মকর সংক্রান্তির পুণ্য তিথিতে বৈষ্ণবতীর্থ জয়দেব কেন্দুলিতে ভক্তদের ঢল

নিউজ ডেস্ক,দৃষ্টিভঙ্গি: মকর সংক্রান্তির পুণ্য তিথিতে জয়দেব কেন্দুলিতে ঢল নামল ভক্তদের। সোমবার সন্ধ্যা থেকেই মেলায় ভিড় শুরু হয়েছিল। সরকারিভাবে সোমবার বিকেলে মেলার উদ্বোধন হয়েছে। মঙ্গলবার ভোর থেকে অজয়ে পুণ্যস্নান সেরে রাধাবিনোদ মন্দিরে পুজো দেন পুণ্যার্থীরা। ওয়াচ টাওয়ার, ড্রোন, সিসি ক্যামেরায় নজরদারি, পুলিশি টহলে নিরাপত্তার চাদরে মোড়া ছিল মেলা প্রাঙ্গণ। বীরভূম ও পূর্ব বর্ধমান সংযোগকারী অজয়ের কজওয়ে ঘুরে দেখেন ডিআইজি(বর্ধমান রেঞ্জ) শ্যাম সিং ও জেলার নতুন পুলিশ সুপার আমনদীপ সিং। মেলাও পরিদর্শন করেন তাঁরা।
মকর সংক্রান্তির দিনেই জয়দেব কেন্দুলি মেলায় সবচেয়ে ভিড় বেশি হয়। প্রাচীন এই মেলার ঐতিহাসিক গুরুত্ব রয়েছে। জানা যায়, গীতগোবিন্দের রচয়িতা জয়দেব ছিলেন মহারাজ লক্ষ্মণ সেনের সভাকবি। গীতগোবিন্দের রচনাকালে ‘স্মর-গরল-খণ্ডনং, মম শিরসি মণ্ডনম’ লেখার পর আর মনঃসংযোগ করতে পারছিলেন না জয়দেব। তিনি পদ্মাবতীকে বলে স্নানে যান। পদ্মাবতী দেখেন, স্নান থেকে ফিরে জয়দেব পদাবলি সম্পূর্ণ করে লিখলেন ‘দেহি পদ্পল্লব মুদারম।’ জয়দেব ফিরে সেই পদ সম্পূর্ণ হয়েছে দেখে, বিস্মিত হন। বুঝতে বাকি থাকে না, স্বয়ং প্রভু এসে পদ সম্পূর্ণ করে গিয়েছেন।
জনশ্রুতি রয়েছে, কবি জয়দেব অসুস্থ হয়ে পড়ায় একবার মকর সংক্রান্তির পুণ্যস্নান করা উপায় নেই। তা জানতে পেরে অজয় নদের উজানে আসেন স্বয়ং মা গঙ্গা। সেই জলে স্নান করে তিনি পুণ্য অর্জন করেছিলেন। তাই জয়দেবে মকর সংক্রান্তির স্নান অত্যন্ত জনপ্রিয়। প্রতি বছর এই মেলায় হাজার হাজার মানুষ আসেন। এবছরই প্রথম কঙ্কালীতলা মন্দিরের পুরোহিতরা অজয়ের ঘাটে সন্ধ্যারতি করলেন। বাউল-ফকিররা এসেছিলেন। পুজো দেওয়ার পাশাপাশি মেলায় নানা সামগ্রী কিনতেও ভিড় জমান আগত দর্শনার্থীরা।