নিজের শক্তিতেই লড়তে হবে, দুঃসময়ে বঙ্গ বিজেপির পাশে নেই কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব
দলের বঙ্গ ব্রিগেডের দুঃসময়ে কার্যত পাশ থেকে সরে গেল কেন্দ্রীয় পার্টিও! বাংলায় একের পর এক নির্বাচনে দলের ভরাডুবির দায় একপ্রকার ঝেড়েই ফেলল বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। নির্দেশ, এবার থেকে বাংলায় লড়াই করুন নিজেদের শক্তিতেই। অযথা দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের মুখের দিকে চেয়ে থাকবেন না। বিজেপির বঙ্গ নেতৃত্বকে এ কথাই জানিয়ে দিল দলের কেন্দ্রীয় পার্টি। দু’দিন আগেই প্রকাশিত হয়েছে কলকাতা পুরভোটের ফলাফল। সেখানে আক্ষরিক অর্থেই ধরাশায়ী হয়ে গিয়েছে বিজেপি।
সবমিলিয়ে দলের বঙ্গ নেতৃত্বের উপর চরম ক্ষুব্ধ ছিলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা। নির্বাচনী বিপর্যয় ইস্যুতে কার্যত বঙ্গ নেতৃত্বের কাছে জবাবদিহি চাওয়ার জন্যই বৃহস্পতিবার রাজ্যের নেতাদের দিল্লিতে জরুরি তলব করেছিল কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। দলীয় সূত্রের খবর, এদিনের সেই বৈঠকেই বঙ্গ বিজেপিকে কার্যত তুলোধনা করেছেন দিল্লির নেতারা। আর তারপরেই পরের পর নির্বাচনী বিপর্যয়ের দায় বাংলার নেতাদের উপর চাপিয়ে দিয়েছে বিজেপির কেন্দ্রীয় পার্টি।
বৃহস্পতিবার দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, অন্যতম সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ, রাজ্য সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তীর সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা। সূত্রের খবর, সেই বৈঠকে বঙ্গ নেতৃত্বকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, রাজ্য পার্টির ভালোমন্দের ভার এবার থেকে মূলত থাকবে বাংলার নেতাদের উপরই। পদে না থাকলেও রাজ্য বিজেপির প্রবীণ নেতাদের এ ব্যাপারে বিশেষভাবে উদ্যোগী হতে হবে। প্রয়োজন হলে কেন্দ্রীয় পার্টি অবশ্যই সহযোগিতা করবে। দলের অন্দরের খবর, বারবার রাজ্য পার্টির আবেদনে সাড়া দিয়ে বাংলায় প্রচারে গিয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতারা। কিন্তু লাভ হয়নি। যার ফলে আদতে মুখ পুড়েছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের।
এই পরিস্থিতিতে সুকান্তবাবুদের আর কেন্দ্রীয় পার্টির মুখাপেক্ষী না হয়ে থাকার বার্তা দেওয়া হয়েছে। এই নির্দেশকে রীতিমতো তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। সূত্রের খবর, রাজ্যে বিজেপির গোষ্ঠীকোন্দল, দলবদলুদের পুনরায় দলত্যাগের মতো বিষয়ে রাজ্য পার্টিকে এদিন কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কড়া ধমকের সম্মুখীন হতে হয়েছে। তবে এদিন কেন্দ্রীয় পার্টির তোপের মুখে রাজ্যে তৃণমূলী-সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে পরিস্থিতি কিছুটা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন রাজ্য নেতারা। পরে দিলীপবাবু বলেন, ‘কেন বিজেপির ফল খারাপ হয়েছে, তা সকলেই জানেন। তৃণমূল যেভাবে রাজনৈতিক হামলা-সন্ত্রাস চালিয়েছে, তাতে এই ফলই প্রত্যাশিত।’ সূত্রের খবর, এদিন রাত পর্যন্ত বিজেপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নেতৃত্বের সঙ্গে আলাদাভাবে বৈঠক করেন সুকান্তবাবুও।