কিন্তু ম্যাচটা হয়নি। হয়েছিল, গুয়াহাটির অন্য মাঠে। কিন্তু গুয়াহাটিতে তো বটেই!) মুখোমুখি হয়েছিল ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান। একদিকে লাল-হলুদ জার্সিতে বাইচুং-ইয়াকুবু। আরেকদিকে মোহনবাগান জার্সিতে ব্যারেটো-চিডি। এবারের মতো ১৫ বছর আগেও ডার্বির দিনটায় ফেভারিট ছিল মোহনবাগান। কিন্তু মাঠে ফলাফলটাই বদলে দেন বাইচুংরা। ব্যারেটোর পেনাল্টি নষ্ট। ইয়াকুবুর গোলে ইস্টবেঙ্গলের এদিয়ে যাওয়া। শেষ মুহূর্তে বাইচুংয়ের থ্রু ধরে গোল মেহতাব হোসেনের। ২ গোলের ধাক্কা সামলাতে পারেনি মোহনবাগান।

১৫ বছর পর ফের গুয়াহাটিতে মুখোমুখি ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান। লাল হলুদ, সবুজ-মেরুনের দুই তারকাও এখন অতীত। আজ আইএসএলের দশম কলকাতা ডার্বি হতে চলেছে। আগের ন’টি ম্যাচে ইস্টবেঙ্গল এক বারও জিততে পারেনি। শনিবারও তারা জিতবে, এমন আশা অতি বড় সমর্থকও করছেন না। তবে ডার্বি যে হেতু পঞ্চাশ-পঞ্চাশ, তাই ক্ষীণ হলেও একটা আশা রয়েছে লাল-হলুদ সমর্থকদের মনে।

ডার্বি মানে মোহনবাগান এগিয়ে, এ কথা গত পাঁচ বছরে অনেক বার লেখা হয়েছে। এত দিন পরেও সেটা বদলায়নি। কার্লেস কুয়াদ্রাতের আমলে আইএসএলে না হোক, তবু দু’বার মোহনবাগানকে হারিয়েছে ইস্টবেঙ্গল। তা ছাড়া ডার্বি মানে শুধু মোহনবাগানই। অস্কার ব্রুজ়োর কোচিংয়ে ইস্টবেঙ্গল তা বদলাতে পারে কি না সেটাই দেখার।
তবে বদলানোর জন্য হাতে অস্ত্র চাই। ব্রুজ়োইর হাতে অস্ত্র কই? ডার্বির ঠিক আগের ম্যাচেই চোট পেলেন দলের সেরা অস্ত্র আনোয়ার আলি। কে আটকাবেন জেমি ম্যাকলারেন, গ্রেগ স্টুয়ার্টদের? হয়তো জানেন না অস্কার। কুয়াদ্রাতের মতো তিনি খেলোয়াড় না থাকা নিয়ে অনুযোগ করেন না ঠিকই, কিন্তু ভিতরে ভিতরে তাঁর মাথাতেও নিশ্চয়ই চোরা টেনশন চলতে থাকে।

শনিবার অনিরুদ্ধ থাপা ছাড়া প্রায় পুরো দলই পাচ্ছে মোহনবাগান। অনিরুদ্ধের জায়গায় খেলানোর মতো ফুটবলারও রয়েছে একাধিক। বাকিরাও বাড়তি দায়িত্ব নিতে পিছপা হবেন না। সেখানে ইস্টবেঙ্গলে আনোয়ার না থাকা মানে রক্ষণ অর্ধেক হয়ে যাওয়া। আগের ম্যাচে যে ভাবে গোল খাইয়েছেন, তাতে হিজাজি মাহেরের উপর বেশি ভরসা না থাকাই ভাল। হেক্টর ইয়ুস্তে এক বছর আগে মোহনবাগানে যা খেলেছেন তা ইস্টবেঙ্গলে খেলতে পারছেন না। লাল-হলুদ রক্ষণ কোন দিন বাঁচাবে আর কোন দিন ডুবিয়ে দেবে কেউ জানে না।

কেরলের হয়ে ফুল ফোটালেও ইস্টবেঙ্গলে দিমিত্রিয়স দিয়ামানতাকোসের পা থেকে গোল আসছে না। বয়সের প্রভাব ক্লেটন সিলভার খেলায় পড়লেও তিনি মাঠে নামলে আপ্রাণ চেষ্টা করছেন কোনও না কোনও অবদান রাখার। পিভি বিষ্ণু এবং নাওরেম মহেশ প্রতিভাবান। কিন্তু ডার্বির চাপ নিতে পারার মতো তৈরি এখনও তাঁরা হতে পারেননি।
সেখানে মোহনবাগানে ঠিক ডার্বির আগেই ফিট হয়ে গিয়েছেন স্টুয়ার্ট। তৈরি আছেন ম্যাকলারেন, জেসন কামিংস। দ্বিতীয় জন হয়তো প্রথম একাদশে থাকবেনও না। ভারতীয় ফুটবলে বিদেশি বিশ্বকাপার এসে রিজ়ার্ভ বেঞ্চে থাকছে এ জিনিস কে কবে দেখেছে? মোহনবাগান দলের গভীরতা ঠিক এতটাই। তাই একজন চোট পেলেও কোচ হোসে মোলিনার বিশেষ ভাবনা থাকে না। তিনি অনায়াসে বিকল্প একাধিক ফুটবলারকে খেলিয়ে দিতে পারেন। ডার্বিতেও তাঁর ব্যতিক্রম হওয়ার কথা নয়।

তবে সিংহভাগ বাঙালি ফুটবল সমর্থকেরই মন খারাপ। ডার্বি ম্যাচ হবে, অথচ মাঠে যেতে পারবেন না, এমনটা আবার হয় নাকি! কিন্তু, প্রশাসনের নিরাপত্তার উপর তো আর কিছু বলার থাকে না। অতএব দুধের স্বাদ মেটাতে হবে ঘোলেই। ঘরে বসে টেলিভিশনের পর্দাতেই রাখতে হবে চোখ। অফিশিয়াল ব্রডকাস্টার হল স্পোর্টস ১৮। সুতরাং স্পোর্টস ১৮-র প্রত্যেকটা চ্যানেলেই আপনি মোহনবাগান বনাম ইস্টবেঙ্গল ম্যাচের মজা উপভোগ করতে পারবেন। এর পাশাপাশি জিও সিনেমা অ্যাপ এবং ওয়েবসাইটে কলকাতা ডার্বি ম্য়াচের লাইভ স্ট্রিমিংও আপনি দেখতে পারেন। যাঁদের কাছে জিও সিম কার্ড রয়েছে, তাঁরা ফ্রি’তেই জিও সিনেমা অ্যাপ উপভোগ করতে পারেন। এরজন্য আপনাকে আলাদা করে কোনও টাকা দিতে হবে না।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#East Bengal Mohun Bagan, #Derby

আরো দেখুন