১৫ দিনে নানা রূপে ধরা দেন জয়নগরের ধন্বন্তরি মা

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: ১৫ দিন ধরে না না রূপে ধরা দেবেন মা কালী। জয়নগর মজিলপুরের বহু প্রাচীন ধন্বন্তরী কালীমায়ের এক পক্ষকাল ব্যাপী রূপ পরিবর্তনের মেলা চলছে। যা দক্ষিন ২৪ পরগনার মধ্যে দীর্ঘ দিন ধরে চলা ও জনপ্রিয় একটি ধর্মীয় মেলা। জয়নগরের ধন্বন্তরি কালী প্রায় ৪০০ বছরের প্রাচীন। এখন বেশের মেলার সময়। এক পক্ষ ধরে রূপ পরিবর্তন উৎসব চলবে। সোমবার থেকে শুরু মেলা। কালীর এই রূপ দেখতে আসেন দূর দুরান্তের মানুষ। ইতিমধ্যেই মন্দিরের সামনের রাস্তায় দোকান সাজিয়ে বসে গিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
মন্দির সূত্রে খবর, সোমবার প্রতিপদে কালীর ভুবনেশ্বরী রূপ দেখা যাবে। তারপর একে একে বিপত্তারিণী, কমলেকামিনী, গণেশজননী, কৃষ্ণকালী, বারাহী, নরসিংহী, দেবীচণ্ডিকা, জগদ্ধাত্রী, জাহ্নবী, অন্নপূর্ণা, কালীয়দমন, ইন্দ্রী, দক্ষিণাকালী ও ষোড়শী রূপ প্রকট হবে। ষোড়শী থাকে তিনদিন। ইতিহাস অনুযায়ী, রাজা প্রতাপাদিত্যের সঙ্গে সম্রাট জাহাঙ্গিরের বিরোধ শুরু হয়েছিল। প্রতাপাদিত্যকে বন্দি করেছিলেন সম্রাট। বন্দি অবস্থায় রাজার মৃত্যু হয়। প্রতাপাদিত্যর বন্ধু ছিলেন শঙ্কর চক্রবর্তী নামে এক ব্রাহ্মণ। রাজার মৃত্যুর পর তিনি বংশরক্ষায় পরিবারের সবাইকে দক্ষিণ যশোরে পাঠিয়ে দেন। আজকে যে জায়গাটির নাম জয়নগর। সেই অঞ্চলটি ছিল দক্ষিণ যশোহরের অন্তর্গত।
সে সময় এলাকাজুড়ে জঙ্গল। বাঘ ও নানা ধরনের হিংস্র জন্তুতে ভরা। জনশ্রুতি আছে, তান্ত্রিক ভৈরবানন্দ সেখানে কঠোর তপস্যা করছিলেন। বর্তমানে যেখানে রয়েছে মন্দির, চক্রবর্তীদের এক পূর্বপুরুষ রাজেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী ভৈরবানন্দের সন্ধান পেয়ে নেতড়া থেকে এসে পৌঁছন সেখানে। দু’জনের সাক্ষাৎ হয়। রাজেন্দ্রনাথ তাঁর শিষ্য হয়ে যান। ভৈরবানন্দ তাঁকে বলেছিলেন, ‘আমি স্বপ্নাদেশ থেকে জেনেছি আদি গঙ্গায় মা রয়েছেন।’ তারপর বুদ্ধ পূর্ণিমার দিন আদি গঙ্গা থেকে কালীর কষ্টিপাথরের মূর্তি তুলে এনে পর্ণকুটিরে প্রতিষ্ঠা করা হয়। ভৈরবানন্দ পুজোর দায়িত্ব রাজেন্দ্রনাথকে দিয়ে অন্যত্র চলে যান। তারপর বংশ পরম্পরায় চক্রবর্তীরা জয়নগরের পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডে ধন্বন্তরি কালী মন্দিরে পুজো করছেন। কালীকে আরাধ্যা দেবী বলে সাধনা করেছিলেন সাধক ভৈরবানন্দ। তাই মায়ের নাম ধন্বন্তরি।