রুশদের ঠেকাতে চরম আত্মত্যাগ ইউক্রেন সৈনিকের, শরীরে বোমা বেঁধে ওড়ালেন ব্রিজ
মানব বোমা! এদেশের মানুষ কথাটা জেনেছে তামিলনাড়ুর শ্রীপেরামবুদুরে ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর মৃত্যুর ঘটনায়। ১৯৯১ সালের ২১ মে-র সেই ঘটনা ছিল তৎকালীন সময়ে নজিরবিহীন। আত্মঘাতী হামলা চালিয়ে ছিল জঙ্গিগোষ্ঠী এলটিটিই। পরবর্তীকালেও সাধারণত সন্ত্রাসবাদী হামলাতেই মানব বোমার ব্যবহার দেখা গিয়েছে। কিন্তু রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে (Russia-Ukraine War) অন্য ইতিহাস লিখলেন ইউক্রেনের এক সৈনিক। রুশ বাহিনীর শহর দখল আটকাতে নিজের শরীরেই বোমা বেঁধে উড়িয়ে দিলেন শহর সংযোগকারী ব্রিজ। ইউক্রেন সেনার পক্ষ বিবৃতি জারি করে ওই শহিদ বীর যোদ্ধাকে কুর্নিশ জানানো হয়েছে।
রুশ সেনাকে ঠেকাতে চরম বলিদান দিয়েছেন ভাইটালি সাকুন ভলোডমায়রোভিচ (Vitaliy Skakun Volodymyrovych)। ভলোডমায়রোভিচের দেশের জন্য চরম আত্মত্যাগের এই ঘটনাটি ঘটেছে ক্রিমিয়ার কাছে খারসন অঞ্চলে (Kherson region)। আসলে সেখানকার হেনিসচেক ব্রিজ (Henichesk Bridge) টপকে ফেললেই স্থানীয় শহরটির দখল নিয়ে ফেলত রুশ সেনা (Russian Troop)। সেটাই হতে দিলেন না শহিদ সৈনিক। তিনি যখন দেখেন রুশ বাহিনীর সাঁজোয়া গাড়ি ব্রিজ টপকে শহরে ঢুকে পড়ছে। তখনই শরীরে বোমা বেঁধে ব্রিজের উপরে উঠে টিপে দেন মারণ ট্রিগার। বিস্ফোরণের আঘাতে মুহূর্তে ভেঙে পড়ে হেনসচেক ব্রিজ। থমকে দাঁড়াতে বাধ্য হয় শক্তিশালী রুশ বাহিনী।
মহাশক্তিধর রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেনের অসম যুদ্ধের আরও একটি আবেগময় ভিডিও প্রকাশ্যে এসেছে সম্প্রতি। যেখানে দেখা গিয়েছে, রুশ সেনার সাঁজোয়া গাড়ির আগ্রগমণ রুখতে চেষ্টা করছেন এক ব্যক্তি। যদিও ওই ব্যক্তিকে পাশ কাটিয়ে এগিয়ে যায় রাশিয়ার সেনা। এই দৃশ্য দেখে অনেকেরই মনে পড়েছে ৩২ বছর আগের চিনের তিয়েনআনমেন স্কোয়ারের ‘ট্যাঙ্ক ম্যানে’র স্মৃতি।
এদিকে শুক্রবার দুপুরের পর থেকে খোঁজ মিলছিল না ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির। কেউ কেউ মনে করছিলেন, প্রাণ বাঁচাতে বাঙ্কারে আশ্রয় নিয়েছেন তিনি। প্রয়োজনে কপ্টারে চেপে নিরাপদ দেশে পালাবেন হয়তো। কিন্তু না। রাত গড়াতেই ভিডিও বার্তা দিয়েছেন জেলেনস্কি। বলছেন, “কোথাও যায়নি। এখানেই আছি। দেশকে রক্ষা করছি।”