হচ্ছে টা কী? বিভাগে ফিরে যান

সুতি, ধুলিয়ান, সামশেরগঞ্জে অশান্তির নেপথ্যে বহিরাগতদের হাত?

May 3, 2025 | 2 min read

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: ধীরে ধীরে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরেছে নবাবের জেলা। ওয়াকফ আন্দোলনকে ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল মুর্শিদাবাদের সুতি, ধুলিয়ান তথা সামশেরগঞ্জ। ঘটনায় মৃত্যু হয় ৩ জনের। অশান্তির ঘটনায় বহিরাগতদের ভূমিকা নিয়ে উঠেছে গুরুতর অভিযোগ।

স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, হামলাকারীরা বাইরের লোক, যাদের বেশিরভাগের বয়স ১৪ থেকে ১৮ বছরের মধ্যে। তাদের কারও কারও পরনে ছিল বিএসএফের পোশাক। কিন্তু পায়ে ছিল সাধারণ জুতো, যা সন্দেহ আরও বাড়িয়ে তুলেছে। বাংলার শাসক দলের দাবি, মুর্শিদাবাদের ঘটনা বিজেপির সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলে বসেন, বাংলাদেশের ধাঁচে লুঠ হয়েছে। যার প্রেক্ষিতে তৃণমূলের প্রশ্ন, সীমান্ত পেরিয়ে দুষ্কৃতীরা এলে বিএসএফ কী করছিল? সীমান্তরক্ষার দায়িত্ব তো বিএসএফ, তবে এই গাফিলতির দায় কার?

ক্রমে বহিরাগত তত্ব আরও জোরালো হচ্ছে। হামলাকারীরা বাংলাদেশ থেকে এসেছিল? নাকি বিএসএফের পোশাকে সাধারণ জুতো পরা দুষ্কৃতীরা তান্ডব চালিয়েছে? প্রশ্ন উঠছে একাধিক। তদন্ত করছে প্রশাসন। অন্যদিকে, কলকাতায় ইমাম-মুয়াজ্জিনদের সভা থেকে বিএসএফের ভূমিকা নিয়ে কেন্দ্রকে তোপ দেগেছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিএসএফ কীভাবে কাজ করছে, তা খতিয়ে দেখতে তদন্ত করে দেখা হবে বলেও জানা তিনি।

বাংলার এক দৈনিকপত্রিকা আপনজনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিএসএফের অতিসক্রিয়তায় এলাকায় অশান্তির মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে কাঁদানে গ্যাস শুধু নয়, গুলিও চালাতে হয়। স্থানীয় মানুষজন অভিযোগ করেন, ওয়াকফ বিরোধী আন্দোলন থামাতে বিএসএফের টার্গেট হয়ে পড়ে মুসলমানরা। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, বিএসএফ গুলি চালানোয় একে একে গুলিবিদ্ধ হয় গোলাম মহিউদ্দিন সেখ, হাসান সেখ, মোসারফ হোসেন সহ প্রায় ১৬জন। মৃত্যু হয় শুধু মোসারফের। এতে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত করে তোলে। বিএসএফের বিরুদ্ধে অভিযোগ, বেপরোয়াভাবে তারা বাড়িতে ঢুকে ভাঙচুর করে। রেহাই দেয়নি শিশু ও মহিলাদেরও।

ধুলিয়ান পুরসভার হিজলতলা এলাকায় বিএসএফ রীতিমতো তাণ্ডব চালায় বলে অভিযোগ। হিজলতলার বাসিন্দা গৃহবধূ পলি খাতুন এক সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিকে জানান, বিএসএফ বাড়ির ভেতরে ঢুকে বাচ্চা-মহিলা কাউকে পরোয়া করেনি না, সবাইকে ধরে ধরে মেরেছে। তারা বিএসএফের পোশাক পরে ছিল, কিন্তু পায়ে হাওয়াই চপ্পল।

আরও অভিযোগ, কাঞ্চনতলার বাসিন্দা প্রতিবন্ধী যুবক আসমাউল হক বিএসএফের বাড়িতে ঢোকার প্রতিবাদ করলে বাড়ি ভাঙচুর করা হয়। বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। কাঞ্চনতলার বাসিন্দা আরেক বাসিন্দা টিনা খাতুনের অভিযোগ, বিএসএফ তাঁদের বাড়িতে ঢুকে আলমারি ভেঙে সব নিয়ে গিয়েছে। তাঁর স্বামী প্রতিবাদ করতে তাঁকে মিথ্যা অভিযোগে তুলে নিয়ে গিয়েছে। অনেক পরিবারের বিএসএফের অত্যাচারে ঘরছাড়া এমন অভিযোগও উঠছে। মেয়েদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার, অশালীন আচরণের অভিযোগও উঠছে। হিন্দু বাসিন্দারাও বিএসএফের অত্যাচারের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ।

এখানেই প্রশ্ন উঠছে, কারা অশান্তি থামানোর নামে দু-আড়াই দিন ধরে তাণ্ডবলীলা চালালো? বিএসএফের ছদ্মবেশে কি ভিন রাজ্য বা পড়শি দেশ থেকে সন্ত্রাসীরা ঢুকে পড়েছিল? তা যদি সত্যি হয়, তবে দেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার গাফিলতিই মুর্শিদাবাদ অশান্তির অন্যতম কারণ হতে পারে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#outsider, #Amader Drishtibhongi, #Dhuliyan, #Murshidabad Violence, #Waqf Bill 2025, #bjp, #tmc, #Samserganj, #BSF, #Suti

আরো দেখুন