শিলিগুড়ির পাঁচটি বরোর দখলই তৃণমূলের হাতে

২০১৫ সালে পুরভোটে বামফ্রন্ট ও কংগ্রেস জোট করে পুরসভার ভোট গঠন করলেও ৩ এবং ৫ নম্বর বরো কমিটি দখল করেছিল তৃণমূল।

February 22, 2022 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

শুধু শিলিগুড়ি পুরভবন নয়, এবার পাঁচটি বরোর রাশও থাকছে তৃণমূল কংগ্রেসের হাতে। পুরভোটের ফলের নিরিখে পাঁচটি বরোতেই তৃণমূলের আসন সংখ্যা সর্বাধিক। কাজেই সর্বত্র বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মনোনীত হবে ঘাসফুল বাহিনীর চেয়ারম্যান। তাই মেয়রের  শপথ গ্রহণের ২৪ ঘণ্টা আগে সোমবার বরোর চেয়ারম্যান নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে শুরু হয়েছে জোর চর্চা। পুরসভার মেয়র পদপ্রার্থী তৃণমূলের গৌতম দেব বলেন, নিয়ম মেনে বোর্ড গঠনের পরই বরো চেয়ারম্যান নির্বাচন করা হবে। সেগুলি একদিনেই করা হবে। 


শিলিগুড়ি পুরসভার অধীনে বরোর সংখ্যা পাঁচটি। ২০১৫ সালে পুরভোটে বামফ্রন্ট ও কংগ্রেস জোট করে পুরসভার ভোট গঠন করলেও ৩ এবং ৫ নম্বর বরো কমিটি দখল করেছিল তৃণমূল। বাকি তিনটি বরো ছিল বামফ্রন্টের কব্জায়। এবার বিরোধীদের কাছে সেই সুযোগ নেই। কারণ, প্রতিটি বরোতেই বিরোধীদের করুণদশা। কোথাও বরোর চেয়ারম্যান পদে লড়াই করার মতো শক্তি তাদের নেই। স্বভাবতই এবার ঘাসফুল শিবির বিনা লড়াইয়ে সেগুলি নিজেদের অধীনে নিতে সক্ষম হবে। 


সংশ্লিষ্ট বরোর মধ্যে ১ নম্বর বরো অন্যতম। একদা এলাকাটি লালঘাঁটি হিসেবে পরিচিত ছিল। এখানে ১-৫ এবং ৪৫-৪৭ নম্বর এই আটটি ওয়ার্ড রয়েছে। গতবার এখানকার সাতটি ওয়ার্ড ছিল বামফ্রন্টের এবং একটি বিজেপির কব্জায়। এবার তৃণমূল ১, ২, ৩, ৪৬ এবং ৪৭, এই পাঁচটি ওয়ার্ড দখল করেছে। বিজেপি ৪ ও ৫ এবং সিপিএম ৪৫ নম্বর ওয়ার্ড পেয়েছে। পরিসংখ্যানের নিরিখে এখানে চেয়ারম্যান নির্বাচনে দাঁত ফোঁটানোর ক্ষমতা নেই বিরোধীদের। 


শহরের ২ নম্বর বরোও নজরকাড়া। এখানে ৬-১৫ নম্বর এই ১০টি ওয়ার্ড রয়েছে। এখানে সিপিএমের কোনও অস্তিত্ব নেই। ৮, ৯ এবং ১১ নম্বর ওয়ার্ড পেয়েছে পদ্ম শিবির। ৩ নম্বর বরোতেও বিরোধীদের অবস্থা তথৈবচ। এখানে ১৬-২৪ এবং ২৮ নম্বর ওয়ার্ড এই বরোর অন্তর্গত। এখানে বিজেপির কোনও অস্তিত্ব নেই। কংগ্রেস মাত্র একটি এবং সিপিএম দু’টি ওয়ার্ড পেয়েছে। বাকি সাতটি ওয়ার্ডই তৃণমূলের কব্জায় আছে। 


৪ নম্বর বরো প্রায় বিরোধীশূন্য। এখানে ২৫-২৭ এবং ২৯-৩৫ এই ১০টি ওয়ার্ড অবস্থিত। যারমধ্যে ৩১-৩৫ নম্বর ওয়ার্ড সংযোজিত এলাকা অর্থাৎ‌ জলপাইগুড়ি জেলার অধীনে। এখানে কংগ্রেস ও বিজেপির কোনও অস্তিত্ব নেই। মাত্র একটি ওয়ার্ড দখলে রেখেছে সিপিএম। বাকি ন’টি ওয়ার্ডই তৃণমূলের কব্জায় আছে। 


৫ নম্বর বরোতে বিরোধীদের অবস্থা আরও শোচনীয়। এখানে ওয়ার্ড সংখ্যা ন’টি। ৩৬-৪৪ নম্বর ওয়ার্ড। সব’কটি সংযোজিত এলাকা। গতবার এখানে তৃণমূল পাঁচটি এবং সিপিএম চারটি আসন পেয়েছিল। বরো কমিটি ছিল তৃণমূলের কব্জায়। এবার এখানকার মাটি থেকে ধুয়েমুছে সাফ হয়ে গিয়েছে বিরোধীরা। সিপিএম, কংগ্রেস, বিজেপি কেউ একটিও আসন পায়নি। অর্থাৎ এলাকাটি বিরোধীশূন্য। 

এমন পরিসংখ্যান পর্যালোচনা করার পর রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের বক্তব্য, বর্তমানে এই শহর থেকে বিরোধীরা কার্যত ভ্যানিস হয়েছে। একটি বরো এলাকা থেকে বিরোধীরা নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে। বাকি চারটিতেও বিরোধীরা সেভাবে ছাপ ফেলতে পারেনি। সুতরাং, ভোটের ফল অনুসারে প্রতিটি বরো কমিটি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দখল করবে তৃণমূল। সবকিছু ঠিকঠাক চললে এতে শহরের উন্নয়নমূলক কাজে গতিও পাবে। প্রসঙ্গত, পুরসভার বোর্ড গঠনের পর বরো কমিটিগুলি গঠন করা হবে। তৃণমূল সূত্রে খবর, স্বচ্ছ্ব ভাবমূর্তিসম্পন্ন যোগ্য কাউন্সিলারদের পদগুলিতে বসানোর ব্যাপারে দলে আলোচনা চলছে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen