গাফিলতিতেই মর্মান্তিক পরিণতি? আঙুল উঠছে টাটাদের দিকে

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৮:৩২: এয়ার ইন্ডিয়া ফ্লাইটের বিরুদ্ধে অভিযোগ নতুন কোন ঘটনা নয়। কিন্তু আহমেদাবাদের মৃত্যুমিছিলের পর এই ঘটনা আরও একবার সব অভিযোগ গুলোকে চোখে আঙুল দেখিয়ে প্রমাণ করে দিয়েছে। দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিমানটি (এয়ার ইন্ডিয়া ফ্লাইট 171) ১২ বছরের পুরোনো, এই নিয়ে আগে অভিযোগ ওঠার পরও সেই প্লেনটির ঠিক করে রক্ষণাবেক্ষণ করা বা তা বাতিল করার সিদ্ধান্ত কেন নেয়নি TATA গোষ্ঠী তা নিয়ে এখন প্রশ্ন উঠছে।
পুরনো অভিযোগ:
- গত ১৭ই মে, ২০২৪ সালে – এই এক AI171 ফ্লাইট আহমেদাবাদ এয়ারপোর্ট থেকে ওড়ার আগে যান্ত্রিক গোলযোগের কারণে বাতিল হয়, একেবারে শেষ মিনিটে।
আবার ২০২৪-এর ১৩ই ডিসেম্বর AI171 যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে আহমেদাবাদ থেকে লন্ডনের উদ্দেশ্যে উড়ে যেতে পারেনি।
এমনকি গতকাল সকালেও এই বিমান নিয়ে এক যাত্রী অভিযোগ জানিয়ে, সোশ্যাল মিডিয়ায় (social media) ভিডিও (ভিডিও-র সত্যতা দৃষ্টিভঙ্গি যাচাই করেনি) পোস্ট করেছেন। আহমেদাবাদ (Ahmedabad) থেকে রওনা দেওয়ার আগে যখন দিল্লি থেকে বিমানটি আহমেদাবাদে এসেছিল এই বিমান তখনই সেখানে নানা রকম গোলযোগ ছিল বলে দাবি করা হয়েছে সেই ভিডিওতে।
আকাশ বৎস নাম ওই ব্যক্তির তোলা ভিডিওতে দেখা যায়, বিমানটিতে এসি কাজ করছিল না। গরমে যাত্রীদের হাতের ম্যাগাজিন দিয়ে হাওয়া খেতেও দেখা গেছে ভিডিওয়। বিমানের ইলেকট্রনিক্স ও যোগাযোগের সংযোগকারী সব যন্ত্রই বিকল ছিল। আকাশ বিমানটিকে ট্যাক্সি সঙ্গে তুলনা করেছিলেন। আমেদাবাদে (Ahmedabad) বিমানটি ভেঙে পড়ার (crash) পর আকাশ ভিডিও প্রকাশ করে জানিয়েছিলেন দু’ঘন্টা আগে তিনি ওই বিমানেই বসেছিলেন।
উল্লেখ্য, ২০০৯ সালে এই মডেলের প্রথম দুর্ঘটনার সময় মাঝ আকাশে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে জরুরি অবতরণ করতে হয়েছিল, যা প্রথমবার আতঙ্ক তৈরি করে।অর্থাৎ, TATA গোষ্ঠী জানতো যে এই পার্টিকুলার Boeing Dreamliner 787-এ যান্ত্রিক গোলযোগ রয়েছে, যার জন্য এর আগে বারংবার ফ্লাইট ক্যানসেল হয়েছে – কিন্তু এই প্লেনটিকে ফ্লিট থেকে সরিয়ে কেন কোনও ব্যবস্থা নেয়নি, স্বভাবতই এই প্রশ্ন উঠে আসছে। এছাড়া, সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘাঁটলেই এয়ার ইন্ডিয়ার বিরুদ্ধে ভুরিভুরি অভিযোগ পাওয়া যাবে। অতএব এটা স্পষ্ট যে, মুনাফা হচ্ছে দেখে TATA গোষ্ঠী নিজের কোনও বিমানকে ঠিক করে সারানোরও প্রয়োজনীয়তা মনে করেনি।
এসবের মাঝেই টাটা গোষ্ঠীর ক্ষতিপূরণ ঘোষণা তাদের গাফিলতিকে ঢাকার আর একটি মোক্ষম অস্ত্র বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞমহল। আহমেদাবাদের মৃতদের জন্য TATA গোষ্ঠী এক কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছে। এই ক্ষতিপূরণের হিসেবটা একটু স্পষ্ট করা যাক।Boeing Dreamliner 787-এর মত বিমানের দাম ২০০০ কোটির মত, যার বীমাও একই অর্থের। এই বীমা বা Hull Insurance-এর সঙ্গে আন্তর্জাতিক বিমানযাত্রীদের প্রত্যেকের আলাদা বীমা করানো থাকে। তাই এই ক্ষতিপূরণের টাকা বীমা সংস্থাই TATA গোষ্ঠীকে দিয়ে দেবে, তারা নিজের পকেট থেকে টাকা বের করে কোনো বিশেষ দাতাকর্ণ সাজছে না, যেমনটা দেখানোর চেষ্টা করা হচ্ছে, এমনটাই মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল।