১৫ জুন থেকে জেলার কোর্ট চালুর উদ্যোগ
জেলা আদালত খোলার প্রস্তুতি শুরু করলেন হাইকোর্ট কর্তৃপক্ষ। বুধবার রাজ্যের জেলা বিচারকদের সঙ্গে আলোচনায় তারই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই নির্দেশ মতোই জেলার আইনজীবী সংগঠনগুলির সঙ্গে আলোচনা শুরু করল নিম্ন আদালতগুলি। বৃহস্পতিবারই কলকাতা নগর-দায়রা আদালতের মুখ্য বিচারকের সঙ্গে আলোচনায় বসে আইনজীবীদের সংগঠন। পরে আইনজীবীরা জানান, ১৫ তারিখ থেকে মুখ্য বিচারক, পকসো আদালত, এনডিপিএস আদালত-সহ কয়েকটি এজলাস খোলার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আদালত খোলা নিয়ে বার অ্যাসোসিয়েশনের সিদ্ধান্ত জানতে চেয়েছেন সিটি সিভিল আদালতের মুখ্য বিচারক। আইনজীবী সংগঠনের মতামত জানতে চেয়েছেন হাওড়া আদালতের মুখ্য বিচারকও। আজ, শুক্রবার হাওড়ার তিনটি বার অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে আলোচনা হওয়ার কথা জেলা বিচারকের। তার আগেই অবশ্য নিজেদের সুপারিশ লিখিত ভাবে জানিয়েছে বার। তবে আলিপুর আদালতে এখনও আলোচনা হয়নি বলে জানা গিয়েছে।
বুধবার জেলা বিচারকদের সঙ্গে আদালত খোলা নিয়ে ভিডিয়ো কনফারেন্সে আলোচনা করেন হাইকোর্টের বরিষ্ঠ বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী ১৫ তারিখ থেকে যাতে আদালত চালু করা যায়, তিনি তেমনই নির্দেশ দেন বলে খবর। তাঁর নির্দেশ মেনে কাজ শুরু করেন জেলা বিচারকরা। তবে আদালত চালু করা হলেও করোনা মোকাবিলায় পর্যাপ্ত ব্যবস্থা থাকার শর্ত দিয়েছে আইনজীবীদের সংগঠনগুলি। তাদের বক্তব্য, আদালতে আসতে আইনজীবীরা তৈরি। তবে তার আগে করোনা সংক্রমণ মোকাবিলার সব শর্ত মানতে হবে। তাদের একাধিক সংগঠনের অভিযোগ, এখনও আদালতগুলিতে সেই ব্যবস্থা নেই। খোলার আগে আদালত নিয়মিত স্যানিটাইজ করা, থার্মাল স্ক্রিনিংয়ের ব্যবস্থা এবং প্রতিটি এজলাসে স্যানিটাইজার রাখার দাবি জানানো হয়।
সিটি সেশন কোর্টের অ্যাডভোকেট অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক প্রবীর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘মুখ্য বিচারকের সঙ্গে আলোচনার পর ১৫ তারিখ থেকে আদালত খোলার সিদ্ধান্ত হয়েছে। কিন্তু তার আগে আদালত স্যানিটাইজ করা দরকার বলেও আমরা জানিয়েছি।’ একই বক্তব্য আলিপুর ও হাওড়া আদালতের আইনজীবী সংগঠনগুলির। আলিপুর জেলা আদালত বার অ্যাসোসিয়েশনের প্রাক্তন সম্পাদক ইন্দ্রনীল বসু বলেন, ‘আদালত এক বার স্যানিটাইজ করা হয়েছে। ঝড়ের পর এখনও গাছ পড়ে থাকায় অপরিচ্ছন্ন রয়েছে। সব পরিষ্কার করাও দরকার।’ ক্রিমিনাল বার অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সম্পাদক বাপ্পাদিত্য মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘নিজেদের উদ্যোগে আদালতের কিছু অংশ স্যানিটাইজ করেছিল বার। সরকারি ভাবে নিয়মিত করা দরকার।’ হাওড়া আদালত বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক গৌতম চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘নিয়মিত স্যানিটাইজ করা না হলে আদালত খোলায় আমাদের আপত্তি আছে।’
এ দিকে প্রায় দেড় মাস কেটে গেলেও সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এত দিনেও অনটনে থাকা আইনজীবীদের তিন হাজার টাকা করে অনুদান না-দেওয়ায় বৃহস্পতিবার রাজ্য বার কাউন্সিলের সামনে বিক্ষোভ দেখায় কংগ্রেস-সমর্থিত আইনজীবী সেল। দ্রুত ওই সাহায্যের দাবিতে পরে স্মারকলিপিও দেওয়া হয়। আগামী ৮ জুন আরও জোরদার বিক্ষোভের কর্মসূচি নিয়েছে আইনজীবীদের বামপন্থী সংগঠনগুলি। আরও কিছু রাজনৈতিক দল সে দিন একই বিষয়ে বিক্ষোভ দেখাতে পারে। এরই মধ্যে বহরমপুর বার অ্যাসোসিয়েশন আর্থিক সহায়তা নিয়ে পাশে দাঁড়িয়েছে আইনজীবীদের। বারের সদস্যদের ১০ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়া হয়েছে। আবার এ দিন বিকেলে প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীর তহবিলে ৫০ হাজার টাকা করে দানও করেছে বহরমপুর বার।