Income Tax Bill 2025: কী কী বদল হল নয়া আয়কর বিলে?

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: বাজেট অধিবেশন চলাকালীন লোকসভায় পেশ হল নতুন আয়কর বিল (New Income Tax Bill 2025)। ১৯৬১ সালের আয়কর আইনের বদলে নয়া বিল আনা হল কেন্দ্রের তরফে। বাতিল হতে চলেছে ৬৪ বছরের পুরনো আয়কর আইন। কেন্দ্রের দাবি, নতুন বিলটিতে আয়কর সংক্রান্ত বহু পরিবর্তন আনা হয়েছে। তাদের আরও দাবি, নয়া বিল করদাতাদের জন্য আরও সহজ, স্বচ্ছ এবং করবান্ধব হতে চলেছে।
বুধবার প্রকাশিত বিলের খসড়া অনুযায়ী, নতুন আইনে কর ব্যবস্থার ডিজিটালাইজেশন, কর প্রদানের প্রক্রিয়া সরলীকরণ এবং কর ফাঁকি রোধে কঠোর নিয়মের প্রস্তাব করা হয়েছে।
এক নজরে নতুন আয়কর বিল ২০২৫-র দশ পরিবর্তন:
আয়তন লাঘব ও সরলীকরণ:
নতুন আয়কর বিলটি আগের তুলনায় আরও সংক্ষিপ্ত ও সহজবোধ্য করা হয়েছে। ১৯৬১ সালের আয়কর বিলে ৮৮০টি পৃষ্ঠা ছিল। নতুন বিলে মাত্র ৬২২ পৃষ্ঠা রয়েছে। নয়া বিলে ৫৩৬টি ধারা এবং ২৩টি অধ্যায় রয়েছে।
‘Tax Year’-র প্রবর্তন:
নতুন বিলে ‘Tax Year’ চালু করা হচ্ছে। যা মূল্যায়ন (অ্যাসেসমেন্ট ইয়ার) বছর এবং অর্থ বছরের বিভ্রান্তি দূর করবে। এবার থেকে ১ এপ্রিল ২০২৫ থেকে ৩১ মার্চ ২০২৬ পর্যন্ত সময়কালকে ট্যাক্স ইয়ার ২০২৫-২৬ বলা হবে।
স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশনে বদল:
পুরনো কর কাঠামোয় বেতনভোগী ব্যক্তিরা ৫০,০০০ টাকার স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন পেতেন। নতুন ব্যবস্থায় ডিডাকশনের মাত্রা ৭৫,০০০ টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। কর স্ল্যাবে কোনও পরিবর্তন না-করে আগের হার বহাল রাখা হয়েছে।
CBDT-কে স্বাধীন ক্ষমতা দান:
নতুন বিলে সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ডিরেক্ট ট্যাক্স-কে স্বাধীনভাবে কর প্রকল্প চালু করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। যা দাপ্তরিক ও প্রশাসনিক বিলম্ব কমাতে সাহায্য করবে।
ক্যাপিটাল গেইনের হার অপরিবর্তিত:
শেয়ার বাজারে স্বল্পমেয়াদী মূলধন লাভের সময়কাল ১২ মাস রাখা হচ্ছে। যার হার ২০ শতাংশই রাখা হয়েছে। দীর্ঘমেয়াদী মূলধন লাভের ক্ষেত্রে কর হার ১২.৫ শতাংশে রাখা হয়েছে।
পেনশন, এনপিএস এবং বিমার উপর ছাড়:
পেনশন, এনপিএস অবদান ও বিমার উপর কর ছাড় অব্যাহত থাকবে। মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগের উপরও কর ছাড় দেওয়া হবে।
কর ফাঁকিতে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা:
যাঁরা কর ফাঁকি দেন, তাঁদের জন্য নতুন বিলে কঠোর শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। কর ফাঁকির জন্য মামলা করা হবে। জরিমানাও নেওয়া হবে। কর সংক্রান্ত ভুল বা অসম্পূর্ণ তথ্য দেওয়ার জন্যও মোটা অঙ্কের জরিমানা করারও প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
e-Kyc বাধ্যতামূলক:
ই-কেওয়াইসি এবং অনলাইন কর প্রদানকে বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। আশা করা হচ্ছে, ই-ফাইলিং বাধ্যতামূলক করলে কর প্রদানে স্বচ্ছতা বৃদ্ধি পাবে।
কৃষিক্ষেত্র আয়কর মুক্ত:
নতুন বিলে কৃষি কাজ থেকে আয়কে কর মুক্ত রাখার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। ধর্মীয় ট্রাস্ট, প্রতিষ্ঠান ও অনুদানে প্রদত্ত অর্থের উপরও কর অব্যাহতি দেওয়া হবে।
ভাষাগত সরলীকরণ:
১৯৬১ সালের আইনে ভাষাগত অস্পষ্টতা দূর করে নতুন বিলটি সহজ-সরল ভাষায় উপস্থাপন করা হয়েছে। দাবি করা হচ্ছে, এতে করদাতাদের সুবিধা হবে।
নতুন আয়কর বিল ২০২৫-এ নানান পরিবর্তন করা হয়েছে। কেন্দ্রের তরফে সেগুলোকে ইতিবাচক বলে দাবি করা হলেও, বাস্তবায়নের পর বোঝা যাবে নতুন আইন আম জনতার জন্য কতটা উপযোগী হল!