দেশ বিভাগে ফিরে যান

করের ভাগ বাড়ানোর দাবিতে মমতার সুরেই সরব গুজরাত সহ তিন বিজেপি শাসিত রাজ্য

February 11, 2025 | 2 min read

নিউজ ডেস্ক,দৃষ্টিভঙ্গি: রাজ্যগুলির ব্যয় বৃদ্ধি পাচ্ছে ক্রমাগত। অথচ আয় বাড়ানোর পথে বিঘ্ন সৃষ্টি করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। বিরোধী রাজ্যগুলির এই অভিযোগ দীর্ঘদিনের। বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তিনি সহ বিরোধী মহাজোট ‘ইন্ডিয়া’র অন্যান্য মুখ্যমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীরা আগেই অর্থসঙ্কটের হিসেব দাখিল করে এই অভিযোগে সোচ্চার হয়েছেন। এবার সেই সুরেই কণ্ঠ মিলিয়েছে খোদ বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলি। এমনকী মোদী-শাহের গুজরাতও।

ষোড়শ অর্থ কমিশনের কাছে একের পর এক বিজেপি শাসিত রাজ্য সরকার দাবি করেছে, আর চালানো যাচ্ছে না। ট্যাক্স প্রদানের ফর্মুলায় বদল এনে রাজ্যকে বেশি টাকা দিতে হবে। গুজরাত ছাড়াও হরিয়ানা, ওড়িশা অর্থ কমিশনের কাছে দাবি জানিয়েছে, অন্তত ৫০ শতাংশ ট্যাক্স শেয়ার দিতে হবে। নচেৎ অর্থসঙ্কট সামলানো যাবে না।

গণতান্ত্রিক ভারতের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর প্রধান অভিমুখ হবে ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ। এমনটাই লক্ষ্য ছিল সংবিধান প্রণেতাদের। সেইমতোই কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে প্রশাসনিক দায়িত্ব বণ্টনের ফর্মুলা তৈরি হয়েছিল। এই অভিমুখকে ভরকেন্দ্র করে নয়ের দশকে এসেছিল পঞ্চায়েতিরাজ আইন। অর্থাৎ রাষ্ট্র পরিচালনার আরও বিকেন্দ্রীকরণ। কিন্তু ২০১৪ সালের পর থেকে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে সবথেকে বড় যে অভিযোগ বারবার শোনা গিয়েছে, তা হল— রাজ্যগুলির ক্ষমতায় হস্তক্ষেপ এবং আর্থিকভাবে রাজ্যকে দুর্বল করে দিয়ে কেন্দ্র নির্ভরতা আরও বৃদ্ধির কৌশল।

সাধারণ মানুষের সংসার খরচের মতোই স্বাভাবিকভাবে বছর বছর বেড়ে যায় যে কোনও সরকারের ব্যয়-বরাদ্দ। অথচ বিগত বছরগুলিতে কেন্দ্রের পক্ষ থেকে রাজ্যকে প্রদেয় ট্যাক্সের ভাগ বিস্ময়করভাবে কমেছে। ২০১৩ সালে গঠিত হয়েছিল চতুর্দশ অর্থ কমিশন। তাদের সুপারিশ ছিল, মোট প্রাপ্ত করের মধ্যে ৪২ শতাংশ রাজ্যের প্রাপ্য হিসেবে দেওয়া হবে। ২০১৭ সালে গঠিত হয় পঞ্চদশ অর্থ কমিশন। তারা আবার এই প্রাপ্য করের অংশ বৃদ্ধির বদলে কমিয়ে ৪১ শতাংশ করে। অথচ বিগত বছরগুলিতে রাজ্যে রাজ্যে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে বিভিন্ন জনমুখী আর্থিক সহায়তা প্রকল্প। কোনও দলের সরকারই পিছিয়ে নেই। ফলে খরচ বেড়ে চলেছে। অথচ রাজ্য ও কেন্দ্র সম্মিলিতভাবে যে ট্যাক্স আদায় করে, তার ভাগ হিসেবে সেই ৪১ শতাংশই পেয়ে আসছে রাজ্যগুলি। আর তারই সঙ্গে নানাবিধ কারণ ও অজুহাতে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকাও আটকে রেখেছে মোদি সরকার। অর্থাৎ দ্বিমুখী অস্ত্রে রাজ্যকে দুর্বল করা হচ্ছে।

পশ্চিমবঙ্গের উদাহরণই ধরা যাক। ২০১৩ সালে রাজ্যের বাজেট বরাদ্দ ছিল ১ লক্ষ ৫৪ হাজার কোটি টাকা। ২০১৮ সালে তা বেড়ে হয় প্রায় ২ লক্ষ কোটি। ২০২৩ সালে বাংলার বাজেট ব্যয়বরাদ্দ হয়েছিল ২ লক্ষ ৭৪ হাজার কোটির বেশি। অথচ বাংলাকে প্রদেয় প্রকল্পের অর্থ কেন্দ্র আটকে রেখেছে। রাজ্যের হিসেবে কেন্দ্রের কাছে বকেয়া ১ লক্ষ ৭০ হাজার কোটি টাকা। তাই করের ভাগ বৃদ্ধির দাবি তুলেছে বাংলা।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Bengal, #Income tax, #Odisha, #gujarat, #Haryana, #modi govt, #Taxes

আরো দেখুন