তিন বাঙালি জয় করলেন দক্ষিণ আমেরিকার সর্বোচ্চ শৃঙ্গ

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: দক্ষিণ আমেরিকার সর্বোচ্চ শৃঙ্গ আর্জেন্তিনার অ্যাকাঙ্কাগুয়া (৬৯৬২ মিটার) এবং পৃথিবীর সর্বোচ্চ আগ্নেয়গিরি চিলির ওজোস দেল সালাদো শৃঙ্গ জয় করলেন তিন বাঙালি যুবক। দাসপুর-২ ব্লকের জোৎঘনশ্যামের বাসিন্দা আবির হুদাইত, উত্তর ২৪ পরগনার নৈহাটির বাসিন্দা ভারতীয় সেনার অফিসার চিরাগ চট্টোপাধ্যায় ও হাওড়ার বাগনানের জগবন্ধু মান্না।
এই অভিযানের নেতৃত্বে ছিলেন চিরাগ। তিনি ২০২৩ সালে এভারেস্ট জয় করেছিলেন। তাঁর লক্ষ্য বিশ্বের সাতটি মহাদেশের সাতটি উচ্চতম শৃঙ্গ জয় করা। ওই অভিযাত্রী দলে ছিলেন আরও এক বাঙালি, তিনি পূর্ব মেদিনীপুরের হাউরের অর্পিতা পাত্র। তবে তিনি শারীরিক অসুস্থতার কারণে শৃঙ্গের ১০০ মিটার নীচে থেকে ফিরে আসতে বাধ্য হন।
২২ জানুয়ারি অ্যাকাঙ্কাগুয়া এবং ২৯ জানুয়ারি ওহোস দেল সালাদো শৃঙ্গে জয় করেন তাঁরা। হোয়াটসঅ্যাপ কলে দক্ষিণ আমেরিকার আর্জেন্তিনা থেকে আবির জানালেন, ৬ জানুয়ারি কলকাতা থেকে দিল্লি হয়ে আর্জেন্তিনার মেন্ডোজা শহরে পৌঁছন তাঁরা। তারপর ১১ জানুয়ারি অভিযান শুরু করেন। পর্যায়ক্রমে কনফুলেন্সিয়া ক্যাম্প, প্লাজা ফ্রান্সিয়া, বেসক্যাম্প প্লাজা দে মুলাস, ক্যাম্প কানাডা, ক্যাম্প বার্লিন, কলেরা ক্যাম্প পেরিয়ে ২২ জানুয়ারি দুপুর ১২টা ৩০ নাগাদ অ্যাকাঙ্কাগুয়ার শীর্ষে পৌঁছন। ফেরার পথে প্রবল তুষারঝড়ের মুখোমুখি হন। তবে সেই ঝড়ের মুখে পড়েও সফলভাবে বেস ক্যাম্পে ফিরে আসেন তাঁরা।
এরপর ২৬ জানুয়ারি তাঁরা চিলির উদ্দেশ্যে রওনা দেন এবং ২৮ জানুয়ারি ওজোস দেল সালাদো অভিযানে নামেন। অত্যন্ত প্রতিকূল পরিবেশের মধ্যে কঠিন পথ অতিক্রম করে তাঁরা ২৯ জানুয়ারি দুপুর ১২টা ৪৫ নাগাদ বিশ্বের উচ্চতম আগ্নেয়গিরি ওজোস দেল সালাদোর শীর্ষে পৌঁছন।
দাসপুর-২ ব্লকের প্রত্যন্ত গ্রামে আবিরের জন্ম। এক ভাই, এক বোন, বাবা ও মা নিয়ে আবিরের পরিবার। তাঁর বাবা আশিস হুদাইত সমাজকর্মী, মা বিদ্যাবতী হুদাইত গৃহবধূ। বোন আদৃতি হুদাইত মাজির পাশের গ্রামেই শ্বশুরবাড়ি। আবির পেশায় সফ্টওয়ার ইঞ্জিনিয়ার। উত্তর ২৪ পরগনার মধ্যমগ্রামে একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। পাহাড়ের নেশায় চল্লিশ ছুঁইছুঁই আবির এখনও বিয়ে করেননি। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, আবির ছোটবেলা থেকেই পাহাড়ের নেশায় বিভোর থাকতেন। শৃঙ্গজয়ের গল্প শুনতে ও পড়তে ভালোবাসতেন। এর আগে তিনি আফ্রিকার সর্বোচ্চ শৃঙ্গ কিলিমাঞ্জারো সহ নেপালের আমা দাবলাম, লোবুৎসে এবং হিমাচলের ভাগীরথী-২ ও সিবি-১৩ জয় করেছেন।