দেশ বিভাগে ফিরে যান

পহেলগাঁও হামলার ৫৫ দিন পরেও অধরা জঙ্গিরা, মোদী সরকারের কাছে পাঁচ প্রশ্ন অভিষেকের

June 16, 2025 | 2 min read

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১১:১৫: কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার ঘটনায় কেঁপে উঠেছে গোটা দেশ। প্রাণ হারিয়েছিল ২৬ জন নিরীহ দেশবাসী। ঘটনার পর কেটে গিয়েছে ৫৫ দিন। কিন্তু আজও অধরা চার জঙ্গি। এই আবহে মোদী সরকারের কাছে পাঁচটি প্রশ্ন রেখেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এক্স হ্যান্ডেলে (সাবেক টুইটার) তিনি লিখছেন, “পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার ৫৫ দিনেরও বেশি সময় পেরিয়ে গিয়েছে। সংবাদ মাধ্যম, বিরোধী দলগুলো এবং বিচার বিভাগ কেউই ভারত সরকারের সামনে পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্থাপন করতে এগিয়ে আসেনি, এটাই উদ্বেগের বিষয়।” একজন দায়িত্বশীল নাগরিক এবং দায়িত্বপ্রাপ্ত জনপ্রতিনিধি হিসেবে, অভিষেক মোদী সরকারকে পাঁচটি প্রশ্ন করেছেন।

দেশের সীমান্ত লঙ্ঘন এবং সাধারণ দেশবাসীর হতাহতের ঘটনা:

চারজন জঙ্গি কীভাবে সীমান্ত পেরিয়ে দেশে প্রবেশ করে হামলা চালিয়ে ২৬ জন নিরীহ ভারতীয় নাগরিককে হত্যা করল? জাতীয় নিরাপত্তায় এহেন গাফিলতির দায় কার?

গোয়েন্দা ব্যর্থতা ও আইবি প্রধানের মেয়াদ বৃদ্ধি:

পহেলগাঁওয়ে হামলার কারণ যদি গোয়েন্দা ব্যর্থতা হয়, তাহলে কেন ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোর প্রধানের চাকরির মেয়াদ এক বৃদ্ধি করা হয়েছিল, তাও আক্রমণের মাত্র এক মাস পরেই কেন? কেন তাঁর থেকে জবাবদিহি চাওয়ার বদলে পুরস্কৃত করা হয়েছিল? কীসের বাধ্যবাধকতা?

মোদী সরকার যদি বিরোধী নেতা (অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সহ), সাংবাদিক এবং এমনকী বিচারকদের বিরুদ্ধে পেগাসাস স্পাইওয়্যার ব্যবহার করতে পারে, তাহলে জঙ্গিদের এবং সন্দেহভাজনদের বিরুদ্ধে এ জিনিস ব্যবহার করতে বাধা কোথায়?

জঙ্গিরা অধরা কেন?

নৃশংস, ধর্মভিত্তিক হত্যাকাণ্ড চালানো চার জঙ্গি কোথায়? তারা কি মৃত, না জীবিত? তাদের বিরুদ্ধে যদি কোনও পদক্ষেপ করা হয়ে থাকে, তাহলে সরকার কেন স্পষ্ট বিবৃতি দিতে ব্যর্থ? কেন এই নীরবতা?

পাক-অধিকৃত কাশ্মীর এবং সংঘর্ষ-বিরোধী সমঝোতা:

ভারত কবে পাক-অধিকৃত জম্মু ও কাশ্মীর (PoJK) পুনরুদ্ধার করবে? মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেছিলেন, বাণিজ্যের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি ভারতকে যুদ্ধবিরতিতে রাজি করিয়েছিলেন। কেন সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে মার্কিন রাষ্ট্রপতির সংঘর্ষ বিরোধী সংক্রান্ত দাবির জবাব দেয়নি? জাতি, ধর্ম এবং রাজনৈতিক পরিচিতি নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশের পাশে দাঁড়িয়েছিল, দেশবাসী, ন্যায়ের জয় উদযাপন করেছিল। সশস্ত্র বাহিনীর বীরত্ব ও আত্মত্যাগকে অভিবাদন জানিয়েছিল। কেন ১৪০ কোটি ভারতীয়ের আবেগকে অবহেলা করা হল? কেন এই ধরনের আপস করা হয়েছিল?

কূটনীতি এবং দ্বিচারিতা:

পহেলগাঁওয়ে হামলার পর গত এক মাসে ৩৩টি দেশের কাছে পৌঁছে গিয়েছে ভারতের সর্বদলীয় সাংসদ প্রতিনিধি দল। কত দেশ ভারতের অবস্থানকে সমর্থন জানিয়েছে?

অভিষেক আরও লিখছেন, “ভারত যদি সত্যি সত্যিই বিশ্বগুরু এবং বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতি হয়ে থাকে, তাহলে কী করে পহেলগাঁওয়ে হামলার ঘটনার পরপরই আইএমএফ এবং ওয়ার্ল্ড ব্যাঙ্ক পাকিস্তানকে যথাক্রমে এক বিলিয়ন ডলার ও চল্লিশ বিলিয়ন ডলার ঋণ দিল ও পাকিস্তানে দীর্ঘ মেয়াদি বিনিয়োগের পথে হাঁটল? সীমান্ত সন্ত্রাসে বার বার জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠা একটি দেশ কীভাবে আন্তর্জাতিক তদন্ত এড়িয়ে গেল এবং পুরস্কৃতও হল? আরও আশ্চর্যজনকভাবে, মাত্র এক মাস পরেই কেন পাকিস্তানকে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সন্ত্রাস-বিরোধী কমিটির ভাইস-চেয়ারম্যান নিযুক্ত করা হল? গত দশ বছরের বিদেশনীতির পিছনে দু লক্ষ কোটি টাকা ব্যয় করেছে মোদী সরকার। ভারতের নাগরিকেরা স্বচ্ছ উত্তর এবং ফলাফল চায়। নীরবতা চায় না। গোটা দেশ উত্তরের অপেক্ষায়।”

বস্তুত আম জনতার মনের প্রশ্ন তুলে ধরেছেন অভিষেক। পুলওয়ামা থেকে পহেলগাঁও, জঙ্গি হামলায় বার বার রক্তাক্ত হয়েছে দেশের মাটি। বদলে অপরাধীরা ধরা পড়েনি। পড়শী দেশে হামলা চালিয়ে গাফিলতি পাশ কাটিয়ে গিয়েছে মোদী সরকার। হামলার ঘটনায় তদন্তের ফলাফলও মেলেনি। অন্যদিকে করদাতা দেশবাসীদের টাকায় দেশ চলছে। তাঁরা সরকারের কাছে প্রশ্ন করতেই পারেন, উত্তর আশা করাও তাঁদের ন্যায্য দাবি। জনতার প্রতিনিধি হিসাবে জরুরি সওয়াল তুলে দিলেন অভিষেক।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Narendra Modi, #abhishek banerjee, #Modi Government, #Pahalgam Terror Attack

আরো দেখুন