নিউটাউনে ধর্ষণ-খুনে ধৃত যুবক পুলিশের জেরা সময়ও নির্বিকার, যেন কিছুই হয়নি!

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: নিউটাউনের লোহাপুলের সামনে ১৪ বছরের কিশোরীকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় এখনও থমথমে গোটা এলাকা। ধৃত সৌমিত্র রায় ওরফে রাজের মা ঝর্ণাদেবীও নির্যাতিতা পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে অভিযুক্ত ছেলের চরম শাস্তির দাবি তুলেছেন। নদীয়ার ধানতলায় বসে তিনি জানিয়েছেন, ‘একটা ছোট্ট মেয়ের জীবন নষ্ট করে দিয়েছে আমার ছেলে। আমি ওর পাশে দাঁড়াতে চাই না’।
নিউটাউনের আবাসিকরাও ধৃতের কঠোর থেকে কঠোরতম শাস্তির দাবি তুলেছেন। ঘটনার কথা মনে করলে এখনও শিউরে উঠছেন এলাকার বাসিন্দারা। ১৪ বছরের ওই কিশোরী বোনের ওপর অভিমান করে বেরিয়েছিল। বাড়ি ফেরার জন্য উঠেছিল সৌমিত্রর টোটোয়। কিন্তু, বাড়ি না পৌঁছে দিয়ে সে ওই কিশোরীকে নারকীয়ভাবে ধর্ষণ ও খুন করে। ৭ ফেব্রুয়ারি কিশোরীর অর্ধনগ্ন দেহ উদ্ধারের পরদিন রাতেই পুলিস সৌমিত্রকে গ্রেপ্তার করে।
ধরা পড়ার পরই কাচুমাচু গলায় অপরাধ স্বীকার করে সৌমিত্র বলেছিল, ‘ধর্ষণ ও খুন করে ফেলেছি স্যার’! ‘কেন করলেন? জানেন, আপনার কী হতে পারে’? পুলিসের এই প্রশ্নে ২২ বছরের ধৃত যুবক অবশ্য নিরুত্তাপ। তার জবাব, ‘কী আর হবে স্যার, বড়জোর ফাঁসি’! শুধু তাই নয়, সে এতটাই অনুশোচনাহীন, যেন কিছুই হয়নি! তাই ধরা পড়ার আগেও স্ত্রীকে নিয়ে বেড়াতে গিয়েছিল নিউটাউনের হস্তশিল্প মেলায়! জেরায় পুলিস বুঝতে পেরেছে, তার মধ্যে অপরাধপ্রবণতা রয়েছে। ঠান্ডা মাথার ছেলে, তবে ‘বিকৃতকাম’। তাই অপরাধ ঘটাতে হাত কাঁপেনি তার। ধরা পড়ার পরেও নেই কোনও অনুশোচনা।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, নৃশংস ঘটনার পর রাতে সে নিশ্চিন্তে স্ত্রীর পাশে গিয়ে ঘুমিয়েছিল। পরদিন সকালে দিব্যি টোটো নিয়ে কাজে বেরিয়েছিল। স্ত্রীকে নিয়ে সে ৮ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় নিউটাউনের সেন্ট্রাল মলের সামনে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য হস্তশিল্প মেলায় বেড়াতে গিয়েছিল। নিজে টোটো চালিয়েই গিয়েছিল। তার চোখে ও মুখে কোনও ছাপ ছিল না। জেরায় সে পুলিসকে জানিয়েছে, কিশোরীকে সে খাবার ও চা খাওয়াতে চেয়েছিল। কিন্তু, কিশোরী কিছু খেতে চায়নি। পরে তাকে ‘কু-প্রস্তাব’ও দেয়। প্রত্যাখান করায় সে লোহাপুলের কাছে গিয়ে অপরাধ ঘটায়। শ্বাসরোধের জন্য সে টোটোর একটি কাপড় ব্যবহার করেছিল। ওই কাপড় বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিস। বুধবার ভোরে ধৃতকে নিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করে পুলিস। সকাল পর্যন্ত সেই প্রক্রিয়া চলে।