সক্কাল সক্কাল বাগদেবীর পুজোর অঞ্জলি, বেলা বাড়তেই বাঙালির প্রেম দিবসে বিভিন্ন পার্ক-বইমেলায় উপচে পড়ল ভিড়

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: বসন্ত পঞ্চমী, যা পশ্চিমবঙ্গে সরস্বতী পুজো নামেই বেশি পরিচিত। শিক্ষার্থীদের কাছে বছরের অন্যতম আনন্দের একটি দিন। জ্ঞান ও শিক্ষার দেবী সরস্বতীর আরাধনার পাশাপাশি এই দিনটি কলকাতায় ‘বাঙালির ভ্যালেন্টাইন্স ডে’ নামেও জনপ্রিয়।
সরস্বতী পুজোকে ‘বাঙালির ভ্যালেন্টাইন্স ডে’ বলা হয় কারণ এই দিন তরুণ-তরুণীদের মধ্যে এক বিশেষ আবহ তৈরি হয়। শিক্ষার্থীরা নতুন পোশাকে সেজে ওঠে, বিশেষত হলুদ রঙের ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে পুজো দেখতে বের হয়। বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে আড্ডা, হাসি-ঠাট্টা, ঘোরা, ছবি তোলা— সব মিলিয়ে এক অন্যরকম উচ্ছ্বাস দেখা যায়।
সরস্বতী পুজোর দিন বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জেলা থেকে শহর বিভিন্ন পার্ক, ময়দান, মলে ভিড় দেখা যায়। রাস্তায় ট্রাফিক ব্যবস্থা সামলাতে পর্যাপ্ত পুলিস ছিল। সাদা পোশাকের পুলিস থেকে শুরু করে উইনার্স টিম মোতায়েন ছিল বিভিন্ন জনবহুল জায়গায়। সিনেমা হলগুলিতেও একইভাবে ভিড় দেখা যায়।
এবছর সরস্বতী পুজো পঞ্জিকায় লেখা সোমবার। তবে, রবিবার দুপুরেই পড়ে গিয়েছে তিথি। তাই অনেকে পুজো সেরে নিয়েছেন। তারপর সোজা বইমেলায়। গত পাঁচদিন ওয়েস্টার্ন পোশাকে দেখা গিয়েছিল তরুণ-তরুণীদের। কিন্তু এদিন গোটা প্রাঙ্গণ ছিল শাড়ি ও পাঞ্জাবিময়। বসন্ত পঞ্চমী। তাই রংও নির্দিষ্ট, হলুদ। গেট খুলতেই শুরু হয়েছিল ভিড়। দুপুর গড়িয়ে বিকেল নামতেই জনপ্লাবন। প্রথম রবিবারে হাজির ৪ লক্ষ মানুষ! বেশিরভাগই তরুণ প্রজন্মের। শুধু প্রেম নয়, তাঁরা স্টল ঘুরলেন। বইও কিনলেন। তারপর আড্ডা দিলেন জমিয়ে। রিং রোডে দাঁড়িয়ে রবি ঠাকুরের কবিতা পাঠ করছেন এক তরুণ—‘ঘরেতে এল না সে তো, মনে তার নিত্য আসা যাওয়া…’।
ফুড প্যাভিলিয়নের সামনে পা রাখা দায়। যে ক’টা চেয়ার পাতা, তাতে বসতে গেলে ‘মিউজিক্যাল চেয়ার’ খেলতে হবে। বান্ধবীকে সেখানেই নিয়ে এসেছেন এক তরুণ। তরুণী খেতে চেয়েছেন ফিশফ্রাই আর কাবাব। ‘দাদা, আপনাদের আসল ভেটকি তো?’ তরুণকে ঠেলে সরিয়ে পিছন থেকে জিজ্ঞেস করলেন এক প্রৌঢ়। ঝগড়া করেননি। তবে, প্রৌঢ়কে ব্যঙ্গ করেই তরুণ বলে উঠলেন, ‘আমাকে নকল ভেটকি দেবেন দাদা!’ মেলার ঢেউ উপচে পড়েছিল বাইরেও। করুণাময়ী বাসস্ট্যান্ডেও যেন উৎসবের আমেজ। সেখানেও তরুণ প্রজন্মের ভিড়ই বেশি।