দেশ বিভাগে ফিরে যান

পোস্টমর্টেম ও ডেথ সার্টিফিকেট ছাড়াই কুম্ভে নিহতদের দেহ নিয়ে চলে যেতে বলছে যোগী প্রশাসন

February 1, 2025 | 2 min read

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: প্রয়াগরাজের মোতিলাল নেহরু মেডিক্যাল কলেজের মর্গে লাশের স্তূপ থেকে অন্য অনেকের মতো প্রিয়জনের মৃতদেহ খুঁজতে হচ্ছে বাংলার থেকে আসা পুণ্যার্থীদের পরিবারকেও। আর তা খুঁজে পেতেই তড়িঘড়ি ছাড়তে হচ্ছে গেরুয়া শিবিরের ‘রামরাজ্য’। পোস্টমর্টেম ও ডেথ সার্টিফিকেট ছাড়াই দেহ নিয়ে চলে যেতে বলছে প্রশাসন। কয়েকটি ক্ষেত্রে পুলিস দিয়ে কার্যত ‘পাচার’ করা হচ্ছে মৃতদেহ। এরাজ্য থেকে পূর্ণকুম্ভ মেলায় গিয়ে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে, এমন পুণ্যার্থীর সংখ্যা শুক্রবার রাত পর্যন্ত বেড়ে দাঁড়িয়েছে ছয়। তার মধ্যে মোট পাঁচজনের মৃতদেহ ইতিমধ্যে পৌঁছেছে বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে। এখনও বাংলার ১০ জনের বেশি পুণ্যার্থীর কোনও খোঁজ মেলেনি।

মালদহের বৈষ্ণবনগরে এদিন পোস্টমর্টেম ছাড়াই শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে চরবাপুর গ্রামের বাসিন্দা প্রাথমিক স্কুল শিক্ষক অমিয় সাহার (২৮)। বাকি চারটি মৃতদেহের অন্ত্যেষ্টি অবশ্য সম্পন্ন হয় পোস্টমর্টেমের পরই। অমিয়বাবুর বাবা প্রদীপ সাহার দাবি, কুম্ভমেলায় হুড়োহুড়িতে পদপিষ্টের পর বুকে ব্যথা হচ্ছিল অমিয়র। পরে হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। তা সত্ত্বেও কীভাবে একে ‘স্বাভাবিক মৃত্যু’ বলল যোগী প্রশাসন? পোস্টমর্টেম ছাড়াই তাঁর অন্ত্যেষ্টি সম্পন্ন করা হল কেন? এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। শুধুমাত্র ‘মৃতদেহ বুঝে পেলাম’—কুম্ভের হাসপাতালের দেওয়া এহেন চিরকুটের ভিত্তিতে বাড়িতে ফিরিয়ে আনা হয় কলকাতার গল্ফগ্রিন অশ্বিনীনগরের বৃদ্ধা বাসন্তী পোদ্দার ও পশ্চিম মেদিনীপুরের গোদাপিয়াশালের বাসিন্দা ‌ঊর্মিলা ভুইয়াঁর দেহ। এখানে পোস্টমর্টেমের পর তাঁদের অন্ত্যেষ্টি সম্পন্ন হয়েছে। কুম্ভে পদপিষ্ট হয়ে মারা গিয়েছেন এ রাজ্যের আর এক বাসিন্দা বিনোদ রুইদাস (৪১)। জামুড়িয়ার কেন্দা ফাঁড়ি এলাকায় তাঁর বাড়ি। এদিন সেখানে মৃতদেহ নিয়ে আসেন উত্তরপ্রদেশ পুলিসের এক হেড কনস্টেবল। স্থানীয় মানুষের বিক্ষোভের জেরে তাঁকে ফাঁড়িতে আশ্রয় নিতে হয়। মৃত্যু সংক্রান্ত কোনও সার্টিফিকেট উত্তরপ্রদেশ প্রশাসন দেয়নি বলে অভিযোগ করেছেন বিনোদের শ্যালক বিষ্ণু রুইদাস। তাঁর কথায়, ৫০-৬০টা লাশের স্তূপ থেকে খুঁজে বের করতে হয়েছে জামাইবাবুর নিথর দেহ। ওরা (যোগী প্রশাসন) মৃত্যু নিয়ে মিথ্যা তথ্য দিচ্ছে।

পূর্ণকুম্ভে শাহিস্নানে গিয়ে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে বীরভূমের রামপুরহাট পুরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের বাউরি পাড়ার গায়ত্রী দে’র (৫২)। ঘটনার পর থেকেই তিনি নিখোঁজ ছিলেন। তাঁর পুত্র প্রতাপ দে বৃহস্পতিবার রামপুরহাট থানায় নিখোঁজের অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। পরে কুম্ভ বিপর্যয়ের এক ঝাঁক মৃতদেহের ছবির মধ্যে গায়ত্রীদেবীকে চিহ্নিত করেন স্থানীয় এক বাসিন্দা ঋত্বিক ধীবর। পরিবারের লোকজনও তাঁকে শনাক্ত করেছেন। মৃতদেহ রামপুরহাটে ফিরিয়ে আনার তোড়জোড় শুরু হয়েছে।
পুণ্যস্নান সারতে গিয়ে ভিড়ের চাপে অসুস্থ হয়ে মৃত্যু হয়েছে জলপাইগুড়ির ডাবগ্রামে বাড়িভাসা গ্রামের বাসিন্দা অমল পোদ্দারের। পোস্টমর্টেম-ডেথ সার্টিফিকেট ছাড়াই তাঁর মৃতদেহ এদিন এলাকায় এসে পৌঁছেছে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#death certificate, #Stampede, #Postmortem, #mahakumbha

আরো দেখুন