আর ‘সন্ন্যাসিনী’ নন মমতা কুলকার্নি, জানেন মহামণ্ডলেশ্বর পদ থেকে তাঁকে কেন সরিয়ে দেওয়া হল?

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: সন্ন্যাসের পথে পা বাড়িয়ে কিন্নর আখড়ায় মহামণ্ডলেশ্বর পদ পেয়েছিলেন একদা বলিউড তারকা মমতা কুলকার্নি। আর ‘সন্ন্যাসিনী’ নন তিনি। মহাকুম্ভে কিন্নর আখড়া থেকে পাওয়া ‘মহামণ্ডলেশ্বর’ উপাধিও আর নেই তাঁর। আখড়ার প্রতিষ্ঠাতা ঋষি অজয় দাস অভিনেত্রীকে এই বিশেষ পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার কথা আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণা করেছেন। একই সঙ্গে অপসারিত হলেন কিন্নর আখড়ার নেত্রী এবং জনপ্রিয় সমাজকর্মী আচার্য মহামণ্ডলেশ্বর লক্ষ্মী নারায়ণ ত্রিপাঠী-ও।
সাংবাদিকদের ডেকে এক বিবৃতি দেন কিন্নর আখড়ার প্রতিষ্ঠাতা। বলেন, “কিন্নর আখড়ার প্রতিষ্ঠাতা হিসাবে আমি আচার্য মহামণ্ডলেশ্বর লক্ষ্মী নারায়ণ ত্রিপাঠীকে কিন্নর আখড়ার আচার্য মহামণ্ডলেশ্বরের পদ থেকে অব্যাহতি দিচ্ছি। ধর্মীয় কার্যকলাপ প্রচার এবং তৃতীয় লিঙ্গ সম্প্রদায়ের উন্নতির লক্ষ্যে তাঁকে নিয়োগ করা হয়েছিল। কিন্তু তিনি এই দায়িত্ব থেকে সরে এসেছেন।” পাশাপাশি ঋষি অজয় কটাক্ষ করে এ-ও বলেন, “এটি ‘বিগ বস্’-এর মতো কোনও রিয়্যালিটি শো নয় যে, মহাকুম্ভের সময় এটা করো ওটা করো। তার পর তিন বছর তুমি কিছু না করে চুপচাপ বসে থাকো।” তাঁর দাবি, আখড়ার নিয়ম মেনে সন্ন্যাস গ্রহণ না করেই মমতা ‘মহামণ্ডলেশ্বর’ পদ পেয়েছিলেন, যা নীতিবিরুদ্ধ। তাই অভিনেত্রী এবং লক্ষ্মী নারায়ণ ত্রিপাঠীকে সরিয়ে দিতে বাধ্য হলেন।
ঋষি অজয় অভিনেত্রীর বিরুদ্ধে মাদক চোরাকারবারে জড়িত থাকার অভিযোগ নিয়েও মুখ খোলেন। তাঁর কথায়, “মমতার বিরুদ্ধে মাদক চোরাকারবারে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। এমন একজনকে হঠাৎ নিয়ে এসে ‘সন্ন্যাস’ ধর্মে দীক্ষিত না করেই এত বড় উপাধি দিয়ে দেওয়া হল! এই অন্যায় মেনে নিতে পারছি না।”
অন্য দিকে, আখড়ার প্রতিষ্ঠাতার বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন মমতা, লক্ষ্মী নারায়ণ ত্রিপাঠী দু’জনেই। মমতা দাবি, তাঁর বিরুদ্ধে আনা সমস্ত অভিযোগ আদালতে মিথ্যা প্রমাণিত। তাঁকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে কলঙ্কিত করা হচ্ছে। প্রায় একই বক্তব্য কিন্নর আখড়ার সদ্য অপসারিত নেত্রী মহামণ্ডলেশ্বরও। তিনি জানিয়েছেন, ২০১৬-য় উজ্জয়িনী কুম্ভের সময় কিন্নরী আখড়ার তহবিল আত্মসাৎ করেছিলেন ঋষি অজয় দাস। যে কারণে পরের বছর তাঁকে বহিষ্কার করেন লক্ষ্মী নারায়ণ। ২০১৯ সালের প্রয়াগরাজ কুম্ভে কিন্নরী আখড়া আনুষ্ঠানিক ভাবে জুনা আখড়ার সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়। আখড়ার প্রত্যেক সদস্য মহন্ত হরি গিরিকে ‘গুরু’ হিসাবে গ্রহণ করেন। অর্থাৎ, ‘গুরু’ পদে ঋষি অজয় দাসের অস্তিত্ত্ব অস্বীকার করছেন লক্ষ্মী নারায়ণ।