ভুয়ো ভোটার, ভুয়ো খবর, লুকোনো জঙ্গি — প্রশাসনকে সচেতন করলেন মুখ্যমন্ত্রী

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৬:৪৭: আজ উত্তরবঙ্গের আট জেলা নিয়ে উত্তরকন্যা প্রেক্ষাগৃহে প্রশাসনিক বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈঠকে একাধিক বিষয়ে প্রশাসনিক কর্তাদের সচেতন করলেন তিনি। ভুয়ো ভোটার কার্ড এবং ভুতুড়ে ভোটার নিয়ে এদিন সোচ্চার হন মুখ্যমন্ত্রী।
এই বিষয়ে জেলাশাসকের সঙ্গে এই কাজে যুক্ত আধিকারিকদের তিনি সতর্ক করে বললেন, “ভোটার লিস্ট নিয়ে ডিএম-সহ সকলকে বলব, নিজেরা বসে কাজ দেখুন। সকলে খারাপ বলছি না, তবে সর্ষের মধ্যে ভূত আছে। এটা নজর দিতে হবে।”
এর পাশাপাশি আরও বেশ কিছু বিষয়ে সতর্ক করেন মুখ্যমন্ত্রী।
সীমান্ত সতর্কতা প্রসঙ্গে: সীমান্ত পেরিয়ে সন্দেহভাজন ব্যক্তিরা ঢুকছে বলে বিএসএফের পাশাপাশি রাজ্য পুলিশকেও এদিন সভায় সতর্ক থাকার কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী।তিনি বলেন, ‘আমি শুনছি, অনেক বাইরের লোক বিভিন্ন এলাকায় ঢুকছে। আমাদের সমর্থকদের কাছেও ফোন নম্বর, প্যান, একাধিক ডিটেলস নিয়ে চলে যাচ্ছে। পুলিশকে বলব, বি অ্যাল্যার্ট ! বাইরে থেকে কোনও জঙ্গি ঢুকে যেন শেল্টার নিতে না পারে। আগে পুলিশ টহল দিত। এখন ঘোরে না। সীমান্ত এলাকা খুব স্পর্শকাতর। কিছুদিন আগেই তো শীতলকুচিতে একজনকে তুলে নেওয়া হলো। তিনি একজন কৃষক ছিলেন এবং নিজের জমি চাষ করছিলেন। তাঁর কোনও দোষ ছিল না। উদয়ন গুহের কাছ থেকে খবর পেয়ে আমরা তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নিই, তাঁকে ছাড়িয়ে আনার ব্যবস্থা করি এবং তাঁকে ফিরিয়েও এনেছি। সীমান্তবর্তী এলাকায় এমন ঘটনা ঘটছে। তোমাদের সকলের সতর্ক থাকা উচিত। বিএসএফের দায়িত্ব বলে আইসি, ওসিরা চোখ-কান বুজে বসে রইলেন, সেটা হয় না। সমীক্ষার নাম করে মানুষকে মিথ্যা কথা বলে মানুষের তথ্য হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে, সরকারি লোক ছাড়া কাউকে কোনও তথ্য দেবেন না। অনেককে ধরা হয়েছে। কেউ চট করে কাউকে কোনও ডিটেল্স দেবেন না। অথেনটিক কেউ কি না দেখে নেবেন। এ রকম ধরাও পড়েছে। ঝাড়গ্রাম, মালদহ, কোচবিহার, কলকাতা এবং ডায়মন্ড হারবারে পুলিশ ব্যবস্থা নিয়েছে।’
ভুঁয়ো খবর প্রসঙ্গে: ইদানিং কিছু মিডিয়ার একাংশ এবং সোশ্যাল মিডিয়ার কেউ-কেউ প্রতি মুহূর্তে ফেক নিউজ এবং উত্তেজনা ছড়ানোর খবর ছাড়ছে। অনেক সময় ভাবি যা বেরাচ্ছে সব সত্য। DM-BDO-দের অনুরোধ করছি সকলে খেয়াল রাখবেন। আজকের দিনে ফেক নিউজ বিক্রি করে টাকা ইনকামের পথ হয়েছে। অনেক সময় রাজস্থানের ছবি-বাংলাদেশের ছবি বাংলার উপর চাপিয়ে দেওয়া হয়। কয়েকদিন আগে ডিজিটালে দেখছি হুমকি দেওয়ার খবর লিখছে। এটা লেখা উচিত ছিল না। উত্তেজনা বাড়বে। বর্ডারে অশান্তি বাড়বে। আর এতে সমস্যা বাড়বে সাধারণ মানুষের। শান্তি বজায় রাখা সকলের দায়িত্ব।
বন্যা প্রসঙ্গে: বর্ষা এসে গেছে। কন্ট্রোল রুম এখন থেকে চালু করতে হবে। NDRF-কে সতর্ক থাকতে হবে।পশ্চিমবঙ্গ নৌকার মতো। সিকিমে বর্ষা হলে উত্তরবঙ্গ ডোবে। ঝাড়খণ্ডে হলে দক্ষিণবঙ্গ ডুবে যায়। ভুটানের বাঁধগুলো থেকে জল ছাড়া হলে বাংলার আলিপুরদুয়ার সহ বেশ কিছু এলাকায় বন্যা হয়ে যায়।
কেন্দ্রীয় বঞ্চনা প্রসঙ্গে: অসম টাকা পায়। আমরা কিন্তু পাই না। বেশি কথা বললে তিক্ততা বাড়বে। আর তিক্ততার কথা বলতে চাই না। সিকিম, ভুটানে ইতিমধ্যে বন্যা হচ্ছে। সতর্ক থাকুন। মানুষের পাশে থাকতে হবে। বর্ষাকালীন কাজের প্রস্তুতি নিন।