দৃষ্টিহীনদের চোখের জ্যোতি ফেরাতে ১১টি আই ব্যাঙ্ক করার উদ্যোগ রাজ্যের
দৃষ্টিহীনদের চোখের জ্যোতি ফেরাতে ১১টি আই ব্যাঙ্ক করতে চলেছে রাজ্য স্বাস্থ্যদপ্তর। দু’বছরের মধ্যে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করতে চাইছে রাজ্য। প্রতিটি আই ব্যাঙ্কের মাধ্যমে বছরে ১০০টি চোখ বা কর্নিয়া প্রতিস্থাপনের লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে। প্রতি বছর কর্নিয়ার কারণে দৃষ্টিহীন অন্তত ১১০০ জনকে কার্যত ‘দৃষ্টি’ ফিরিয়ে দেওয়ার জন্যই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রের খবর, এই ১১টির মধ্যে প্রথম পর্যায়ে সাতটি এবং পরবর্তী ধাপে ২০২৪ সালের মধ্যে আরও চারটি আই ব্যাঙ্ক করা হবে। প্রথম ধাপে হবে যথাক্রমে বাঁকুড়া সম্মিলনী, পিজি, মুর্শিদাবাদ, মালদহ, উত্তরবঙ্গ, বর্ধমান এবং মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে। পরের ধাপে হবে আর জি কর, ন্যাশনাল, কল্যাণী ও কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজে।
চোখের ডাক্তাররা জানিয়েছেন, প্রতি ১০০ জন দৃষ্টিহীনের মধ্যে অন্তত আটজন কর্নিয়ার সমস্যায় আক্রান্ত। মরণোত্তর চক্ষুদান কর্মসূচির মাধ্যমে কর্নিয়া সংগ্রহ এবং তা প্রতিস্থাপনের প্রক্রিয়ায় এইসব মানুষকে দৃষ্টি ফেরানো সম্ভব। রাজ্যের চাহিদা মেটাতে সারা বছরে সেজন্য দরকার অন্তত ১২ হাজার কর্নিয়া। তবে সংগৃহীত কর্নিয়ার প্রায় অর্ধেকই নষ্ট হয়ে যায়। সেই কারণে বাড়তি কর্নিয়া সংগ্রহ করে রাখতে হয় ব্যাঙ্কে। রাজ্যে প্রতি বছর অবশ্য সংগৃহীত হয় চাহিদার চারভাগের একভাগ। সংখ্যায় সাড়ে তিন হাজারের মতো। তারমধ্যে আবার ৯০ শতাংশ সংগ্রহ এবং প্রতিস্থাপনই করে রাজ্যের তিন-চারটি বড় বেসরকারি চোখের হাসপাতাল।
বর্তমানে রাজ্যে তিনটি সরকারি এবং ১০টি বেসরকারি আই ব্যাঙ্ক রয়েছে। তিনটির মধ্যে দু’টি সরাসরি রাজ্য সরকারের। রিজিওনাল ইনস্টিটিউট অব অপথালমোলজি এবং এন আর এস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অতুলবল্লভ আই ব্যাঙ্ক। তৃতীয় আই ব্যাঙ্কটি প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের আওতাধীন কমান্ড হাসপাতালে রয়েছে। ২০১৮ সালের এপ্রিল থেকে ২০২১ সালের অক্টোবর পর্যন্ত দু’টি সরকারি আই ব্যাঙ্কের মাধ্যমে চোখ সংগ্রহ হয়েছে মাত্র ৩৩০টি। ফলে নতুন ১১টি আই ব্যাঙ্ক তৈরি করে চক্ষু প্রতিস্থাপনে জোয়ার আনার উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা কার্যকর করতে হলে সব কিছু ঢেলে সাজাতে হবে। এমনটাই মনে করছেন সরকারি চোখের ডাক্তারদের একাংশ।
আরআইও’র প্রাক্তনী বিশিষ্ট চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ হিমাদ্রী দত্ত বলেন, জেলাওয়াড়ি আই ব্যাঙ্ক করতে গেলে শুরুতে মরণোত্তর চক্ষুদান নিয়ে ব্যাপক প্রচারাভিযান চালাতে হবে। দ্বিতীয়ত, বিকেলের পর থেকে রাত পর্যন্ত জরুরিভিত্তিতে প্রতিস্থাপন করার মতো পর্যাপ্ত আই সার্জেন থাকতে হবে। সর্বোপরি, সব কিছুই নতুন উদ্যমে শুরু করতে হবে। কাজটা কঠিন। কিন্তু অসম্ভব নয়।
চক্ষু প্রতিস্থাপনে উদ্যোগ রাজ্যের
- রাজ্যে আরও ১১টি সরকারি আই ব্যাঙ্ক
- বছরে অন্তত ১১০০
- কর্নিয়া সংগ্রহ করাই লক্ষ্য
- বেসরকারি ক্ষেত্রে চক্ষু প্রতিস্থাপনের খরচ ৩০-৫০ হাজার। সরকারি আই ব্যাঙ্কে হবে বিনামূল্যে।
- এজন্য আরও মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট, আই
- সার্জেন নিয়োগ করতে হবে সরকারকে।