উত্তরাখণ্ডে গত ছ’সপ্তাহে পর পর পাঁচ বার দুর্ঘটনার কবলে পড়ল চপার, উঠছে প্রশ্ন

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৪:০৬: আমদাবাদের বিমান দুর্ঘটনার ধাক্কা এখনও কাটেনি। এর মধ্যেই ভয়াবহ হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় কেঁপে উঠল কেদারনাথ। গৌরিকুণ্ড ও ত্রিযুগীনারায়ণের মাঝের ঘন জঙ্গলে ভেঙে পড়ল একটি হেলিকপ্টার। রবিবার সকালে শ্রী কেদারনাথ ধাম থেকে গুপ্তকাশী যাওয়ার পথে পাইলট-সহ সাতজনকে বহনকারী একটি হেলিকপ্টার ভেঙে পড়ে। এই নিয়ে মুখ খুলেছে উত্তরাখণ্ড সিভিল অ্যাভিয়েশন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি। ভোর ৫টা ২০ মিনিট নাগাদ হেলিকপ্টারটি গৌরীকুণ্ডের আশপাশে যাওয়ার সময় দুর্ঘটনাটি ঘটে।

এই দুর্ঘটনা নিয়ে এক্স হ্যান্ডেলে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও নিজের দুশ্চিন্তা ব্যক্ত করছেন। তিনি লিখেছেন লিখছেন, “আজ সকালে আর একটি বেসামরিক বিমান দুর্ঘটনার দুঃখজনক খবর পাওয়া গিয়েছে। এবার উত্তরাখণ্ডে, কেদারনাথ-গৌরীকুণ্ড-গুপ্তকাশী অঞ্চলে দুর্ঘটনা ঘটেছে। হেলিকপ্টারটিতে একটি শিশু এবং পাইলট সহ ৭ জন আরোহী ছিলেন। সংবাদ মাধ্যম ভয়াবহ দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছে। উদ্ধারকাজ ও অনুসন্ধান অভিযানের ফলাফলের অপেক্ষায় আছি, আমি বিমানে থাকা প্রত্যেকের জন্য প্রার্থনা করছি।”
এদিনের দুর্ঘটনা নিয়ে ইতিমধ্যেই নানা রকমের প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। কারণ, গত ছ’সপ্তাহে পর পর পাঁচ বার দুর্ঘটনার কবলে পড়ল চপার। কখনও যাত্রিবাহী কপ্টার কখনও রোগী পরিবহণের এয়ার অ্যাম্বুল্যান্স কোনও না কোনও বিপর্যয়ের মুখোমুখি হচ্ছে। সেই তালিকায় সাম্প্রতিকতম সংযোজন রবিবারের দুর্ঘটনা। পর পর কপ্টার দুর্ঘটনায় উদ্বেগ বাড়ছে। কেদার-বদ্রীর দুর্গম পথে পুণ্যার্থীদের অনেকেই কপ্টার পরিবহণের উপর ভরসা রাখেন। নিয়মিত এই রুটে হেলিকপ্টার যাতাযাত করে। ফলে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে মানুষের মনে।
এর আগে গত ৮ মে চারধাম রুটে কপ্টার দুর্ঘটনায় ছ’জনের মৃত্যু হয়। যাত্রীদের নিয়ে কপ্টারটি গঙ্গোত্রীর দিকে যাচ্ছিল। মাঝপথে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তা উত্তরকাশীতে গঢ়ওয়াল হিমালয়ের খাদে পড়ে যায়। সকাল ৮টা নাগাদ এই দুর্ঘটনায় পাইলট-সহ ছ’জনের মৃত্যু হয়। তবে কপ্টারের এক জন আরোহী বেঁচে গিয়েছিলেন। তিনি অন্ধ্রপ্রদেশের বাসিন্দা। চিকিৎসার জন্য আকাশপথেই তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় ঋষিকেশে।

এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনার মাত্র চার দিন পরে বদ্রীনাথে আরও একটি কপ্টার দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। তবে অল্পের জন্য সে বার রক্ষা পান আরোহীরা। বদ্রীনাথের হেলিপ্যাড ছাড়ার কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছিলেন পাইলট। আবার কপ্টারটিকে হেলিপ্যাডে নামানোর চেষ্টা করেন তিনি। তখনই কপ্টারের ব্লেডগুলি ধাক্কা খায় পাশে দাঁড় করানো গাড়িতে। কপ্টারের আরোহী এবং ঘটনাস্থলে উপস্থিত লোকজন আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। তবে কারও আঘাত লাগেনি। ঘটনার গুরুত্ব বিচার করে কপ্টার সংস্থার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হয়।

১৭ মে চারধাম রুটে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে একটি এয়ার অ্যাম্বুল্যান্স। এমস ঋষিকেশ থেকে রোগীকে আনতে ওই চপারটি যাচ্ছিল কেদারনাথে। কেদারের হেলিপ্যাডে নামার সময়ে চপারের লেজ মাটির সঙ্গে ধাক্কা খায়। তীব্র ঝাঁকুনি হয় এর ফলে। কেদার হেলিপ্যাডে চপারটি ‘ক্র্যাশ ল্যন্ড’ করে। ভিতরে ছিলেন পাইলট, এক চিকিৎসক এবং এক নার্স। তাঁরা কোনও রকমে অক্ষত অবস্থায় বেরিয়ে আসতে পেরেছিলেন।
৭ জুন একটি বেসরকারি সংস্থার হেলিকপ্টার রুদ্রপ্রয়াগের বডাসুতে ‘ক্র্যাশ ল্যান্ড’ করে। ওই কপ্টারে পাঁচ জন পুণ্যার্থী ছিলেন। তাঁরা যাচ্ছিলেন কেদারনাথের উদ্দেশে। অবতরণের সময়ে এই কপ্টারের লেজের অংশ ভেঙে যায়। যদিও কোনও রকমে কপ্টারটিকে নিরাপদে হেলিপ্যাডে নামিয়ে দেন পাইলট।