খাদ্যশস্য প্যাকেটজাত করতে পাটের ব্যাগকেই অগ্রাধিকার, তৃণমূলের দাবিই প্রতিধ্বনিত কলকাতা হাইকোর্টের রায়ে

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: সদ্য এক মামলার প্রেক্ষিতে কলকাতা উচ্চ আদালতের বিচারপতি অমৃতা সিনহা জানিয়েছেন, খাদ্যশস্য প্যাকেটজাত করার ক্ষেত্রে পাটের ব্যাগকেই অগ্রাধিকার দিতে হবে। অভিযোগ, চাহিদা থাকলেও জুট কমিশনার সময়মতো পাটের ব্যাগের বরাত দিচ্ছে না।
উল্লেখ্য, ১৯৮৭ সালের আইনে খাদ্যশস্য এবং চিনি প্যাকেজিংয়ের জন্য পাটের তৈরি ব্যাগকেই অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা। কিন্তু আইন না-মেনে খাদ্যশস্য এবং চিনি প্যাকেজিংয়ের জন্য প্লাস্টিকের ব্যাগ ব্যবহার করা হচ্ছে, এই অভিযোগে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল ভারতীয় জুট মিলস অ্যাসোসিয়েশন। মামলা দায়ের করেছিলেন আবু রিয়াজ জাফর। মামলায় অভিযোগ করা হয়, হরিয়ানা, তেলেঙ্গানা, মধ্যপ্রদেশ ও রাজস্থানের মতো রাজ্যে প্রচুর সংখ্যক জুট ব্যাগের চাহিদা থাকলেও সময়মতো জুট ব্যাগের বরাত দেওয়া হচ্ছে না।
এখন রবিশস্য পাকেটজাত করার সময়। পর্যাপ্ত সংখ্যক জুট ব্যাগ তৈরি হয়ে পড়ে রয়েছে। বরাত পেলে ১৫ দিনের মধ্যে তা সরবরাহ করা সম্ভব। কিন্তু মন্ত্রক নিষ্ক্রিয়। মামলাকারীর আইনজীবী অভ্রজিৎ মিত্রের দাবি, মন্ত্রকের ২০২৩ সালের নির্দেশ অনুযায়ী উৎপাদিত ফসলের ১০০ শতাংশ দেশে উৎপাদিত পাটের ব্যাগ দিয়ে প্যাকেটজাত করার কথা। প্রতি মাসে জুট মিলগুলিকে বরাত দেওয়ার কথা। কিন্তু জুট কমিশনার তা করছেন না। জুট কমিশনাররের আইনজীবী এই বক্তব্যের বিরোধিতা করে। তাদের দাবি, ফুড কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়া বরাত না দেওয়ায়, জুট মিলগুলিকে বরাত দেওয়া হয়নি।
সবপক্ষের বক্তব্য শোনার পর বিচারপতি সিনহা জানিয়েছেন, পাটের ব্যগকেই অগ্রাধিকার দিতে হবে। জুট কমিশনারকে উৎপাদিত জুট ব্যাগগুলি ব্যবহারের ব্যবস্থা করতে হবে। জুট ব্যাগের ব্যবহার নিয়ে অবস্থান জানিয়ে ১২ জুনের মধ্যে কমিশনারকে হলফনামা আকারে একটি রিপোর্টও জমা দিতে হবে।
১৮ জুন মামলার পরবর্তী শুনানি হবে।
প্রসঙ্গত, দীর্ঘদিন ধরেই রাজ্য সরকার ও বাংলার শাসক দল পাট শিল্পকে চাঙ্গা করতে উদ্যোগী। চলতি বছরের এপ্রিলে সংসদের বাণিজ্য বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটি বৈঠকে বসেছিল। তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ দোলা সেন এই কমিটির চেয়ারপার্সন। কমিটির বৈঠকে উঠে আসে বাংলার নানান সমস্যার কথা।
পাটের ব্যাগের সমস্যা নিয়েও আলোচনা হয়। উঠে আসে ফুড প্যাকেজিং আইন ১৯৮৭-র প্রসঙ্গও।
বিগত এক বছরে প্লাস্টিক ব্যাগের ব্যবহার বেড়েছে। চিনির ক্ষেত্রে মাত্র কুড়ি শতাংশ ক্ষেত্রে পাটের ব্যাগ(বস্তা) ব্যবহার করা হচ্ছে, অর্থাৎ ৮০% ক্ষেত্রে প্লাস্টিক ব্যাগ ব্যবহার করা হচ্ছে। যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। এতে পাট শিল্পের মৃত্যু ঘনিয়ে আসছে।