‘সুন্দরবন প্রকল্পে’ কেন্দ্রের বঞ্চনা, ক্ষুব্ধ রাজ্যের সেচমন্ত্রী

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৭:২৬: কলকাতা সহ বিস্তীর্ণ এলাকাকে দুর্যোগের হাত থেকে রক্ষা করতে সুন্দরবন নিম্ন বদ্বীপ প্রকল্প গ্রহণ করেছে রাজ্য সরকার। এই প্রকল্পের প্রস্তাবিত ব্যয় ৪১০০ কোটি টাকা। গোটা প্রকল্পে সবুজ সঙ্কেত দিয়েছে বিশ্বব্যাঙ্ক। সাড়া মিলেছে নেদারল্যান্ডসের বিশেষজ্ঞদের তরফেও। মুখ্যসচিব মারফত এই প্রকল্পের সমস্ত খুঁটিনাটি পাঠিয়েও দেওয়া হয়েছে নয়াদিল্লিতে। তারপর কেটে গিয়েছে চার মাসের বেশি সময়। ফাইল আটকে রয়েছে কেন্দ্রের কাছে। নয়াদিল্লির একটি ছাড়পত্র মিললেই বিশ্বব্যাঙ্কের সহায়তায় এই বৃহৎ প্রকল্পের কাজ শুরুর দিকে এগনো সম্ভব। কিন্তু একাধিকবার যোগাযোগ করা সত্ত্বেও, অনুমোদন দেওয়ার ক্ষেত্রে মোদী সরকার নানান অছিলায় গড়িমসি চালিয়ে যাচ্ছে বলেই খবর প্রশাসনিক সূত্রে।
গোটা বিষয়টিতে ক্ষুব্ধ রাজ্যের সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া। তিনি বলেন, ‘এখানে সামান্য একটি অনুমোদন দেওয়া ছাড়া কেন্দ্রের আর কোনও কাজই নেই। যে কোনও রাজ্যেই বিশ্বব্যাঙ্কের প্রকল্পের জন্য ভারত সরকারের ডিপার্টমেন্ট অব এক্সপেন্ডিচারের থেকে স্রেফ ছাড়পত্র নিতে হয়। বাদবাকি সমস্ত দায়িত্বই রাজ্যের। আর সেই কারণেই এই ক্ষেত্রেও বাংলার সঙ্গে মোদী সরকারের বঞ্চনার রাজনীতির আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। তবে আমরা লেগে আছি। এর শেষ দেখে ছাড়ব।’
জানা গিয়েছে, গত ২৯ জানুয়ারি বিশ্বব্যাঙ্ক, নেদারল্যান্ডস সরকারের প্রতিনিধি দল, সেচ সহ ১০ দপ্তরের আধিকারিকদের নিয়ে গোসাবায় বৈঠক করেন সেচমন্ত্রী এবং দপ্তরের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব মণীশ জৈন। তাঁরা এলাকা পরিদর্শনেও গিয়েছিলেন। ফেব্রুয়ারি মাসেই কেন্দ্রের কাছে এই প্রকল্পের ব্যাপারে ছাড়পত্র চাওয়া হয়েছিল। সাধারণত প্রাইমারি প্রজেক্ট রিপোর্ট সহ আবেদন করলেই ছাড়পত্র দিয়ে দিত কেন্দ্র। কিন্তু এক্ষেত্রে বলা হচ্ছে ডিপিআর জমা দিতে হবে। এভাবেই গড়িমসি চলছে এই প্রকল্প নিয়ে। আধিকারিক স্তরে অনুরোধ উপরোধ, তথ্য সহ একাধিকবার ইমেল পাঠিয়ে দ্রুত ফাইল ছাড়ার আর্জি জানানো হয়েছে রাজ্যের তরফে। তা সত্ত্বেও নিরুত্তর কেন্দ্র।
কেন রাজ্যের জন্য গুরত্বপূর্ণ এই প্রকল্প? কারণ, এই প্রকল্পের মাধ্যমে সুন্দরবন নিম্ন বদ্বীপ অঞ্চলে লবণাক্ততা কমিয়ে প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা করা হবে। সে জন্য পুনর্জীবিত করে তোলা হবে বহু বুজে যাওয়া খাল-নদী। গড়ে তোলা হবে পরিবেশ-বান্ধব পরিকাঠামো। উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার ১১টি ব্লকে রূপায়িত হবে এই প্রকল্প।