RSS –এর সংবিধান বদলানোর ভাবনায় এবার সুর মেলালেন উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনকড়!

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ২২:০০: সংবিধান পাল্টে ফেলাই কি সঙ্ঘের লুকায়িত লক্ষ্য? তা পূরণ করতে মরিয়া বিজেপি সরকার? চব্বিশের লোকসভা ভোটের আগে বিজেপির প্রথম সারির নেতারা জিগির তুলেছিলেন চারশো পেরোলেই বদলে যাবে সংবিধান। লারার মতো বিজেপির কপালে চারশো করার গৌরব জোটেনি! ফলে সংবিধান বদলের সুপ্ত বাসনা ক্ষণিকের জন্য লুপ্ত হয়। ফের এবার মাথাচাড়া দিয়েছে সংবিধান বদলের চেষ্টা।
শিবরাজ, হিমন্ত, আরএসএসের পর এবার খোদ দেশের উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনকড়ের গলায় সংবিধান বদলের সুর! শনিবার এক অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে সংবিধানের প্রস্তাবনায় ‘সমাজতান্ত্রিক’ ও ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ শব্দ নিয়ে প্রশ্ন তুললেন ধনকড়। তাঁর দাবি, “ভারতের সংবিধান ছাড়া অন্য কোনও সংবিধানের প্রস্তাবনা কখনও পরিবর্তন হয়নি। কারণ সংবিধানের প্রস্তাবনা অপরিবর্তনযোগ্য। অথচ তা পরিবর্তনের পাপ করা হয়েছিল এমার্জেন্সির সময়।”
ওই অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ধনকড় বলেন, “প্রস্তাবনা হল সংবিধানের প্রাণ। আমাদের সংবিধান প্রণেতারা এখানে যে শব্দগুলি প্রয়োগ করেছিলেন তা ভেবেচিন্তেই করা হয়েছিল। ১৯৭৬ সালে জরুরি অবস্থা জারি করে দেশবাসীর মৌলিক অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়। তখনই সংবিধানের প্রস্তাবনায় যুক্ত করা হয় ‘সমাজতান্ত্রিক’, ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ এবং ‘অখণ্ডতা’ এর মতো শব্দগুলি।” এই ঘটনাকে দেশের সংবিধানের একটি ক্ষত বলে উল্লেখ করে ধনকড় বলেন, “বিশ্বের কোনও গণতান্ত্রিক দেশে এমনটা ঘটেনি। ভারতই একমাত্র দেশ যেখানে এটা হয়েছিল। জনগণের সম্মতি ছাড়া, কোনও আলোচনা ছাড়া সংবিধানের আত্মাকে বদলে দেওয়া হয়েছিল।”
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার, রাষ্ট্রীয় স্বয়ং্সেবক সঙ্ঘের সরকার্যবাহ অর্থাৎ সাধারণ সম্পাদক দত্তাত্রেয় হোসাবলেও ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ এবং ‘সমাজতান্ত্রিক’ শব্দ দুটি সংবিধান থেকে বাদ দেওয়ার ডাক দেন। প্রসঙ্গত, জরুরি অবস্থার সময় প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সরকার দেশের সংবিধানের প্রস্তাবনায় ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ এবং ‘সমাজতান্ত্রিক’ শব্দ দুটি যোগ করেছিল। ১৯৭৬ সালে সংবিধান সংশোধন করে পৃথিবীর দীর্ঘতম লিখিত সংবিধানের প্রস্তাবনায় যোগ হয়েছিল সমাজতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ শব্দ দুটি। যার ফলে ভারত সার্বভৌম, গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র থেকে সার্বভৌম, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র-এ পরিণত হয়।