ধর্মতলায় কার্তুজ সহ গ্রেপ্তার হওয়া রামকৃষ্ণ মাঝি BJP-র সক্রিয়কর্মী

নিউজ ডেস্ক,দৃষ্টিভঙ্গি, ১৫:০০: দিনমজুর থেকে ডেকরেটিং ব্যবসায়ী, মাত্র দুই বছরে রূপকথার মতো উত্থান হয় রামকৃষ্ণ মাঝির জীবনে। মাটির বাড়ি থেকে টাইলস বসানো পাকা বাড়ি, ছোট হাতি গাড়ির মালিক! কেতুগ্রামের পাণ্ডুগ্রাম অঞ্চলের কুলুন গ্রামের বাসিন্দা রামকৃষ্ণ কয়েক বছর ধরে বিজেপি করে। সেই রামকৃষ্ণই কলকাতায় এসটিএফের হাতে কার্তুজ সহ গ্রেপ্তার হয় রবিবার। রবিবার ধর্মতলার বাস স্ট্যান্ড থেকে ৮ এমএম পিস্তলের ১২০টি কার্তুজ সহ এসটিএফের হাতে ধরা পড়ে কেতুগ্রামের বিজেপি নেতা রামকৃষ্ণ মাঝি। জেরায় জানিয়েছে, উত্তর ২৪ পরগনার সোদপুরের ঘোলা থেকে ধর্মতলায় এসেছিল সে। মেচেদা যাওয়ার জন্য দক্ষিণবঙ্গ পরিবহণের সরকারি বাসের টিকিট কাটে রামকৃষ্ণ। কার্তুজ কাকে পৌঁছে দিতে যাচ্ছিল রামকৃষ্ণ? উত্তরের অপেক্ষায় তদন্তকারীরা।
রামকৃষ্ণের বাবা বাপি মাঝি ও মা বন্দনাদেবী সাত বছর ধরে বেলুড়ের বাসিন্দা। রামকৃষ্ণর বাবা রঙ মিস্ত্রির কাজ করেন। রামকৃষ্ণ তার স্ত্রী সোমাকে নিয়ে পৈতৃক বাড়িতে থাকেন। স্থানীয় বাসিন্দারা বিজেপির একাধিক রাজ্য নেতা-নেত্রীর সঙ্গে রামকৃষ্ণকে মিটিং, মিছিলে যেতে দেখেছেন। এলাকাবাসীদের মতে, রামকৃষ্ণ একদা দিনমজুরি করত। বিজেপিতে যোগদানের পর থেকেই তার হাবভাব বদলে যায়। মাটির বাড়ি থেকে টাইলস বসানো পাকা বাড়ি, গাড়ির মালিক হয়। ডেকোরেটিংয়ের ব্যবসা শুরু করে।
রামকৃষ্ণের স্ত্রী সোমার কথা অনুযায়ী, রবিবার ভোরে তার স্বামী কলকাতায় বেরিয়ে গিয়েছিল। রাতে লালবাজার থেকে স্বামীর গ্রেপ্তারির খবর পান। গাড়ির কাজ করানোর জন্য পাঁচ হাজার টাকার দরকার ছিল। টাকার লোভে কোনও আগ্নেয়াস্ত্র পাচারকারীদের খপ্পরে পড়তে পারেন রামকৃষ্ণ, এমনই মনে করছেন তার স্ত্রী।
পাণ্ডুগ্রাম অঞ্চলের তৃণমূল নেতৃত্বের মতে, রামকৃষ্ণ বিজেপির দাপুটে নেতা। রামকৃষ্ণ ৪৬ নম্বর জেডপি-এর বিজেপির এসসি মোর্চার সভাপতি। গত লোকসভা ভোটে বিজেপির প্রার্থীর সঙ্গে রামকৃষ্ণকে ঘুরতে দেখা গিয়েছে।
ভোটের সময়ে সে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ভয় দেখাত। ওর গাড়ি করে হাওড়া, লিলুয়া এসব জায়গায় যেত। সেখানে হয়ত আগ্নেয়াস্ত্র কারবার চালাত। সামান্য দিনমজুর থেকে বাড়ি, গাড়ির মালিক হল কীভাবে? প্রশ্ন তুলছে তৃণমূল। রাজ্যের শাসক দলের নেতাদের অনুমান, বিজেপি এসব কার্তুজ আমদানি করে কেতুগ্রামে হয়তো কোনও দাঙ্গা লাগাবার চক্রান্ত করছিল। ওর অনুগামীদের কাছেও আগ্নেয়াস্ত্র থাকতে পারে।
উল্লেখ্য, ৩০ মার্চ কলকাতায় প্রচুর আগ্নেয়াস্ত্র সহ ময়না মাঝি ও তার এক সঙ্গী এসটিএফের হাতে ধরা পড়ে। ময়নার বাড়িও কেতুগ্রামে। রামকৃষ্ণ কীভাবে আগ্নেয়াস্ত্রের চক্রে জড়িয়ে পড়ল তার উত্তরের খোঁজে কেতুগ্রাম থানার পুলিশ।