হচ্ছে টা কী? বিভাগে ফিরে যান

দেশের নিরাপত্তার সঙ্গে আপোষ করে সীমান্তে নিয়ম বদলে ‘বন্ধু’ আদানিকে জমি উপহার মোদী সরকারের?

April 28, 2025 | 2 min read

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার পর প্রশ্ন চিহ্নের মুখে দেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। নিশিকান্ত দুবের বিবাহবার্ষিকীর জন্য কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকলেও, করদাতা ভারতীয় পর্যটকদের জন্য কোনও নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল না হামলার দিন। এখানেই প্রশ্ন উঠছে, মোদীর ভারতে কি আম জনতার প্রাণের কোনও মূল্য নেই? বিজেপি আর তার বন্ধু কর্পোরেট ও ব্যবসায়ীদের সুরক্ষা দিতেই ব্যস্ত কেন্দ্র সরকার?

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশ্যে এসেছিল বিস্ফোরক তথ্য। নিয়ম বহির্ভূতভাবে ভারত-পাক সীমান্তের কাছে শিল্পপতি গৌতম আদানিকে জমি পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, সৌর ও বায়ু বিদ্যুৎ তৈরির প্রকল্পের জন্য সীমান্ত লাগোয়া অঞ্চলে আদানি গোষ্ঠীকে জমি দেওয়া হয়। সশস্ত্র বাহিনীর উদ্বেগ উপেক্ষা করে কীভাবে স্পর্শকাতর এলাকায় জমি আদানিগোষ্ঠীকে দেওয়া হল? তাই নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।

কৌশলে ‘প্রিয় বন্ধু’ আদানিকে পাকিস্তান সীমান্তে মূল্যবান জমি উপহার দেন মোদী। সীমান্তের নিয়ম শিথিল করা হয় সেনাকর্তাদের নিষেধ উপেক্ষা করে। বিজেপির ছদ্ম-জাতীয়তাবাদের মুখোশ খসে পড়ে। সুর চড়ান দেশের বিরোধীরা। উত্তাল হয় সংসদ। উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক সীমান্ত সংলগ্ন এলাকা সরকারি নিয়ন্ত্রণে থাকাই নিয়ম।

আদানি গোষ্ঠীকে জমি দেওয়ার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে এক বিদেশি সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদনে। প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, গুজরাতের কচ্ছে পাকিস্তান সীমান্ত থেকে এক থেকে দুই কিলোমিটারের মধ্যে সৌর ও বায়ু বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য আদানি গোষ্ঠী ৪৪৫ বর্গ কিলোমিটার জমি পেয়েছে। আরও অভিযোগ, সৌর ও বায়ু বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা সোলার এনার্জি কর্পোরেশনকে ওই জমি বরাদ্দ করা হয়েছিল। বরাদ্দ করেছিল বিজেপি শাসিত গুজরাত সরকার। যেহেতু এলাকাটি সংবেদনশীল তাই ওই সীমান্ত সুরক্ষা সংক্রান্ত কিছু নিয়মও বদল করা হয়। সীমান্ত থেকে ১০ কিলোমিটারের মধ্যে কোনও বড় নির্মাণের বা প্রকল্পের অনুমতি দেয় না কেন্দ্র। ২০২৩ সালে গুজরাত সরকার কেন্দ্রীয় সরকারকে চিঠি লিখে সীমান্ত সংক্রান্ত নিয়মে কিছু ছাড় দেওয়ার অনুরোধ জানায়। সে বছরের মে মাসে কেন্দ্র সরকার সমস্ত রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিতে সীমান্ত থেকে ১-২ কিলোমিটার দূরে টারবাইন স্থাপনের অনুমতি দেয়। পাশাপাশি সীমান্তের ২ কিলোমিটার থেকে ৮ কিলোমিটারের মধ্যে হাইব্রিড পুনর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানি প্ল্যান্ট স্থাপনেরও অনুমতি দেয়। কিন্তু, পরে সোলার এনার্জি কর্পোরেশন গুজরাত সরকারকে জমি ফিরিয়ে দেয়। অভিযোগ ওঠে, কেন্দ্রের নির্দেশেই সেই জমি ফিরিয়ে দেওয়া হয়। সেই জমিই পরে আদানি গোষ্ঠীর হাতে তুলে দেওয়া হয়।

মোদীর ঘনিষ্ঠ ‘বন্ধু’ বলে পরিচিত গৌতম আদানি। দীর্ঘদিন ধরে তাঁকে নানা ধরনের সুযোগ-সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে। আদানির পুনর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানি পার্ক তৈরির জন্য সীমান্ত সুরক্ষা সংক্রান্ত নিয়ম শিথিল করেছে কেন্দ্র সরকার। মোদী সরকারের পদক্ষেপ জাতীয় নিরাপত্তাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে।সীমান্তের কাছে সংবেদনশীল এলাকা হওয়া সত্ত্বেও আদানির প্রকল্পের জন্য নিরাপত্তা বিধি শিথিল করার অর্থ দেশ ও দেশবাসীর সুরক্ষার সঙ্গে আপোষ করা।

এই বিষয়টি নিয়ে আলোকপাত করেছে বিলেতের অন্যতম জনপ্রিয় দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Border, #security, #Gautam Adani, #ports, #Narendra Modi, #NDA

আরো দেখুন