Russia-Ukraine war: ঝাঁজ বাড়াচ্ছে রাশিয়া, এবার কি ইউক্রেন দখল করবেন পুতিন?

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৬:৪৮: ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হয়। তারপর থেকে দফায় দফায় যুদ্ধের বহর কমেছে, বেড়েছে। সম্প্রতি রাশিয়ায় ড্রোন হামলা চালায় ইউক্রেন। তারপর থেকেই আক্রমণের ঝাঁজ বাড়িয়েছে রাশিয়া। উল্লেখ্য, বুধবার রাতে ইউক্রেনের আক্রমণে নিহত হয়েছেন রুশ নৌবাহিনীর সহকারী প্রধান মেজর জেনারেল মিখাইল এভজেনিভিচ গুডকভ। মস্কো এ কথা স্বীকার করেও নিয়েছে।
বৃহস্পতিবার, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ফোনে কথা হয়। ভারত-পাক, ইরান-ইজরায়েল যুদ্ধ থামানোর দাবি করা ট্রাম্প এবার ফেল পড়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, ইউক্রেনের যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ে পুতিনের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। কিন্তু লাভ হয়নি।
পুতিনের সঙ্গে ফোনে কথার পর ট্রাম্প সাফ বলেন, “আমাদের কথা হয়েছে। অনেক ক্ষণ ধরেই কথা হয়েছে। অনেক কিছু নিয়ে আমরা কথা বলেছি। ইরান নিয়ে এবং ইউক্রেনে যুদ্ধ নিয়ে কথা হয়েছে। কিন্তু কথাবার্তার পর আমি খুশি হতে পারছি না।” ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গেও কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
শুক্রবার মধ্যরাত থেকে ইউক্রেনে নতুন করে হামলা শুরু করেছে রাশিয়া। ইউক্রেনের দাবি, রাতভর হামলায় অন্তত ২৩ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। ১৩ ঘণ্টা ধরে বিস্ফোরকবাহী ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে রাশিয়া। ইউক্রেনের তথ্য অনুযায়ী, ১৩ ঘণ্টায় মোট ৫৩৯টি ড্রোনের মাধ্যমে হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। তার মধ্যে ৪৭৬টি ড্রোন আকাশেই আটকে দেওয়া হয়েছে। রাত থেকে সকাল পর্যন্ত ১১টি ক্রুজ এবং ব্যালিস্টিক মিসাইল ছোড়া হয়েছে। রাতভর অনেকেই শেল্টারে। কিভের রেলস্টেশন এবং একাধিক অ্যাম্বুল্যান্সে হামলা হয়েছে। ভূগর্ভস্থ স্টেশন বা পার্কিং লটে আশ্রয় নিয়েছিলেন অনেকে। একাধিক শহরে শোনা গিয়েছে বিস্ফোরণের শব্দ। একাধিক বহুতল ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ভেঙে পড়েছে। নেদারল্যান্ডসের প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর দাবি, নিষিদ্ধ রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করছে রাশিয়া।
রাশিয়া-ইউক্রেন, দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধবিরতির আলোচনা চলছে দীর্ঘদিন ধরে। একাধিকবার যুদ্ধবিরতিতে প্রস্তাব এগিয়ে গিয়েও সফল হয়নি। ১৬ মে ইস্তানবুলে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে প্রথম বৈঠকে বন্দি বিনিময়ের বিষয়ে চুক্তি হয়েছিল। ২ জুন তুরস্কে দ্বিতীয় দফার আলোচনায় ছয় হাজার ইউক্রেনীয় সৈন্যের মৃতদেহ ফেরত দেওয়া এবং ২৫ বছরের কম বয়সী অসুস্থ ও বন্দিদের বিনিময়ের বিষয়ে চুক্তি হয়েছিল। শেষ বৈঠকে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রুস্তম উমারভ প্রস্তাব দিয়েছিলেন যে তৃতীয় বৈঠকটি জুনের শেষ সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু সেই বৈঠক এখনও হয়নি।
২ জুন চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়া সত্ত্বেও ক্রেমলিন যুদ্ধবিরতির জন্য দু’টি প্রস্তাব দিয়েছিল। যার মধ্যে রয়েছে রাশিয়ার ভূখণ্ড হিসেবে বিবেচিত চারটি অঞ্চল ডোনেৎস্ক, লুহানস্ক, খেরসন এবং জাপোরিঝিয়া থেকে ইউক্রেনের সেনা প্রত্যাহার। এছাড়াও ১০০ দিনের মধ্যে ইউক্রেনে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের শর্ত রাখা হয়েছিল। ইউক্রেনের রাষ্ট্রপতি জেলেনস্কি দাবিগুলিকে শান্তির উদ্দেশে পরিপন্থী বলে অভিহিত করছিলেন। তিনি নতুন নিষেধাজ্ঞার দাবি জানিয়েছিলেন। জেলেনস্কির দাবি, এগুলি আসলে ইউক্রেনের আত্মসমর্পণের শর্ত, যা তিনি মেনে নেবেন না। জেলেনস্কির চিফ অফ স্টাফ, আন্দ্রেই ইয়েরমাক জানান, রাশিয়া যুদ্ধবিরতি রোধ করতে এবং যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করছে। এখন নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা প্রয়োজন। তারপর জুলাইয়ের ৩-৪ তারিখে তেড়েফুঁড়ে হামলা। তবে কি ইউক্রেন দখল করতে চাইছে রাশিয়া?