আলপিন টু এলিফ্যান্ট! বিষ্ণুপুরের ‘ভাঙাচোরা মেলা’ হরেক জিনিসপত্রের আশ্চর্য এক মিলনক্ষেত্র

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিষ্ণুপুরে চলছে ‘ভাঙাচোরা মেলা’। সেখানে গেলেই হরেক মাল কেনার সুবর্ণ সুযোগ। এ মেলা জিনিসপত্রের আশ্চর্য এক মিলনক্ষেত্র-এখানে রুশ বিপ্লবের ইতিহাস মেলে ১০ টাকায়। সুকান্ত সমগ্র আর লক্ষ্মীর পাঁচালির একদর, দাম ৫ টাকা। গ্রহ-নক্ষত্র দেখবেন? কাছ থেকে দেখবেন? টেলিস্কোপও আছে। পাওয়া যাবে ১১০০ টাকায়। সেকেন্ড হ্যান্ড চারচাকা গাড়ি। সে গাড়িতে তেল ভরে নিলেই দিব্যি চাকা গড়াবে। কিনতে ইচ্ছুক? ৩৫ হাজার দাম। ১০ হাজারের নয়, দু-চার-পাঁচ হাজারেরও নয়, একটি সাইকেলের দাম ১২০০ টাকা। সবুজ সাথি প্রকল্পের সাইকেল ব্যবহারের পর বিক্রি করে দিয়েছে মালিক।
এ মেলা মকর সংক্রান্তির সময় হয়। এখন চলছে। বেশ কয়েকদিন চলবে। কত দুর থেকে যে মানুষ আসে জিনিসপত্র কিনতে তার ইয়ত্তা নেই। দক্ষিণ বিষ্ণুপুর থেকে কারবালা মোড়ের দিকে কিছুটা এগলে রাস্তার পাশে মাঠ। সেখানেই বসে প্রাচীন এই মেলা। মথুরাপুর রোড স্টেশন। সেখান থেকে খানিক হাঁটা। তারপরই দক্ষিণ বিষ্ণুপুরের মেলার মাঠ। সেখানে যেন সবার জন্য সব কিছু বিক্রি হয়। কি নেই? ক্যামেরা, সাদাকালো টিভি, আবলুস বার্নিস করা কাঠের আসবাব, বই, পুরনো সংবাদপত্র, গ্র্যান্ড ফাদার ক্লক, কবেকার সেই প্রাচীন বাদ্যযন্ত্র, লন্ঠন থেকে বোতাম টেপা ভিডিও গেমস, কী নেই!
শোনা যায়, কোনও এককালে দক্ষিণ বিষ্ণুপুরের উপর দিয়ে বয়ে যেত গঙ্গা। এখনও সেখানে ছোট ছোট ঘাট আছে। জনশ্রুতি, চৈতন্যদেব এই নদীপথে ওড়িশা গিয়েছিলেন। যাওয়ার পথে নামেন। এখানেই পৌষ সংক্রান্তির রাত কাটান। মেলার শুরু নাকি তখন থেকেই। আবার কেউ বলেন, এককালে গঙ্গাসাগরের যাত্রীরা কোনও কারণে এখানে আটকে পড়েছিলেন। তারা গঙ্গাতেই মকর সংক্রান্তির পূণ্যস্নান সারেন। তখন থেকে মেলার শুরু। এখনও দক্ষিণ বিষ্ণুপুর মহাশ্মশানের ওই ঘাটে পূণ্যস্নান করেন অনেকে। মেলা ফুলেফেঁপে উঠেছে ২০০ বছর ধরে।