গল্পের বই পড়ার চাইতে শুনতে বেশি পছন্দ করছে বাঙালি?

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: দুর্গাপুজোর সময় বড় রাস্তার মোড়গুলোতে যেমন দড়ি বাঁধা থাকে, তেমন দড়ি লাগে কলকাতা বইমেলায়। খুলতেই পিলপিল করে লোক ছুটে চলেছে। এপার থেকে ওপার। কীসের জন্য? দুই মলাটের ভিতরে থাকা পাতার টানে? নাকি পরিচিত মানুষ, সেলেব্রিটি লেখক, খাবার, বই হাতে নিয়ে ছবি আর নিজেকে ‘সংস্কৃতিমনস্ক’ প্রমাণের অদম্য দায়? মাঝে মাঝেই তর্কের ঝড় ওঠে— ‘এখন কি লোকে বই পড়ে?’ বইমেলার বুকেই অডিটোরিয়ামে এমন সভার আয়োজন হয়। গত বছরও হয়েছিল, এই বছরও হয়েছে। যোগ দিয়েছেন বাঘা বাঘা সাহিত্যিক ও তার্কিকেরা। বই পড়ে ও পড়ে না — দুই পক্ষেই প্রচুর ভোট থাকে। হয়তো শেষ পর্যন্ত জিতে যায় ‘লোকে বই পড়া কমিয়ে দিয়েছে’ — তত্ত্বটাই। কিন্তু যাঁরা বই পড়ছেন, তাঁদের কাছে এই অভ্যাস কেমন? পাঠক না হলেও শিক্ষাব্যবস্থার সুবাদে অনেকেই শৈশবে বইয়ের সঙ্গে ঘর করেছেন।
পাশাপাশি গত দেড় দশকের ও বেশি সময় ধরে মানুষের মনে জায়গা করে নিয়েছে অডিও স্টোরি। বিখ্যাত সাহিত্যিকদের গল্প অবলম্বনে তৈরী হচ্ছে এই অডিও স্টোরি যা দেশের তথা বিদেশের মানুষের ও মন জয় করেছে একটা বড় সময় ধরে। বিশেষ করে প্রবাসী বাঙালি যারা সবসময় বাংলা সাহিত্য হাত বাড়ালেই পান না কিন্তু যাদের কাছে ভাষার গুরুত্ব আছে তাদের কাছে এই অডিও স্টোরির মাধ্যমে সাহিত্য সৃষ্টি পৌঁছে দেবার প্রয়াস সত্যি প্রবাসী বাঙালিদের বাংলার সাথে জুড়ে থাকতে সাহায্য করেছে।
একটি সাম্প্রতিক বিশেষ সাক্ষাৎকারে উপস্থিত ছিলেন বিখ্যাত রেডিও জকি দীপাঞ্জন ঘোষ এবং প্রখ্যাত সাহিত্যিক হিমাদ্রিকিশোর দাশগুপ্ত। দীপাঞ্জন ঘোষ এই অডিও স্টোরির জগতে একটি আবেগ এবং তিনি তার বক্তব্যে বলেন যে অডিও স্টোরি সত্যি মানুষকে সাহিত্য মুখি করেছে কিন্তু এটা সর্বৈব সত্য নয় যে বাঙালি বই পড়তে চাইছেন না। বরং এই গল্প গুলো শুনে বাঙালি আরো বেশি বই পড়তে আগ্রহী হচ্ছে। তিনি আরো বলেন যে এমন কিছু বই আছে যেগুলো কখনোই অডিও স্টোরি হিসেবে কখনো শোনানো সম্ভব নয়, উদাহরণ স্বরূপ ইবনবতুতার ভ্রমণ কাহিনীর কথা উল্লেখ করে বলেন এই ধরণের দুষ্প্রাপ্য সাহিত্যের স্বাদ পেতে গেলে কিন্তু বই কিনেই পড়তে হবে। এছাড়া তার মতে কিছু প্রকাশক দাবি করেছেন, তাঁদের প্রকাশনা থেকে বেরোনো গল্প অডিও স্টোরি হবার পর বই বিক্রি আরো বেড়েছে।