নতুন প্রজন্মের বাঙালি পিঠে তৈরির উৎসাহ হারিয়ে ফেলছে, পৌষপার্বণে আস্থা রেডিমেড পিঠেপুলিতে

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ। এই পার্বণের মধ্যে অন্যতম পিঠে পার্বণ। মকর সংক্রান্তির দিন পিঠে খাওয়ার বহু যুগ ধরে চলে আসছে। এই উৎসবে প্রতিটি ঘরে তৈরি হয় পাটিসাপটা, পুলি পিঠে, গোকুল পিঠে, মালপোয়ার মতো একাধিক সুস্বাদু পদ। ভোজনরসিক হিসাবে বাঙালির খ্যাতি ত্রিভুবনে। আর মিষ্টির প্রতি বাঙালির দুর্বলতা চিরকালের। আবার সেই মিষ্টান্ন যদি নলেন গুড় দিয়ে তৈরি পুলি পিঠে হয়, তাহলে তো ষোলকলা পূর্ণ।
তবে আজকের প্রযুক্তির দৌলতে পিঠে বানানোর সময় অনেকেরই থাকে না। খাওয়ার ইচ্ছা থাকলেও সময়ের অভাবে তা বানানো সম্ভব হয়ে ওঠে না। আর সেই শূন্য স্থান পূরণ করছে মিষ্টির দোকানের তৈরি হচ্ছে পুলি ও পিঠে। আজকাল প্রায় সকল মিষ্টির দোকানেই সুস্বাদু পিঠে ও পাটিসাপটা পাওয়া যায়। হাতের কাছে পাওয়া যায় বলেই পিঠে তৈরির উৎসাহ ও বাঙালি ক্রমশ হারিয়ে ফেলছে।
আগামী কাল, মঙ্গলবার বাঙালির সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উৎসব পৌষপার্বণ। ঘরে ঘরে পালিত হতে চলেছে এই উৎসব। ওই দিন রকমারি পাটিসাপ্টা, সরু চাকলি, ভাপা পিঠে, পুলি, পায়েসে রসনাতৃপ্তি চলে ঘরে ঘরে। যার মাধ্যমে স্বাগত জানানো হবে মাঘ মাসকে। আর এই বিশেষ দিন উপলক্ষ্যে মিষ্টির দোকানগুলিতে তৈরি হচ্ছে রকমারি পিঠে। রায়গঞ্জ শহরের কয়েকটি দোকানে ইতিমধ্যে ব্যাপকভাবে বিক্রি শুরু হয়ে গিয়েছে, নলেন গুড়ের রসে পাকানো ক্ষীরের পুর দেওয়া পাটিসাপ্টা। কোথাও আবার নারকেল ও ক্ষীরের পুর দেওয়া পাটিসাপ্টা, ছানার পুলি, দুধপুলি, তেলেভাজা পিঠে। রায়গঞ্জ শহরের কলেজপাড়ার মিষ্টির দোকানও তার ব্যতিক্রম নয়।
দোকানের ম্যানেজার সাধন দাস বলেন, পৌষপার্বণ উপলক্ষ্যে গত কয়েকদিন ধরেই আমরা রকমারি পিঠে বানিয়ে দোকানের রেকাবে সাজিয়েছি। লাগাতার বিক্রিও হচ্ছে। পৌষপার্বণের দিন আরও কয়েকপ্রকার পিঠে বানানো হবে। ক্ষীরের পুর দেওয়া পাটিসাপ্টা প্রতি পিস বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকায়। প্রতিদিন অন্তত ২০০ পিস ওই পিঠে বিক্রি হচ্ছে। শহরের আরেক প্রান্ত এফসিআই মোড়ের একটি মিষ্টির দোকান সাড়া ফেলে দিয়েছে ছানার দুধপুলি তৈরি করে। সঙ্গে দেদার বিকোচ্ছে নারকেল ও ক্ষীরে ঠাসা পাটিসাপ্টা। দোকানটির মালিক উত্তম সাহা বলেন, মরশুমের এই সময়টা এখন ক্রেতাদের মধ্যে পিঠেপুলির চাহিদা থাকে। আমরা সেই মতো কারিগরদের দিয়েই রকমারি পিঠে তৈরি করাচ্ছি।