নয়াদিল্লি স্টেশনে পদপিষ্ট হয়ে ১৮ জনের মৃত্যু! রেলের গাফিলতিই কি কারণ?

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: শনিবার রাতের ঘটনায় নয়াদিল্লি স্টেশন যেন মৃত্যুপুরী হয়ে উঠল। পুণ্যলাভের নেশায় মরিয়া জনতা হুড়োহুড়ি শুরু করল, তাতেই পদপিষ্ট হয়ে চলে গেল মহিলা, শিশু-সহ আঠারোটি প্রাণ। সহযাত্রীদের চিৎকার, আর্তনাদ কানে এল না মানুষের। ট্রেনে ওঠার নেশায় মত্ত! নয়াদিল্লিতে পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনার অন্যতম একটি কারণ হল রেলের গাফিলতি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কুম্ভ যাওয়ার উদ্দেশ্যে শনিবার রাতে অসংখ্য মানুষ জড়ো হন নয়াদিল্লি স্টেশনে। নয়াদিল্লি স্টেশন থেকে একাধিক ট্রেন রয়েছে, যেগুলো সরাসরি কুম্ভে যায়, নয়তো কুম্ভ হয়ে অন্য গন্তব্যে যাওয়ার কথা। ট্রেনগুলির আশায় দাঁড়িয়েছিলেন কয়েক হাজার মানুষ।
স্বতন্ত্রতা সেনানী এক্সপ্রেস ও ভুবনেশ্বর-রাজধানী এক্সপ্রেস, এই দুই ট্রেনে প্রয়াগরাজ যাওয়ার আশায় বহু মানুষ নয়াদিল্লি স্টেশনের ১২ এবং ১৩ নম্বর প্ল্যাটফর্মে অপেক্ষা করছিলেন। দুটি ট্রেনের কোনওটিই সময় মতো পৌঁছয়নি। খবর রটে যায় ট্রেনদুটি বাতিল হয়েছে। তখনই কুম্ভের জন্য স্পেশাল ট্রেন প্রয়াগরাজ এক্সপ্রেস ঢুকে পড়ে ১৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মে। প্রয়াগরাজ এক্সপ্রেস আসতে দেখে বাকি দুটি ট্রেনের যাত্রীরাও ১৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মের দিকে ছুটতে থাকেন। সকলে একসঙ্গে ওই ট্রেনটিতে ওঠার চেষ্টা করলে অনেকেই পড়ে যান। সমাজ মাধ্যমে ভাইরাল ভিডিও-তে দেখা যাচ্ছে, যারা পড়ে রয়েছেন তাদের পা দিয়ে মাড়িয়ে ট্রেনের দিকে ছুটছেন অন্য পুণ্যার্থীরা। আর্তনাদ-চিৎকারকে কেউ আমল দেয়নি!
তিন প্ল্যাটফর্মের যাত্রী এক প্ল্যাটফর্মে চলে আসায় ভিড় নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি রেল। দুটি ট্রেন লেট। এত দেরিতে ট্রেন দুটি চলছিল যে রটে যায় ট্রেন দুটি বাতিল হয়েছে। ট্রেনের প্ল্যাটফর্ম নিয়ে বিভ্রান্তিকর ঘোষণা শোনা গিয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে। প্রয়াগরাজ যাওয়ার জন্য দেড় হাজার যাত্রী অসংরক্ষিত টিকিট কেটেছিলেন। এত বিশাল সংখ্যক অসংরক্ষিত টিকিট বিক্রির পরও কোনওরকম সচেতনতামূলক পদক্ষেপ করা হয়নি রেলের তরফে, সে প্রশ্নও উঠছে। কোনওভাবে দায় এড়াতে পারে না রেল। সর্বপরি রেলের বিরুদ্ধে এই ঘটনাকে গুজব বলে উড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠছে। সরব হয়েছেন দেশের বিরোধীরা।