কলকাতা পুরসভার মেয়র ফের ববিই? আজ ঘোষণা মমতার
পুরভোটে জয়ী তৃণমূল প্রার্থীদের সর্বসম্মতিক্রমে আজ, বৃহস্পতিবার কলকাতার পরবর্তী মেয়র নির্বাচন। এদিন দুপুরে দক্ষিণ কলকাতার মহারাষ্ট্র নিবাস হলের ওই বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন স্বয়ং তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পুরভোটে তৃণমূলের ভূমিধস জয়ের পর কার হাতে যাবে এস এন ব্যানার্জি রোডের ছোট লালবাড়ির নিয়ন্ত্রণ, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছিল ভোটের অনেক আগে থেকেই। সেই জল্পনা জিইয়ে থাকে, পুর নির্বাচনে দলের তরফে তৃণমূল কোনও ‘মুখ’ ঠিক না করায়। সেই পর্ব চলেছে ভোটের ফলপ্রকাশের পরও। তবে যাঁর নাম সবচেয়ে বেশি চর্চিত, তিনি প্রাক্তন মেয়র তথা প্রশাসকমণ্ডলীর প্রাক্তন প্রধান ফিরহাদ হাকিম ববি।
গত ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাসের গোড়ায় ফিরহাদকে মেয়রের দায়িত্বভার অর্পণ করেছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে ১৪ হাজার ভোটে জিতে কাউন্সিলার হয়ে মেয়র পদে পাকাপাকিভাবে বসেছিলেন ববি। তারপর থেকে তিনি অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে পুরসভা পরিচালনা তো বটেই, মন্ত্রিত্বও সামলেছেন। জোড়াফুলের রাজনীতিতে ‘মিস্টার ডিপেন্ডেবল’ ববি মুখ্যমন্ত্রীর অত্যন্ত আস্থাভাজন বলেও পরিচিত। নেত্রীর নির্দেশিত পথে ‘টক টু মেয়র’ কর্মসূচি চালু করে পুরসভার সঙ্গে নাগরিক সংযোগ বাড়ানোর ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করেছিলেন তিনি। করোনা পর্বে প্রশাসক হিসেবেও পুর পরিচালনার ক্ষেত্রে সফল হয়েছিলেন। তাই নেত্রী তাঁকেই ফের কলকাতার প্রথম নাগরিক পদে ‘পুনর্নিয়োগ’ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে সূত্রের খবর। এদিকে চলতি সপ্তাহে নয়, আগামী সপ্তাহেই হবে কাউন্সিলারদের শপথগ্রহণ পর্ব। কলকাতা পুরসভা সূত্রে তেমনটাই খবর মিলেছে। ৩১ ডিসেম্বর হবে অষ্টম পুরবোর্ড গঠন। ওইদিনই মেয়রের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান হবে। তবে চলতি সপ্তাহে কাউন্সিলারদের শপথ হচ্ছে না। পুর সচিবালয় সূত্রে খবর, পুর ও নগরোন্নয়ন দপ্তরের তরফ থেকে নির্দেশিকা এসেছে, আগামী ২৭ ও ২৮ ডিসেম্বর অর্থাৎ সোম এবং মঙ্গলবার কাউন্সিলারদের শপথ অনুষ্ঠান। এবং মেয়রের শপথ হবে ৩১ ডিসেম্বর। বুধবার নির্বাচন কমিশনও বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। কলকাতা পুর এলাকা থেকে নির্বাচনের আদর্শ আচরণ বিধিও এদিন উঠে গিয়েছে। নিয়ম অনুসারে, দলগতভাবে মেয়রের নাম নির্বাচনের পর পুরসভার কাছে সরকারিভাবে চিঠি আসে। তারপর মেয়র পদে মনোনয়নপত্র চেয়ে নির্দেশিকা জারি করে সচিবালয়। শাসক দলের নির্বাচিত ব্যক্তি ছাড়া অপর কেউ মনোনয়নপত্র দাখিল না করলে, তিনিই মেয়র হিসেবে শপথ নেবেন। কিন্তু অপর কেউ যদি মনোনয়ন জমা দেন, তখন ভোটাভুটিতে হবে মেয়র নির্বাচন। তবে ১৩৪টি ওয়ার্ড দখল করে বোর্ড গঠন করতে চলা তৃণমূলের মেয়র প্রার্থীর বিরুদ্ধে অন্য কেউ মনোনয়নপত্র জমা দেবেন—এমনটা হওয়ার সম্ভাবনা এবার নেই। মেয়র নির্বাচন পর্বের আগে প্রোটেম চেয়ারম্যান নির্বাচন করতে হবে। সূত্রের খবর, এক্ষেত্রে দু’জনের নাম বিবেচনায় রয়েছে। একজন রামপেয়ারি রাম এবং অন্যজন রত্না শূর। চেয়ারম্যানকে শপথবাক্য পাঠ করাবেন প্রোটেম চেয়ারম্যান। এই প্রক্রিয়া চলতি সপ্তাহে শেষ করে আগামী সপ্তাহেই হবে কাউন্সিলার, মেয়র ও মেয়র পারিষদদের শপথ অনুষ্ঠান। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে নতুন বছরেই পথ চলা শুরু করবে নয়া পুর বোর্ড।