ট্যাংরা হত্যাকাণ্ড: পুলিশি জেরায় কী কী জানাল দে বাড়ির ছোট ছেলে প্রসূন?

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: ট্যাংরার দে পরিবারের হত্যালীলায় কেঁপে উঠেছে সমাজ! ধীরে ধীরে পুলিশি জেরায় উঠে আসছে একের পর এক তথ্য। ইএম বাইপাসে মেট্রো পিলারে ধাক্কা মারার আগে কেন আড়াই ঘণ্টা ধরে গাড়িতে ঘুরেছে দে পরিবারের দুই ভাই ও নাবালক ভাইপো? ছোট ভাই প্রসূন দে-র বয়ান থেকে জানা গিয়েছে, তিন মহিলা সদস্যকে খুনের পর দে বাড়ির দুই ভাই এবং বড় ভাই প্রণয়ের কিশোর ছেলে একজোট হয়েই আত্মঘাতী হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। ভাইপোকে বিষ খাইয়ে, হাতের শিরা কেটে এবং মুখে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করার চেষ্টা করেছিল প্রসূন। তবে সফল হননি। ভাইপোকে সে বোঝাতে পেরেছিল, বেঁচে থাকার আর কোনও উপায় নেই। ১৪ বছরের কিশোর তাতে সম্মতিও দিয়েছিল বলে দাবি করেছেন প্রণয় ও প্রসূন। রাত একটায় গাড়ি দুর্ঘটনা ঘটিয়ে আত্মহ্যাত পরিকল্পনা নিয়ে শীল লেনের বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েছিলেন তিনজনে।
তদন্তকারীদের প্রসূন জানিয়েছেন, নিজেদের শেষ করার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেছিলেন তারা। কিন্তু পথে অন্য গাড়িতে ধাক্কা মেরে নিরীহ কাউকে মারতে চাননি। তাই বাইপাসে মেট্রো রেলের পিলারে সজোরে ধাক্কা মেরেছিলেন। এয়ারব্যাগ খুলে যাওয়ায়, সেই চেষ্টাও ব্যর্থ হয়। দে বাড়ির ছোট ছেলে আরও জানান, “কোনদিকে যাব, বের হওয়ার পর তা নিয়ে দাদার সঙ্গে কিছুটা ঝামেলা হয়। ও (দাদা) চাইছিল, ডানকুনির দিকে যেতে। ওই এলাকাটা ফাঁকা। আমি বলি, মুম্বই রোড ধরে উলুবেড়িয়া। প্রথমে ঠিক হয়েছিল, কোনও ছোট গাড়ির পিছনে গিয়ে সজোরে ধাক্কা মারব। পরে মত পাল্টাই। আমাদের বড় গাড়ি, কোনও ছোট গাড়িতে ধাক্কা মারলে আরোহীরা সবাই মারা যাবেন। তাদের তো কোনও অন্যায় নেই। তারপর ঠিক করি, কোনও ট্রাকের পিছনে ধাক্কা মারব। কিন্তু সেক্ষেত্রেও ট্রাক চালকের প্রাণহানির আশঙ্কায় পরিকল্পনা বাতিল করি।”
নিজের স্ত্রী, কন্যা ও বউদিকে খুন করার দায় নিজের কাঁধেই নিয়েছেন প্রসূন। গোটা ঘটনারই পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ দিয়েছেন। প্রসূন জানিয়েছেন, “গাড়ির পিছনে ধাক্কা মারার পরিকল্পনা বাতিল করার পর সবাই ঠিক করেছিলাম, দ্রুতগতিতে চালিয়ে কোনও কংক্রিটের পিলারে আঘাত করব। তাই নিউটাউনে যাই। সেখানে পুলিশ দেখে ঘাবড়ে গিয়ে চলে আসি বাইপাসে। জানতাম, রুবি পেরিয়ে রাস্তার মাঝেই কয়েকটি কংক্রিটের শক্তপোক্ত পিলার রয়েছে। সেখানে পুলিশের কেউ ছিল না। সবাই মন শক্ত করেছিলাম। চোখ বন্ধ করে সোজা গিয়ে কালিকাপুরের কাছে মেট্রো পিলারে ধাক্কা মারি। পুলিশ যখন আসে, তখন প্রথমেই বলেছিলাম, ট্যাংরার শীল পাড়ার বাড়িতে আরও তিনটি বডি পড়ে রয়েছে!”