দীঘায় পর্যটনের স্বার্থে পদক্ষেপ করুক রেল, জোরালো হচ্ছে দাবি

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: দীঘায় জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধনের আবহে বিশেষ ট্রেন বাতিল করেছে দক্ষিণ-পূর্ব রেল। এবার পর্যটকদের দাবি, রেলপথে সহজে দীঘা পৌঁছনোর জন্য মানুষের স্বার্থে পদক্ষেপ করুক রেল। অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে পাঁশকুড়া-দীঘা রেল লাইন নিয়ে রেল কর্তৃপক্ষ উদাসীন। ২০১৯ সাল থেকে এই লাইনে ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানো হয়নি। প্রতি বছর কয়েক লক্ষ পর্যটক সংখ্যা বাড়ছে। মনে করা হচ্ছে, জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধনের পর দীঘায় আসা পর্যটকদের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাবে। পর্যটক, হোটেল মালিক এবং দীঘার ব্যবসায়ীরা বলছেন; পর্যটক ও জগন্নাথ ভক্তদের কথা মাথায় রেখে ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা উচিত রেলের। দীঘা-শঙ্করপুর হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক বিপ্রদাস চক্রবর্তী বলেন, দীঘা আসা যাওয়ার জন্য রেলের পরিষেবা আরও উন্নত হওয়া প্রয়োজন। এনিয়ে বহুবার দাবি জানানো হয়েছে।
তমলুক থেকে দীঘা সিঙ্গল লাইন, নন্দকুমার, দেশপ্রাণ, কাঁথি ও রামনগর স্টেশনে একটি ট্রেন দাঁড় করিয়ে অপর ট্রেন পার করানো হয়। ২০১৭ ও ২০২৪ সালে পরপর দু’বার আশাপূর্ণা, নাচিন্দা এবং লবণ সত্যাগ্রহ তিনটি হল্ট স্টেশনকে পূর্ণ স্টেশন হিসেবে চালু করার জন্য সমীক্ষা হয়েছে। কিন্তু পরিকল্পনার বাস্তবায়ন হয়নি। তিনটি হল্ট স্টেশনকে পূর্ণ স্টেশন করা হলে, সেক্ষেত্রে বেশি জায়গায় ট্রেন ক্রসিংয়ের সুযোগ হত। ট্রেন সংখ্যাও বাড়ানো যেত।
২০০৩ সালে তমলুক থেকে কাঁথি লাইনে ট্রেন চলাচল শুরু হয়। তখন ডিজেল ইঞ্জিন চলাচল করত। ২০০৪ সালে দীঘা পর্যন্ত ট্রেনের চাকা গড়ায়। মেচেদা থেকে দীঘা ডিজেল ইঞ্জিন চলাচল শুরু হয়। সাঁতরাগাছি থেকে আটটি কামরার ডিজেল ইঞ্জিন চলত। রবিবার ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকত। ২০০৯-১০ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকাকালীন বিদ্যুতায়নের কাজ হয়। ২০১১ সালে দীঘা-সাঁতরাগাছি ইএমইউ লোকাল চালু হয়। পাঁশকুড়া থেকে দীঘা ট্রেন পরিষেবা চালু হয়। ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ওই লাইনে চারটি লোকাল শুরু হয়। এছাড়া দৈনিক, তাম্রলিপ্ত এক্সপ্রেস এবং কাণ্ডারী এক্সপ্রেস চলাচল করে। কিন্তু, সিঙ্গেল লাইন হওয়ার কারণে নির্ধারিত সময়ের চেয়ে দেরিতে ট্রেন চলাচল করে। ফলে পর্যটকরা বাধ্য হয়ে বাসের উপর নির্ভর করেন।
অন্যদিকে, তমলুক থেকে দীঘা পর্যন্ত মোট আটটি হল্ট স্টেশন রয়েছে। ওইসব স্টেশনে কোনও পানীয় জলের ব্যবস্থা বা শৌচালয় নেই। তিনটি হল্ট স্টেশন আশাপূর্ণা, নাচিন্দা লবণ সত্যাগ্রহ স্মারককে পূর্ণ স্টেশন করার জন্য ২০১৭ সালে জয়েন্ট ইন্সপেকশন হয়। ২০২৪ সালে ফের লোকসভা ভোটের আগে ইন্সপেকশন হয়। কিন্তু কাজ হয়নি। স্থানীয়স্তরে দাবি উঠছে, পাঁশকুড়া থেকে দীঘা যাওয়ার ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানো হোক। সময় মতো ট্রেন চালানোর দিকে রেল নজর দিক।