রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

অজুহাত করোনা, আবেদনের ঢল নেমেছে পরীক্ষায় না বসার

June 7, 2020 | 2 min read

নিত্যদিন বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। এই অজুহাতে পার্ট থ্রি বা ফাইনাল সেমেস্টার পরীক্ষায় বসতে চাইছেন না পড়ুয়াদের একাংশ। এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলির কাছে ইমেলে আবেদন জমা পড়তে শুরু করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) নির্দেশ মেনেই পড়ুয়াদের স্বাস্থ্য সমস্যা ও সমাধানে গ্রিভান্স সেল তৈরি করেছে প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ফাইনাল বর্ষের পরীক্ষা না দিতে চেয়ে মতামত জানাচ্ছে সংশ্লিষ্ট পড়ুয়ারা। এ ক্ষেত্রে তাদের ‘হাতিয়ার’ মহারাষ্ট্র সরকারের ৩১ মে-র বিজ্ঞপ্তিও। যাতে জানানো হয়েছে, ফাইনাল বর্ষ বা সেমেস্টারের পরীক্ষা এ বছর হবে না। আগের পরীক্ষাগুলির গড় নম্বরের ভিত্তিতেই সবাইকে পাশ করিয়ে দেওয়া হবে। গড় নম্বর ভিত্তিতে এই মূল্যায়নে যাঁরা ফলাফল নিয়ে অসন্তুষ্ট বা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন, তাঁরা যদি চান, স্বেচ্ছায় ফলাফলের উন্নতির জন্য পরীক্ষায় বসতে পারেন। তবে করোনার প্রকোপ কমলে, তবেই চূড়ান্ত পরীক্ষার আয়োজন করা হবে।

একাধিক রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রিভান্স সেলে কয়েক দিনে পাশ করানোর দাবিতে শতাধিক আবেদন জমা পড়েছে বলে খবর। পাশাপাশি ‘এগেনস্ট এগজাম’ নামক ফেসবুকে একটি পেজ তৈরি করে পরীক্ষা না দেওয়ার জোরদার প্রচার চলছে। অনেক পড়ুয়া আবার টুইটারে এই মতামত জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী, মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রক, মুখ্যমন্ত্রী এবং শিক্ষামন্ত্রীর অফিসকে ট্যাগ করেও বার্তা দিতে চাইছেন। তবে মহারাষ্ট্র সরকারের ঘোষণাকে ‘অস্ত্র’ করে আসরে নামছে এ রাজ্যের পড়ুয়াদের বড় অংশ। ফাইনাল বা চূড়ান্ত বর্ষের পরীক্ষায় না বসার প্রচার শুরু করেছেন তাঁরা। হুগলির এক ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ছাত্র প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠানো ই-মেলে লিখেছেন, ‘আমাদের এলাকা আগে গ্রিন জোনে ছিল। এখন আর নেই। এই অবস্থায় কলেজে গিয়ে পরীক্ষা দেওয়া খুবই ঝুঁকিপূর্ণ।’ আবার উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন ছাত্রী লিখেছেন, ‘আমরা কোচবিহারের বাসিন্দা। আমাদের এলাকায় সংক্রমণ দ্রুত ছড়াচ্ছে। তাই পরীক্ষা দেওয়ার মতো পরিস্থিতি নেই।’ এমন সব আবেদন পেয়ে বেশ অবাক বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তারা। তাদের বক্তব্য, পড়ুয়াদের যাতে পরীক্ষা দিতে অসুবিধা না হয়, সে কথা মাথায় রেখেই সব প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যায়ের উপাচার্য বাসব চৌধুরী বলেন, ‘মহারাষ্ট্র সরকারের সিদ্ধান্ত দেখেছি। আমরা কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় খোলার অপেক্ষায়। ইউজিসি-র নির্দেশে যে গ্রিভান্স সেল খোলা হয়েছে, তা পড়ুয়াদের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যা ও সমাধানের জন্য। পরীক্ষা ছাড়া পাশ করানোর আর্জি জানানোর মাধ্যম ওটা নয়।’

যদিও সংশ্লিষ্ট পড়ুয়ারা এ সবে আগ্রহী নয়। তাঁদের পাল্টা অভিযোগ, করোনার পরিস্থিতির মধ্যে পরীক্ষা দিতে গিয়ে আমাদের সংক্রমণ হলে, তার দায়িত্ব কে নেবে? বেশির ভাগ কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে বড়জোর দু’মাস ক্লাস হয়েছে। ১৬ সপ্তাহের পাঠ্যসূচি ছয় বা আট সপ্তাহে কতটা সম্পূর্ণ করা সম্ভব! উম্পুনে যাদের ঘরবাড়ি ভেঙে পড়েছে, বইখাতা নষ্ট হয়েছে, তাদেরই বা কী হবে? এই অবস্থায় মহারাষ্ট্র মডেল অনুকরণের দাবি উঠেছে। ফাইনাল সেমেস্টার বা বর্ষের পড়ুয়াদের আগের পরীক্ষার মূল্যায়নের নিরিখে গড় নম্বর দিয়ে পাশ করানো। সবার হাতে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মার্কশিট তুলে দিতে হবে। এতে পরীক্ষা কেন্দ্রে পড়ুয়া সংখ্যা কম থাকলে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষা গ্রহণ সম্ভব হবে। যদিও লেডি ব্রেবোর্ন কলেজের অধ্যক্ষা শিউল সরকার বলেন, ‘বিএ, বিএসসি পার্ট থ্রি (অনার্স ও পাশ) বা ফাইনাল বর্ষের পড়ুয়াদের টেস্ট পরীক্ষার পর রেজাল্টও প্রকাশিত। ফলে কলেজ খুললে পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষায় বসতে কোনও সমস্যা হওয়ার কথা নয়।’

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#lock down, #examination

আরো দেখুন