‘ভারতীয় গণতন্ত্রে সংবিধানই সর্বোচ্চ’, BJP সাংসদ নিশিকান্ত দুবেকে ভর্ৎসনা করে আর কী জানাল সুপ্রিম কোর্ট?

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: বিচারবিভাগীয় ব্যবস্থা বা সংসদ কোনওটিই নয়, ভারতীয় গণতন্ত্রে একমাত্র সংবিধানই সর্বোচ্চ আবারও একথা মনে করিয়ে দিল দেশের শীর্ষ আদালত। বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবেকে তীব্র ভর্ৎসনা করল সুপ্রিম কোর্ট। সাংসদের, আদালত এবং ভারতের প্রধান বিচারপতির সমালোচনা করে করা মন্তব্যের জন্য তাকে তিরস্কার করেছে শীর্ষ আদালত। এদিন তাঁর মন্তব্যকে ‘অত্যন্ত দায়িত্বজ্ঞানহীন’, ‘হাস্যকর’ এবং ‘অযৌক্তিক’ বলে অভিহিত করে সুপ্রিম কোর্ট।
বিজেপি সাংসদকে কটাক্ষ করলেও তাঁর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি আদালত। উল্লেখ্য, ওয়াকফ সংশোধনী আইনে সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপের বিরোধিতা করে বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে অভিযোগ করেছিলেন যে, ওয়াকফ সংশোধনী আইনকে কেন্দ্র করে ভারতে যে সাম্প্রদায়িক যুদ্ধ শুরু হয়েছে এর জন্য দায়ী প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না।সাংসদের এই মন্তব্যকে চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা হয়েছিল একটি জনস্বার্থ মামলা। মামলার শুনানিতে প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না এবং বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চের বক্তব্য, ‘‘গণতন্ত্রে আইনসভা, প্রশাসন এবং বিচারবিভাগ আলাদা আলাদা তিনটি শাখা। এই তিনটি শাখাই সাংবিধানিক পরিকাঠামোর মধ্যে কাজ করে। সব কিছুর উপরে সংবিধান। সংবিধানই এই তিনটি শাখার ক্ষমতাকে নিয়ন্ত্রণ করে। বিচারবিভাগকে পুনর্বিবেচনার ক্ষমতা সংবিধানই দিয়েছে। আইনের সাংবিধানিক বৈধতা খতিয়ে দেখার অধিকারও বিচারবিভাগকে দিয়েছে সংবিধান, সেখানে বিচারবিভাগীয় ব্যাখ্যার সুযোগও রয়েছে। সাংবিধানিক আদালত বিচারবিভাগীয় পুনর্বিবেচনার কাজ করলে তাও সংবিধানের আওতায় থেকেই করা হয়।’’
সুপ্রিম কোর্টের মতে, ‘‘এই মন্তব্য নিঃসন্দেহে সুপ্রিম কোর্টের কর্তৃত্বকে কলঙ্কিত এবং হ্রাস করার প্রবণতা রাখে…এবং বিচার প্রশাসনে হস্তক্ষেপ এবং বাধা দেওয়ার প্রবণতা তৈরি করবে। আমাদের বিশ্বাস, জনসাধারণ গণতন্ত্রের এই তিনটি শাখার পৃথক পৃথক কাজ ও ভূমিকার ব্যাপারে ওয়াকিবহাল। বিচারবিভাগের কী কাজ, সেটাও জনসাধারণ জানেন। তাঁরা বোঝেন, গণতন্ত্রের অন্যান্য শাখার কাজের মূল্যায়ন এবং সেই সব শাখা সংবিধান মেনে কাজ করছে কি না, তা খতিয়ে দেখার অধিকার বিচারবিভাগের রয়েছে।’’
পাশাপাশি যেকোনও বিলে সম্মতি বা অসম্মতি জানানোর ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি ও রাজ্যপালকে নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দিয়েছে শীর্ষ আদালত। বিভিন্ন রাজ্যের বিধানসভায় পাশ হওয়া বিল দীর্ঘদিন ধরে আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছিল রাজ্যপাল এবং রাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধে। এরপরই উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড় অভিযোগ তোলেন, বিচারবিভাগ ‘সুপার পার্লামেন্টে’র মতো আচরণ করতে শুরু করেছে। তা থেকেই বিতর্কের সূত্রপাত হয়। ধনখড়ের দাবি ‘সংসদই সর্বোচ্চ। সংবিধান পার্লামেন্টের উপর কাউকে কর্তৃত্ব করার ক্ষমতা দেয়নি।’