Breaking প্রয়াত রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী রেজ্জাক মোল্লা

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ের বাঁকড়ি গ্রামে নিজের বাড়িতেই মৃত্যু হয় তাঁর। দীর্ঘ রোগভোগের পর শুক্রবার সকালে প্রয়াত রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী আব্দুর রেজ্জাক মোল্লা।
ভাঙড়ের বাকড়ি গ্রামে নিজের বাড়িতেই শুক্রবার সকালে জীবনাবসান হল রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী রেজ্জাক মোল্লার। বয়স হয়েছিল ৮০ বছর। বার্ধক্যজনিত অসুখে ভুগছিলেন দীর্ঘদিন ধরেই। সক্রিয় রাজনীতি থেকেও দূরেই ছিলেন। অবশেষে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করলেন। ‘চাষার ব্যাটা’র মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ রাজনৈতিক মহল। পরিবার সূত্রে খবর, পৈতৃক ভিটেতেই তাঁর দেহ সমাধিস্থ করা হবে। গত চার-পাঁচ বছর ধরে ওই বাড়িতেই থাকছিলেন তিনি।
জ্যোতি বসু, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়— রাজ্যে পর পর তিন আমলেরই মন্ত্রী ছিলেন তিনি। রাজনৈতিক মঞ্চে রেজ্জাক মোল্লার আবির্ভাব হয়েছিল ১৯৭৭ সালে, বামফ্রন্টের উত্থানের সময়। ক্যানিং পূর্ব কেন্দ্র থেকে নির্বাচিত হয়ে যাত্রা শুরু করেন রেজ্জাক মোল্লা। টানা ২০১১ সাল পর্যন্ত ওই একই কেন্দ্রের বিধায়ক হিসেবে বহাল ছিলেন তিনি। রাজ্যে বামফ্রন্ট সরকারের পতনের সময়েও এই আসনটি তাঁর দখলেই ছিল—বামেরা একের পর এক আসন হারালেও, রেজ্জাকের গড় অটুট ছিল।
দীর্ঘ রাজনৈতিক কেরিয়ারে তিনি রাজ্য মন্ত্রিসভায় ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দপ্তরের দায়িত্বও সামলেছেন। তবে ২০১৪ সালে এক নাটকীয় মোড় নেয় তাঁর রাজনৈতিক পথচলা। সিপিএম রাজ্য কমিটি তাঁকে দলবিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগে বহিষ্কার করে। দলচ্যুত হওয়ার পরে তিনি নিজেই একটি নতুন রাজনৈতিক দল তৈরি করেন—‘ভারতীয় ন্যায়বিচার পার্টি’। নিজেকে পরিচয় দেন ‘চাষার ব্যাটা’ বলে।
তবে খুব বেশিদিন নিজের দল নিয়ে এগোননি রেজ্জাক। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ২০১৬ সালে তৃণমূলে যোগ দেন এবং ভাঙড় কেন্দ্র থেকে দলের টিকিটে বিধায়ক নির্বাচিত হন। সেই সরকারের আমলে খাদ্য ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ দফতরের দায়িত্বও পান।
রেজ্জাকের প্রয়াণে নিজের এক্স হ্যান্ডলে শোক প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি লিখেছেন, ‘‘আমার সহকর্মী, আব্দুর রেজ্জাক মোল্লার প্রয়াণে আমি শোকাহত ও মর্মাহত। তিনি রাজ্য মন্ত্রিসভায় আমার সহকর্মী ছিলেন। তাঁকে আমি শ্রদ্ধা করতাম, সম্মান করতাম। বাংলার গ্রামজীবন, কৃষি-অর্থনীতি ও ভূমি-সংস্কার বিষয়ে তাঁর জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা ছিল সুবিদিত। তাই এক সময় অন্য ধারার রাজনীতি করলেও, মা-মাটি-মানুষের সরকারে তাঁর মিলিত হয়ে যাওয়া ছিল সহজ ও স্বাভাবিক। তাঁর প্রয়াণে বাংলার রাজনৈতিক জীবনে অপূরণীয় শূন্যতার সৃষ্টি হল। আমি তাঁর পরিবারবর্গ, অসংখ্য অনুগামী ও শুভানুধ্যায়ীকে আমার আন্তরিক সমবেদনা জানাই।’’ প্রাক্তন সহকর্মী রেজ্জাকের মৃত্যুর খবর পেয়ে তাঁর বাড়ি যাচ্ছেন সিপিএম নেতা কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়।