অভিযান চালাচ্ছে পাক নিরাপত্তা বাহিনী, বালুচিস্তানে অপহৃত ট্রেন থেকে উদ্ধার অন্তত ১৫৫ পণবন্দি, হত ২৭ জন বিদ্রোহী

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: শ’পাঁচেক যাত্রী নিয়ে পাকিস্তানের কোয়েট্টা থেকে রওনা দিয়েছিল জাফর এক্সপ্রেস। গন্তব্য ১৬০০ কিমি দূরের শহর, পেশোয়ার। কিন্তু সেখানে পৌঁছনোর আগেই থমকাল ট্রেনের চাকা। সকলকে হতভম্ব করে যাত্রী সহ আস্ত ট্রেন হাইজ্যাক (Pakistan Train Hijacked) করল বালোচ বিদ্রোহীরা! স্বাধীন বালুচিস্তানের জন্য দীর্ঘদিন ধরে তারা লড়াই করছে। কিন্তু মঙ্গলবার একেবারে সিনেমার কায়দায় এই কাণ্ড ঘটিয়েছে বালোচ লিবারেশন আর্মি (বিএলএ)। তাদের কাছে খবর ছিল, ওই ট্রেনে যাচ্ছে পাকিস্তানি সেনা, পুলিস, অ্যান্টি টেররিজম ফোর্স ও পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের প্রায় ২০০ সদস্য। তাদেরকেই মূল টার্গেট করা হয়।
প্রথমে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে উড়িয়ে দেওয়া হয় রেললাইন। তারপর একটি টানেল থেকে ট্রেনটি বেরতেই বিদ্রোহীরা চারদিক থেকে গুলি চালায়। ব্রেক কষতে বাধ্য হন লোকোপাইলট। ততক্ষণে ট্রেনটিকে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলেছে বালোচ গেরিলারা। পাল্টা গুলি চালাতে শুরু করে ট্রেনে থাকা পাকিস্তানি সেনার সদস্যরাও। কিন্তু তাতে লাভ হয়নি। উল্টে বিদ্রোহীদের গুলিতে প্রাণ গিয়েছে ৩০ জন পাক সেনার। যদিও সংখ্যাটা প্রায় দেড়শো বলেই দাবি বিএলএ-র।
রাতভর চলল পাক সেনার উদ্ধার অভিযান। বহু ক্ষণের চেষ্টায় অপহৃত জাফর এক্সপ্রেস থেকে থেকে উদ্ধার করা হয়েছে অন্তত ১৫৫ জন যাত্রীকে। পাক সেনা সূত্রে তেমনই দাবি করা হয়েছে। তাদের আরও দাবি, এই অভিযানে এখনও পর্যন্ত অন্তত ২৭ জন বালুচ বিদ্রোহী নিহত হয়েছেন।
পাক রেল সূত্রে জানানো হয়েছে, অপহৃত জাফর এক্সপ্রেস থেকে উদ্ধার হওয়া ৫৭ যাত্রীকে বুধবার ভোরে বালুচিস্তানের রাজধানী কোয়েটায় পাঠানো হয়েছে। বাকি ২৩ জনকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে মাচে। আর আহত ১৭ জন যাত্রীকে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য নিকটবর্তী হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত উদ্ধার হওয়া যাত্রীদের মধ্যে অন্তত ৬০ জন পুরুষ। রয়েছেন ৩১ জন মহিলা এবং ১৫ জন শিশুও। পাক সেনা সূত্রে আরও জানানো হয়েছে, বাকি পণবন্দিদের উদ্ধারের জন্য এখনও উদ্ধার অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে নিরাপত্তাবাহিনী।