ছয় রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান বিক্রির টার্গেট! ফের বেসরকারিকরণে ঝাঁপাচ্ছে মোদী সরকার?

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: কোনও মতেই হাল ছাড়ছে না মোদী সরকার। বিলগ্নিকরণের নয়া নীতি বাস্তবায়িত করতে মরিয়া মোদী সরকার। সরকারি ব্যাঙ্ক, বিমা ও সংস্থা মিলিয়ে ছ’টি রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানের সরকারি অংশীদারিত্ব বিক্রির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরেই সংস্থাগুলির বেসরকারিকরণের পরিকল্পনা রয়েছে। এতদিন ধরেও তা রূপায়িত হয়নি। এবার মরিয়া হয়ে আগামী তিন বছরের মধ্যে বেশ কিছু সংস্থার বেসরকারিকরণ প্রক্রিয়া শেষ করতে চায় মোদী সরকার। আপাতত শেয়ার বিক্রি চূড়ান্ত করা হয়েছে। এবারের বাজেটে বছরে বিলগ্নিকরণের মাধ্যমে ৪৭ হাজার কোটি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা স্থির হয়েছে, তারই কি পরিকল্পনা এটি?
ইন্ডিয়ান ওভারসিজ ব্যাঙ্ক, ইউকো ব্যাঙ্ক, সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক, পাঞ্জাব অ্যান্ড সিন্ধ ব্যাঙ্ক, নিউ ইন্ডিয়া অ্যাসিওরেন্স, জেনারেল ইনস্যুরেন্স এবং এলআইসি-র কিছু শেয়ার বিক্রির পরিকল্পনা নিয়েছে কেন্দ্র সরকার। একটি বিশেষ উচ্চ পর্যায়ের পরামর্শদাতা কমিটি গঠন করা হয়েছে। কবে, কীভাবে এবং কত অংশ শেয়ার বিক্রি করা সম্ভব তা কমিটিই ঠিক করবে। শেয়ার বিক্রির কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, সিকিওরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অব ইন্ডিয়ার বিধিনিয়মের সঙ্গে সঙ্গতি রক্ষা করার জন্য এই সিদ্ধান্ত। আরও বলা হয়েছে, শেয়ার বাজারে তালিকাভুক্ত সরকারি সংস্থার একটি নির্দিষ্ট হারে শেয়ার বেসরকারি হাতে থাকতে হবে। বহু বছর ধরে এইসব সংস্থা শেয়ার বাজারে তালিকাভুক্ত। কেন বিধিনিয়ম মানা হয়নি এতদিন? বেছে বেছে কেন সেই সব সংস্থাকে শেয়ার বিক্রির তালিকায় রাখা হচ্ছে, যেগুলি সরকারের বিলগ্নিকরণের খসড়ায় রয়েছে? বেসরকারিকরণ না-করতে পেরে এবার সংস্থাগুলোর শেয়ার বিক্রি শুরু হচ্ছে কি?
২০২০ নাগাদ দাবি করা হয়েছিল, ১ লক্ষ ৭৫ হাজার কোটি টাকার বিলগ্নিকরণ লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে কেন্দ্র। রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা এবং ব্যাঙ্ক বেসবকারিকরণ করে আয় করা হবে। প্রত্যাশিতভাবেই সেই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। দেখা গিয়েছিল, ভারতের ব্যাঙ্কিং সেক্টর বিপুল মুনাফা করেছে পরবর্তী বছরে। একের পর এক সরকারি সংস্থাও মুনাফা করে লভ্যাংশ তুলে দিচ্ছে সরকারের হাতে। ২০২২ সালে শেষবার এলআইসির শেয়ার বিক্রি হয়েছিল। প্রায় ২১ হাজার কোটি টাকা তার থেকে আয় করেছে সরকার। ফের এলআইসিকে বাছা হচ্ছে। দেড় মাস ধরে শেয়ার বাজারে ধস নেমেছে, তখনই সরকারি সংস্থা এবং বিশেষ করে ৫ লক্ষ কোটি টাকার মার্কেট ক্যাপিটালাইজেশন থাকা এলআইসির আবার আইপিও কেন আনা হচ্ছে? ৯০০ টাকা দিয়ে যারা এলআইসির প্রারম্ভিক শেয়ার কিনেছিলেন, তারা লাভের মুখ দেখেননি। শেয়ার বিক্রির জন্য তালিকাভুক্ত অন্য সংস্থার ব্র্যান্ডভ্যালু ও সম্পদের নিরিখে এলআইসির তুলনাই আসে না।