মালদহে গাড়ি দাঁড় করিয়ে আম জনতার খোঁজ নিলেন মুখ্যমন্ত্রী, মুর্শিদাবাদে নবাবের উত্তরসূরিকে দিলেন যথাযথ সম্মান

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: সোমবার বিকেলে মালদহে পৌঁছলেন মুখ্যমন্ত্রী। ডিএসএ সংলগ্ন মাঠে স্থানীয় বাসিন্দাদের ভিড় উপচে পড়ল। শীতের দুপুরে ইংলিশবাজার শহর ভিড়ে গমগম করছিল। হেলিকপ্টার থেকে নেমেই মুখ্যমন্ত্রী এগিয়ে এলেন সাংবাদিকদের দিকে। তাঁর কনভয় ছুটল প্রয়াত তৃণমূল কংগ্রেস নেতা বাবলা সরকারের বাড়িতে। পথে বার বার গাড়ি থামিয়ে কখনও স্কুল পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বললেন, জনগণের মুখ থেকে শুনে নিলেন তাঁরা প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন কি না। মুখ্যমন্ত্রীর আসার খবর শুনতেই উৎসাহ দেখা গিয়েছে মালদহবাসীর মধ্যে।
মুখ্যমন্ত্রীর কপ্টার নামবে বলে নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয় ডিএসএ সংলগ্ন মাঠ। জননেত্রীকে একবার কাছ থেকে দেখতে নির্দিষ্ট দূরত্বে ভিড় জমায় জনতা।
হেলিকপ্টার থেকে নেমেই জনগণের উদ্দেশ্যে হাত নাড়িয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। কুশল বিনিময় করেন প্রশাসনিক আধিকারিক ও জেলার শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে। মুখ্যমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে হাজির ছিলেন বিভিন্ন সম্প্রদায়ের লোকশিল্পীরা। তাঁদের দিকে এগিয়ে যান মমতা, জানতে চান, লোকশিল্পীরা সরকারি ভাতা পাচ্ছেন কি না।
সেতু মোড়ে কনভয় লক্ষ্য করে হাত নাড়েন অসংখ্য মানুষ। কনভয় থামিয়ে গাড়ি থেকে নেমে এগিয়ে যান মমতা। মানুষের সঙ্গে কথা বলেন, খোঁজখবর নেন, কথা বলেন উন্নয়ন নিয়ে। মহানন্দা ব্রিজে উঠতেই দেখা যায় কয়েকজন স্কুল ছাত্রী বাড়ি ফিরছে। সেখানেও গাড়ি থামিয়ে ছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায় মুখ্যমন্ত্রীকে। জানতে চান ছাত্রীরা কন্যাশ্রী পাচ্ছে কিনা।
প্রয়াত তৃণমূল নেতা বাবলার বাড়ির, প্রয়াত নেতার স্ত্রীর সঙ্গে ৪০ মিনিটের বেশি কথাবার্তা বলার পর তিনি সোজা চলে যান মহানন্দা ভবনে। সরকারি সফরে এসে এখানেই রাত্রিবাস করেন মুখ্যমন্ত্রী। আজ, মঙ্গলবার বেলা এগারোটায় শুরু হবে মুখ্যমন্ত্রীর সরকারি পরিষেবা প্রদানের অনুষ্ঠান। সেই মঞ্চ থেকে বেশকিছু উপভোক্তার হাতে তুলে দেবেন পরিষেবার শংসাপত্র। দুপুরে এখান থেকেই আলিপুরদুয়ার রওনা হবেন মুখ্যমন্ত্রী।
অন্যদিকে, মুর্শিদাবাদে এ দিন নবাব বংশের উত্তরসূরিকে যথাযোগ্য সম্মান দেন মমতা।
ইতিহাসের স্মৃতি আজও বয়ে বেড়াচ্ছেন নবাব পরিবারের সদস্যরা। উপাধিতেও তাঁরা ‘নবাব’। তাঁদের একজন সৈয়দ রেজা আলি মির্জা। মুর্শিদাবাদে ছোটে নবাব নামেই তিনি পরিচিত। মুখ্যমন্ত্রী প্রশাসনিক সভায় সেই সৈয়দ রেজাকে বাড়তি গুরুত্ব ও সম্মান জানিয়ে স্মরণ করালেন বাংলার নবাবি শাসনের দীর্ঘ ইতিহাসকে। মমতার স্পর্শে আবেগঘন হয়ে পড়লেন ছোটে নবাবও। সরকারি প্রকল্প পরিষেবা প্রদানের অনুষ্ঠান ছিল লালবাগে। সেই অনুষ্ঠানে সাংসদ, বিধায়ক, প্রশাসনিক কর্তা সহ সাধারণ মানুষের ভিড় ছিল চোখের পড়ার মতো। তার মধ্যেও সবার নজর ছিল ছোটে নবাবের দিকে। অনুষ্ঠানের শুরুতেই এক উপভোক্তার হাতে জমির পাট্টা তুলে দেওয়ার কথা ছিল মুখ্যমন্ত্রীর। সেই পাট্টা মুখ্যমন্ত্রী ছোটে নবাবের হাতে তুলে দিয়ে সেই কাজের সূচনা করেন। এভাবে নবাব বংশের সদস্যকে সম্মান জানাতে দেখে করতালির সুনামি ওঠে সভাস্থলে।
মুখ্যমন্ত্রীর কাছে স্কুলের উন্নতিতে লিখিত কিছু আবদার করেছেন নবাব রেজা। তিনি জানান, মুখ্যমন্ত্রীর কাছ থেকে সম্মান পেয়ে তিনি আপ্লুত। সভা মঞ্চেই চিঠি খুলে পড়তে শুরু করেন মুখ্যমন্ত্রী। যা দেখে বেজায় খুশি হয়েছেন তিনি। রেজা আলি বলেন, তাঁরা খুব খুশি।