মাওবাদী আতঙ্ক নেই, বিভিন্ন জেলা থেকে পুলিস অফিসার ও কর্মীরা জঙ্গলমহলে ফিরতে চাইছেন

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: ২০০৮-’১১ সালের সেই জঙ্গলমহলের সঙ্গে আজকের জঙ্গলমহলের বিস্তর ফারাক। এখন আর মাওবাদী আতঙ্ক নেই। রাজ্যের আর পাঁচটা থানার সঙ্গে লালগড়, বেলপাহাড়ি, গোয়ালতোড়, সারেঙ্গা কিংবা বারিকুলের কোনও তফাৎ নেই। কিন্তু, জঙ্গলমহল এলাকায় কর্মরত পুলিস অফিসার ও কর্মীদের জন্য ২০১০ সালে চালু হওয়া ‘রিস্ক অ্যালাউন্স’ আজও বহাল। গত ১৫বছর ধরে কনস্টেবল থেকে অফিসার, সব পুলিসকর্মীরা বেসিকের ১৮শতাংশ ‘রিস্ক অ্যালাউন্স’ পাচ্ছেন। মাওবাদী ‘মুক্ত’ হওয়ার পরও বর্ধিত এই বেতনের সুযোগ নিতে পূর্ব মেদিনীপুর, হাওড়া সহ বিভিন্ন জেলা থেকে পুলিস অফিসার ও কর্মীরা জঙ্গলমহলে ফিরতে চাইছেন।
গত ১৬ মার্চ থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত অনলাইনে ‘বদলিতে ইচ্ছুক’ পুলিস অফিসার ও কর্মীদের আবেদন নেওয়া হয়েছে। তাতে জঙ্গলমহলে পুলিস অফিসার ও কর্মীদের ফিরে যাওয়ার আবেদন সবচেয়ে বেশি। ২০১০ সাল থেকে পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া ও পুরুলিয়ার জঙ্গলমহল এলাকার থানাগুলিতে কর্মরত পুলিস অফিসার ও কর্মীরা বেসিকের ১৮ শতাংশ বিশেষ ভাতা পান। মাওবাদী অধ্যুষিত ওইসব এলাকায় প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে ডিউটি করতে হয়। সেজন্য তাঁদের রিস্ক অ্যালাউন্স দেওয়া হয়। ঝাড়গ্রাম জেলার সবক’টি থানা ও পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া এবং পুরুলিয়ার জঙ্গলমহলের ১৬টি থানার পুলিস অফিসার ও কর্মীরা ওই বিশেষ ভাতা পান। পুলিস লাইনে কর্মরত রিজার্ভ ইন্সপেক্টর থেকে বাকি পুলিস অফিসার ও কর্মীদের ওই সুবিধা দেওয়া হয়।
কিষেণজির মৃত্যুর পর ২০১২-’১৩ সাল থেকে একেবারে স্বাভাবিক জঙ্গলমহল। রাস্তাঘাট থেকে পানীয় জল, বাড়ি বাড়ি সরকারি পরিষেবা পৌঁছনোয় মানুষের অভাব-অভিযোগ দূর হয়েছে। ৩১ মার্চ কেন্দ্রের পক্ষ থেকে জঙ্গলমহলকে মাওবাদী মুক্ত বলে ঘোষণা করা হয়েছে। মাওবাদী আতঙ্ক না থাকলেও ১৫বছর ধরে চালু রয়েছে ‘রিস্ক অ্যালাউন্স’। রিস্ক অ্যালাউন্স পাওয়া একজন সাব-ইন্সপেক্টর একই ব্যাচের পূর্ব মেদিনীপুর কিংবা হাওড়ার কোনও অফিসারের তুলনায় প্রায় ১০হাজার টাকা বেশি পান। একইভাবে একজন কনস্টেবল প্রায় সাত হাজার টাকা বেশি পান।