খবরের কাগজে নিয়োগের Advertisement দিয়ে রাজ্যে সক্রিয় প্রতারণা চক্র

নিউজ ডেস্ক,দৃষ্টিভঙ্গি: বেসরকারি ব্যাঙ্ক থেকে শুরু করে বিমানবন্দর, মেট্রো রেল প্রভৃত্তি জায়গায় চুক্তিভিত্তিক কর্মী নিয়োগের বিজ্ঞাপন দিয়ে রাজ্যে সক্রিয় প্রতারণা চক্র। বিজ্ঞাপনে দেওয়া নম্বরে ফোন করলেই নানা প্রলোভন। ইতিমধ্যেই তা নিয়ে সতর্ক করেছে রাজ্য ও কলকাতা পুলিস। অনুসন্ধানে নামছেন গোয়েন্দারা।
সূত্রের খবর, মধ্য কলকাতার বাসিন্দা সুনীল হালদার (নাম পরিবর্তিত)। সম্প্রতি রাজ্যের প্রথম সারির দৈনিক সংবাদপত্রে একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কে চুক্তিভিত্তিক কর্মী হিসেবে নিয়োগের বিজ্ঞাপন দেখেন। সেখানেই দেওয়া রয়েছে বেতনের স্ল্যাব— ‘১৮ হাজার থেকে ৩৬ হাজার পর্যন্ত। যোগ্যতা অনুসারে বেতন।’ নীচে দেওয়া ফোন নম্বরে যোগাযোগ করেন সুনীলবাবু। ওই কাগজেই প্রকাশিত বিমানবন্দরে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের আরও একটি বিজ্ঞাপনেও যোগাযোগ করেন তিনি।
দু’টি জায়গা থেকেই তাঁকে ফোন করা হয়। তাঁর যাবতীয় শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রমাণস্বরূপ নথি পাঠাতে বলা হয়। তা পাঠানোর ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই একটি ফোন আসে তাঁর কাছে। কলারের নামে লেখা সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কের নাম। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই অন্য একটি নম্বর থেকে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ পরিচয় দিয়েও যোগাযোগ করা হয় তাঁর সঙ্গে। এরপরেই আবেদনকারীকে বলা হয়, আপনার বায়োডেটা কোম্পানি গ্রহণ করেছে। ব্যাঙ্কের চাকরির ক্ষেত্রে আবেদন ফর্মের জন্য প্রাথমিকভাবে ২২০ টাকা জমা করতে বলা হয়। অন্যদিকে, বিমানবন্দরে চাকরির জন্য জমা করতে বলা হয় ২৫০ টাকা।
এখনও পর্যন্ত সবটা ঠিকই ছিল। আবেদনের জন্য অনেকক্ষেত্রে ফর্মের টাকা নিয়ে থাকে বেসরকারি সংস্থা। কিন্তু, খটকা লাগে এর পরবর্তী ধাপে এসে। ব্যাঙ্ক ও বিমানবন্দরের তরফে আলাদা আলাদাভাবে পেমেন্টর জন্য কিউ আর কোড পাঠানো হয় সুনীলবাবুকে। দু’টিতেই দেখা যায় রিসিভারের নাম একই— ‘মিঠুন বিশ্বাস’। এখানেই সন্দেহ হয় মধ্য কলকাতার ওই বাসিন্দার। কোম্পানির নামে নেওয়া টাকা কোনও ব্যক্তির অ্যাকাউন্টে যাবে কেন? তাও চাকরির তাড়নায় যথাক্রমে ২২০ ও ২৫০ টাকা পাঠান ওই ব্যক্তি। অপরদিক থেকে চলে আসে আবেদনপত্র। তা ভর্তি করে অনলাইনই পাঠিয়ে দেন প্রার্থী। এরপর দু’টি জায়গা থেকেই ফোন করে বলা হয়, চাকরি পাকা হয়ে গিয়েছে। ২ হাজার ৮৯০ টাকা দিলেই মেল করা হবে অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার। কিন্তু, তা মেলে নিতে রাজি হননি প্রার্থী। অফিসে গিয়ে নিজের হাতে অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার নেবেন— এই ইচ্ছা প্রকাশ করতেই নিজেদের বৈধতা প্রমাণে ব্যস্ত হয়ে ওঠে ব্যাঙ্ক ও বিমানবন্দর পরিচয় দেওয়া কর্তৃপক্ষ। পুলিসকে বিষয়টি জানিয়েছেন ওই ভুক্তোভুগী। প্রাথমিক তদন্তে পুলিস জেনেছে, গোটাটাই ভুয়ো।